চাপ বাড়ছে, তাই কি মেজাজ হারালেন শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দু

0
338

কাঁথি: মেজাজ হারালেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ তথা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী৷ দিব্যেন্দুর দাদা শুভেন্দুর নাম জড়িয়েছে খুনের মামলায়৷ বুধবারের পর শনিবার ফের ওই মামলার তদন্তেই কাঁথি শহরের করকুলি এলাকায় শান্তিকুঞ্জে ১১টা ৫০ নাগাদ পৌঁছান চার সদস্যের সিআইডি দল৷ প্রায় ঘণ্টা দেড়েক সময় ধরে বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখেন গোয়েন্দারা৷ পুরো পর্বটাই গোয়েন্দাদের সঙ্গী ছিলেন দিব্যেন্দু৷

আরও পড়ুন: ‘‘দাদা, ফুল ফর্মে রয়েছেন, স্ট্রাইক রেট ১০০-ই ১০০!’’

- Advertisement -

ফেরার পথে সিআইডির এক আধিকারিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘তদন্তের কাজেই আমরা এসেছিলাম৷ প্রয়োজনে আবারও আসব৷ তবে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়৷’’ এরপরই এবিষয়ে দিব্যেন্দুর প্রতিক্রিয়া জানতে চান সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা৷ নিচে তুলে ধরা হল সেই কথোপকথন:

আপনি সঙ্গে ছিলেন?
– আরে আমার বাড়ি, আমি সঙ্গে থাকব না!
আপনার কাছে কিছু জানতে চাওয়া হয়েছে?
-না৷
দ্বিতীয়বার এলেন তদন্তকারীরা….
একশোবার আসতে পারে৷ তদন্ত প্রক্রিয়ার মধ্যে মনে করলে একশো বার আসবে৷
আপনি সহযোগিতা করছেন?
এরপরই পাল্টা প্রশ্ন ছোঁড়েন দিব্যেন্দু- আমাকে দেখে মনে হচ্ছে ,অসহযোগিতা করছি?

আরও পড়ুন: ফের শুভেন্দুর বাড়িতে হানা, শান্তিকুঞ্জের ভিডিওগ্রাফি করল সিআইডি

এরপরই একই কথা ফের উল্লেখ করে কার্যত মেজাজ হারান দিব্যেন্দু, ‘‘আপনাদের মনে হচ্ছে, আমি তদন্তে অসহযোগিতা করছি? তাহলে এই প্রশ্ন কেন করছেন আমাকে? আমি অসহযোগিতা করেছি কি না, ওঁনাকে জিঞ্জেস করুন৷ যান, যান, যান…..’’

আরও পড়ুন: ‘বিজেপি না ছাড়লে তোকে নিয়ে ফুটবল খেলব’’- এবার সন্ত্রাসেও ‘খেলা হবে’ স্লোগান

২০১৮ সালে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় শুভেন্দু অধিকারীর তৎকালীন নিরাপত্তা রক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীর৷ ওই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গত ৭ জুলাই প্রয়াত শুভব্রতর স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী কাঁথি থানায় স্বামীর মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে মামলা দায়ের করেন। তাতে সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়৷ সুপর্ণাদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট মামলায় শুভেন্দু সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ১২০ (বি) ধারায় মামলার রুজু করে পুলিশ৷ এরপরই তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে৷

আরও পড়ুন: রাজ্যপালের দিল্লি সফর ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা

ইতিমধ্যের তদন্তের কাজে আগেও শুভেন্দুদের শান্তিকুঞ্জের বাড়িতে এসেছিলেন গোয়েন্দারা৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুধু নিরাপত্তা রক্ষীর অস্বাভাবিক মৃত্যু নয়, শুভেন্দুর ঘাড়ে ঝুলছে- ত্রিপল চুরি কাণ্ড থেকে দুই মেদিনীপুরের একাধিক সমবায় ব্যাংকে বেনিয়মের অভিযোগ৷ স্বাভাবিকভাবেই, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেফতারির সম্ভবনা জোরালো হচ্ছে৷ ফলে প্রশ্ন উঠছে, চাপ বাড়ছে বলেই কি মেজাজ হারালেন দিব্যেন্দু?

দিব্যেন্দুর অবশ্য পরে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি৷ তবে ঘনিষ্ঠজনেরা পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, যেভাবে অধিকারী পরিবারকে রাজ্য সরকার নিশানা করেছে, তাতে চাপ বাড়াটা কি স্বাভাবিক নয়? একই সঙ্গে তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘বাম আমল থেকে দাদার ওপর এমন প্রতিহিংসার রাজনীতি চলে আসছে৷ ফলে এটা নতুন কোনও বিষয় নয়৷’’