‘যুদ্ধ করা সহজ, দেশ চালানো নয়’, কার্যত মেনেই নিচ্ছে তালিবানরা

তারা অনেকটা হল্লা রাজার সেনার মতো

0
126

 

খাস খবর ডেস্ক: এ যেন এক বিরাট অধ্যায়ের সমাপ্তি। কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধ। আফগানিস্তানের মাটি থেকে পাততাড়ি গুটিয়েছে মার্কিন সেনা। স্বভাবতই উল্লাস শুরু হয়েছে তালিবান শিবিরে। আতসবাজি পুড়িয়ে, বোমা ফাটিয়ে, আকাশে গুলি ছুঁড়ে, যেভাবে পারা যায় আনন্দে মেতেছে তারা। তবে এখনই সব শেষ নয়, তালিবান তো বটেই, আফগানদের জন্য অপেক্ষা করছে একাধিক কড়া চ্যালেঞ্জ।

- Advertisement -

আরও পড়ুন, একাধিক নারী-সঙ্গে লিপ্ত মদন মিত্র, শীঘ্রই ফাঁস হচ্ছে গোপন রহস্য

গোটাবিশ্ব জানে দু’দশক আগে তারা কী তাণ্ডবটাই না চালিয়েছিল দেশজুড়ে। সেই ভয় এখনও কাটেনি আফগানদের। আর এই ভয়ভীত জনগণদের নিয়েই দেশ চালাতে হবে তাঁদের। এমনিতেই আফগানিস্তান আদ্যন্ত গরীব একটি দেশ। তার ওপরে সেখানে মানুষ যদি শাসককে ভরসাই না করতে পারে, সেক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা ভীষণ কম। তাছাড়া, অধিকাংশ শিক্ষিত ধনী নাগরিকরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ইতিমধ্যেই। যাঁরা একান্তই নিরুপায়, তাঁরা পড়ে রয়েছেন। তাঁদের ঠিক কতটা স্বাধীনতা দেয় তালিবান তাও দেখার বিষয়৷

অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ একাধিক সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছে তালিবান নেতৃত্বও। তারা ক্রমাগত মানুষকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছে। শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝতে পারছে, দেশ চালানো অতটাও সহজ বিষয় নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, তারা অনেকটা হল্লা রাজার সেনার মতো। শুধু যুদ্ধ করতেই জানে, নিজেরাও স্পষ্টভাবে জানে না যে দেশ কীভাবে চালাতে হয়৷ তবে মঙ্গলবার থেকে আপাতত উৎসবই চলছে কাবুলিওয়ালার দেশে। কোথাও আকাশে গুলি ছুঁড়ছে তারা, কোথাও আবার আমেরিকার ফেলে যাওয়া যুদ্ধ সরঞ্জাম নিয়ে রোড-শো করছে। ভাবখানা এমন যেন আমেরিকাকে বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে তারা। তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদের বিবৃতিতেও উঠে এসেছে সেই ছাপ। তিনি বলেছেন, ‘গোটাবিশ্ব নিশ্চয়ই উচিত শিক্ষা পেয়েছে। এটা আমাদের কাছে আনন্দ উদযাপনের সময়।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তালিবান সদস্য আবার বলেছেন, ‘আমেরিকানদের কাছে ঘড়ি রয়েছে। কিন্তু সময়টা আমাদের।’

আরও পড়ুন, শটের জোরে হাত ভেঙেছিল গোলকিপারের, ৯৭তম জন্মদিবসে ময়দানের ‘মান্নাদা’

কূটনীতিক দিক দিয়েও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চলেছে তালিবান। পাকিস্তান, চীন রাশিয়া এক সুরে তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দিলেও গোটাবিশ্বই প্রায় তাদের বিরুদ্ধে। ভারত সরকারও প্যাঁচে পড়েছে। একদিকে এতদিন ধরে করা বিনিয়োগ জলে যাওয়ার জোগাড়। অন্যদিকে আবার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। সবমিলিয়ে ঘেঁটে ঘ অবস্থা দিল্লির। তবে এতকিছুর মাঝেও একটা বিষয় স্পষ্ট। একটি আদ্যন্ত গরীব দেশ চালাতে আন্তর্জাতিক দান খয়রাতির প্রয়োজন হয়। তালিবান রাজে আফগানিস্তান সেই দান পাবে না। উন্নয়নের জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্ক লোন অবধি দেবে না ওই সরকারকে।

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে নেমে এসেছে বাণিজ্যের অচলাবস্থা। ইতিমধ্যেই খাদ্যসামগ্রী, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, এমনকি জলের দাম আকাশ ছুঁতে শুরু করেছে। একটা বড় অংশের আফগানিস্তানবাসী না খেতে পেয়ে রয়েছেন। কেউ বা রয়েছেন আধপেটা। এমন চলতে থাকলে ঠিক কতদিন রাজত্ব চালাতে পারে জঙ্গিগোষ্ঠী সেটাই দেখার।