পরিযায়ী শ্রমিকের সন্তানের নজরকাড়া সাফল্য, ইচ্ছে ডাক্তার হওয়ার

0
38

মালদহ: নজরকাড়া সাফল্যেও দুশ্চিন্তার ছাপ অভাবি মেধাবীর পরিবারে। সাফল্যের আলোতেও যেন অন্ধকার গ্রাস করছে পরিবারের স্বপ্নে। উচ্চ মাধ্যমিকে ফলাফল ভালো হলেও কার্যত ঘুম উড়েছে পরিবারের। একমাত্র ছেলের স্বপ্নপূরণ কিভাবে হবে ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না বাবা মা। মালদহের চাঁচল-১ নং ব্লকের মতিহার পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা জহিরুদ্দিন আহমেদ। পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। তার একমাত্র পুত্র সন্তান সরফরাজ আলম এবছর বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিকে ৪৫২ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়েছে এলাকায়।

বাড়িতে অভাব থাকলেও ভিনরাজ্যে লেবারের কাজ করেও ছেলের পড়ার খরচ জুগিয়েছেন বাবা। আল আমিন মিশন পাশে দাড়িয়েছিল ছেলের পড়াশুনার জন্য। উচ্চমাধ্যমিকের পর ছেলেকে চিকিৎসক রুপেই দেখতে চান বাবা ও মা। তাদের ইচ্ছে গ্রামের গরিব মানুষের পাশে থেকে ছেলে চিকিৎসা পরিষেবা দিবে। আর ওই স্বপ্ন পূরণের জন্য দরকার বিপুল অর্থের। দুই শতক বসত ভিটা আর পাঁচ কাঠা জমি ও একটি মাত্র থাকার মাথায় টিনের চালা দেওয়া কোঠার ঘর। আর পরিবারে রোজগার বলতে দিনমজুরি মূল পেশা। পেটের দায়ে কখনও গ্রামে আবার কখনও দিল্লি বা পাঞ্জাবে ছুটতে হয়।

- Advertisement -

আরও পড়ুন: গ্রেফতার কুড়মি নেতা রাজেশ, পুলিশ মন্ত্রী মমতার ক্লিনচিটকে পাত্তা দিল না জেলা পুলিশ?

চিকিৎসক হওয়ার জন্য সর্বভারতীয় পরীক্ষায় সাফল্য পেতে হলে প্রয়োজন প্রস্তুতির। তার পাশাপাশি প্রয়োজন ভালো প্রশিক্ষণের। কিন্ত প্রশিক্ষণ নিতে গেলে লাগবে বিপুল পরিমাণে অর্থ। আর সেখানেই স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে পরিবারের দুরাবস্থা। কোথা থেকে জোগাড় করবেন টাকা? ছেলেকে ডাক্তারি পড়ানোর খরচ আসবে কোথা থেকে? অনিশ্চিতয়তার অতল আধারে কোনো কিনারে খুঁজে পাচ্ছেন না সরফরাজের বাবা জহিরুদ্দিন ও মা লুৎফা বিবি।

ছোটো থেকেই বরাবরই মেধাবী সরফরাজ। গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা নেওয়ার পর আল আমিন নজরে পড়ে ওই ছাত্রটি। আল আমিন মিশনের সহযোগিতা নিয়েই মাধ্যমিক পাশ করে দক্ষিণদিনাজপুরের শাখা থেকে। তারপর ওই স্কুলের শাখা থেকে তাদের সহযোগিতায় এবার পূর্ব বর্ধমান থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে। সবমিলিয়ে পেয়েছে সর্বমোট ৪৫২ নম্বর। বাংলা ৯৩, ইংরেজি ৯৫, অঙ্কে ৮৬, ফিজিক্সে ৭০, কেমিস্ট্রিতে ৮১ ও বায়োলোজিতে ৯৭ নম্বর পেয়েছে সে।

এই সাফল্য পেয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছে এই মেধাবী ছাত্রটি। তার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু এই চিকিৎসক হওয়ার জন্য প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণের খরচ কোথা থেকে জোগাড় হবে। দুশ্চিন্তায় রয়েছে ছাত্রটিও। ছেলের ফলাফল শুনে ভিনরাজ্য থেকে বাড়ি ছুটে এসেছেন বাবা জহিরুদ্দিন আহমেদ। মা লুৎফা বিবি বলেন, ‘‘ছেলে ভাল ফল করেছে। তার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। কিন্তু কোথা থেকে টাকা জোগাড় হবে। ভেবে পাচ্ছি না।’’

আরও পড়ুন: অভিষেক ফিরতেই সংগঠনে রদবদল, ‘চাকরি’ গেল তিন সভাপতির