‘চিনের বিরুদ্ধে ভারতকে ব্যবহার করছে আমেরিকা’, মোদীর মার্কিন সফর নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি জিংপিং-র দেশের

0
77
PM Modi's Us visit

খাস ডেস্ক: রথযাত্রার দিনেই ঐতিহাসিক মার্কিন সফরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) । রাজকীয় ভাবে মার্কিন মুলুকে স্বাগত জানানো হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। এই সফর নিয়ে দুই ক্ষমতাশালী দেশের মধ্যে যখন উন্মাদনা তুঙ্গে ঠিক সেই সময়ে সামনে এল চিনের প্রতিক্রিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুগান্তকারী রাষ্ট্রীয় সফর নিয়ে মুখ খুলল চিন। জিংপিং-এর দেশ মোদীর এই আমেরিকা সফর ও ভারত-মার্কিন সম্পর্কের নেপথ্যের কারন জানাল। চিনের  সেই দাবি ঘিরেই রীতিমত নতুন চর্চা শুরু হয়েছে।

ভারত বা আমেরিকার সঙ্গে চিনের সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। আমেরিকা-ভারতের সম্পর্ক গভীর হলে তা চিনের জন্য একেবারেই সুখকর হবে না তা আন্তর্জাতিক মহলের কারও অজানা নয়। এই আবহেই  চিনের শীর্ষ কূটনীতিবিদ ওয়াং ই তিন দেশের মধ্যে বহুপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলেছেন। চাঞ্চল্যকর দাবি করে তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লিকে ‘আত্মরক্ষার উপায়’ হিসাবে হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে। কোনও সম্পর্ক মজবুত নয় বরং ভারতকে আমেরিকা ব্যবহার করছে  বলেই দাবি চিনের। চিনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মিডিয়া “ভারতকে চাপ দেওয়ার এবং চিনের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টা বৃদ্ধির জন্য”  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিন্দা করেছে। দ্য গ্লোবাল টাইমস-এর একটি লেখায় মোদীর আমেরিকা সফর ও তাঁর কর্মসূচি এবং ভারতের সঙ্গে বাইডেনের দেশের সম্পর্ক নিয়ে বেশ কিছু কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সম্পাদকীয় অংশে লেখা হয়েছে, “২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোদির ষষ্ঠ সফর কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটাই তাঁর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর৷ তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ব্যবহার করে চিনের মোকাবিলা করতে এবং চিনের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বাধা দেওয়ার প্রচেষ্টা বাড়াচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।”

- Advertisement -

সম্পাদকীয়তে আরও লেখা হয়েছে যে, “ফিন্যান্সিয়াল টাইমস সম্প্রতি সতর্ক করেছে যে ওয়াশিংটনের মোদীকে স্বাগত জানানোর মূল্য বহন করে, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোহনীয় প্রচারণার পর ভারতের কিছু অভিজাত ব্যক্তিদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তাঁরা উদ্বিগ্ন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চিনের বিরুদ্ধে ‘ভারতকে একটি খুঁটি হিসাবে ব্যবহার করার’ চেষ্টা করছে। মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক গণনা পড়া কঠিন নয়। অনেক ভারতীয় অভিজাতদের আশঙ্কা এটাই যে ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদার করার জন্য ওয়াশিংটনের জোরালো প্রচেষ্টা প্রাথমিকভাবে চিনের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ধীর করার জন্য।”  অন্যদিকে চিনের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা কূটনীতিবিদ ওয়াং ই বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এই ভূ-রাজনৈতিক গণনা ব্যর্থ হবে কারণ বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে চিনের অবস্থান ভারত বা অন্যান্য অর্থনীতি দ্বারা প্রতিস্থাপন করা যাবে না”। তিনি আমেরিকাকে নিশানা করে বলেছেন, “যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা আরও বিকাশ করতে চায়, তবে তাদের উচিত চিনকে লক্ষ্যবস্তু না করে নিজেদের মধ্যে সমস্যাগুলি সমাধান করা।”

প্রসঙ্গত, ২১ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত আমেরিকায় থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সফরের সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সহ একাধিক শীর্ষ মার্কিন কর্তার সঙ্গে বৈঠক করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের আপ্যায়নে করবেন বিশেষ নৈশভোজও। শুধু তাই নয় নরেন্দ্র মোদীকে সম্মান জানাতে নিউ জার্সির (New Jersey) এডিসন শহরের একটি রেস্তোরাঁ বিশেষ মেনুর আয়োজন করেছে। এডিসন শহরের আকবর রেস্টুরেন্ট ভারতীয় মেনু দিয়ে তৈরি ‘মোদী থালি’ (Modi Thali) উপস্থাপন করতে চলেছে। যেখানে থাকবে  ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের খাবার। বিশেষ ভাবে তৈরি থালিতে  কি কি থাকবে আকবর রেস্টুরেন্টের মালিক প্রদীপ মালহোত্রা জানিয়েছেন সেটাও। মোদীর এই মার্কিন সফর নিয়ে প্রবাসী ভারতীয়রা অন্য আবেগেই ভাসছেন। এককথায় নরেন্দ্র মোদীর পাঁচদিনের মার্কিন সফর সত্যিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।