বরাবরই সফট টার্গেট, সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ছে হরিশ্চন্দ্রপুর

0
66

মালদহ: দুষ্কর্মের শেষে কোনওরকমে একবার বিহারে ঢুকে পড়তে পারলেই হল। আর টিকি অবধি ধরতে পারে না পশ্চিমবঙ্গ পুলিস৷ ঠিক এরূপ সুবিধাজনক ভৌগোলিক অবস্থানের জন্যই বারেবারে দুষ্কৃতিদের সফট টার্গেট মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর। অতীতে বহুবার চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এই এলাকায়৷ এবার সেই সমস্ত ঘটনা রুখতেই একজোট হল পুলিস প্রশাসন এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল গোটা এলাকাটিকে।

আরও পড়ুন, সুস্থ রয়েছে চিন্টু, ভুয়ো খবর ছড়ানোর দায়ে কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিস

- Advertisement -

মালদা জেলায় বরাবরই সম্ভ্রান্ত এলাকা বলে পরিচিত হরিশ্চন্দ্রপুর৷ বহু বনেদি পরিবার, ধনী ব্যবসায়ীদের বসবাস এই অঞ্চলে। তাই স্বাভাবিকভাবেই চুরি-ডাকাতি করতে পারলে হাতিয়ে নেওয়া যায় লক্ষ লক্ষ টাকা। তার ওপর করোনা আবহে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে। লকডাউনের ফাঁকা রাস্তায় চম্পট দেওয়া যেন আরও সহজ। তাই এবার দুষ্কৃতীদের রুখতে সিসিটিভির সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পুলিস। সিসিটিভির কড়া নজরদারিতে মুড়ে ফেলা হচ্ছে হরিশ্চন্দ্রপুরের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা।এই কাজে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতিরও সহায়তা নিচ্ছে পুলিস৷এই প্রসঙ্গে গতকাল তিন জুলাই রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় দু’পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই সিসিটিভিতে গোটা এলাকা মুড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
বৈঠকের পর হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, ‘হরিশ্চন্দ্রপুরের মূল এলাকায় দুষ্কৃতীদের রুখতে আমি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর জন্য ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। এতে এই এলাকা সুরক্ষিত থাকবে। কোনও দুষ্কর্ম হলে আমরা দুষ্কৃতীদের চিহ্নিতও করতে পারব। আপাতত হরিশ্চন্দ্রপুর বাজার, বারোদুয়ারি, স্টেশন, ব্লক ও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা এবং তুলসীহাটায় এই ক্যামেরা লাগানো হবে। কারণ, এই এলাকাতেই তুলনামূলকভাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বেশি রয়েছে। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা ক্যামেরা লাগাতে পারব।’

আরও পড়ুন,একই জার্সিতে মাঠে নামতে পারেন নেইমার-র‍্যামোসের সঙ্গে, মেসিকে প্রস্তাব পাঠাল প্যারিস স্য জ্যঁ

অন্যদিকে একই সুর শোনা যায় হরিশ্চন্দ্রপুর ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ প্রবীণ কেডিয়ার গলাতেও। তিনি বলেন, ‘এলাকার নিরাপত্তা বাড়াতে থানার আইসি আমাদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। আমরা এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আশা করছি, দিন দশেকের মধ্যেই হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রধান ব্যবসায়িক এলাকাগুলি সিসিটিভির নজরদারিতে চলে আসবে। পুলিশের এই সিদ্ধান্তে আমরাও দুষ্কৃতীদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাব।’

 

উল্লেখ্য, মালদা জেলার অর্থনৈতিক কেন্দ্র বলে পরিচিত হরিশ্চন্দ্রপুর। জমিদার প্রথা বিলোপের পরে এতবছর বাদেও বহু বনেদি পরিবারের বসবাস এখানে। এলাকায় ঢুকলেই বিরাট পুরোনো আমলের বাড়িঘর জানান দেয় এলাকার আভিজাত্য। বহু ব্যবসায়ীও বিনিয়োগ করেছেন এই শহরে, জেলা ছাড়িয়ে রাজ্য তথা দেশের মানচিত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে স্থান পাকা করেছে এই শহর। এই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারও সোনালি চতুর্ভুজ দিয়ে দেশের অন্যান্য অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্রের সঙ্গে এই শহরকে জুড়েছে।