Group D চাকরি বাতিলের জের, এবার স্কুলে ঝাঁট দেবেন শিক্ষকেরা

0
101

তিমিরকান্তি পতি এবং প্রতীতি ঘোষ, বাঁকুড়া ও বনগাঁ: আদালতের নির্দেশ মেনে ১৯১১ জন গ্রুপ ডি কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্তের কথা ঘোষণা করেছে কমিশন৷ এমন আবহে রাজ্যের জেলায় জেলায় একাধিক স্কুল কার্যত গ্রুপ ডি কর্মী শূন্য হতে চলেছে৷ স্কুল রুমের তালা খোলা থেকে তালা বন্ধ, ফাইল পত্র মেনটেন সবই করতেন এই গ্রুপ ডির স্টাফেরাই৷ তাহলে গ্রুপ ডির কাজ করবে কে!

একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক থেকে সহ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত গ্রুপ ডির কাজ ভাগভাগি করে নেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন তাঁরা৷ কারণ, পুরো ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নিয়োগে কেলেঙ্কারির মতো জ্বলন্ত ইস্যু৷ আদালতের নির্দেশেই বাতিল হয়েছে ১৯১১ জনের চাকরি৷ ফলে এই বিষয়ে আপাতত বোঝাপড়া নীতিতেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা৷

- Advertisement -

বনগাঁ নরহরিপুর সারদাচরণ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা সুপর্ণা ঘোষ রায়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের দুজন ডি গ্রুপের স্টাফ আছে। স্কুলের অনেক কাজই করতো তাঁরা৷ ফলে নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত গ্রুপ ডির কাজে কিছুটা সমস্যা হবেই৷’’ আরও একধাপ এগিয়ে বাঁকুড়ার ইন্দাসের ছোটো গোবিন্দপুর এসএনপাঁজা হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিক আহমেদ বলেন, ‘‘পূর্বতন প্রধান শিক্ষকের সময়ে বুল্টি মালিক এই স্কুলে নিয়োগ হন। ওনার ব্যবহার যথেষ্ট ভাল। সরকারিভাবে এখনও কোন নির্দেশ পাইনি। তবে বিষয়টি জেনেছি৷ উনি চলে গেলে স্কুলের চাবি খোলা থেকে বন্ধ সহ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর অন্যান্য যাবতীয় কাজের সমস্যা হবেই৷ নতুন নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরই সেটা ভাগ করে নিতে হবে৷’’

বস্তুত, আদালতের নির্দেশে বাতিল ১৯১১জনের তালিকায় নাম রয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতির ভ্রাতৃবধূ বুল্টি মালিকের৷ বুল্টি একাই সামলাতেন স্কুলের যাবতীয় গ্রুপ ডির কাজ৷ আপাতত আর স্কুলে আসা হবে না তাঁর৷ স্বভাবতই, তাঁর কাজ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য সহ শিক্ষকদের নিয়ে তৈরি হচ্ছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিক আহমেদ৷

চাকরি হারানোদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া৷ তৃণমূলের স্থানীয় অঞ্চল সভাপতির ভ্রাতৃবধূ বুল্টি মালিকের কথায়, ‘‘কোথা থেকে কি হল জানি না৷ তবে কাউকে কোনও টাকা দিই নি৷’’ অন্যদিকে বনগাঁ নরহরিপুর সারদাচরণ বিদ্যাপীঠের গ্রুপ ডি কর্মী সুশোভন দত্ত বলেন, ‘‘বিচারপতির নির্দেশ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না৷ তবে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পেলে কিছু কথা জানতে চাইব৷’’ সুশোভন বলেন, নিয়ম মেনেই পরীক্ষা দিয়েছিলাম৷ জেলায় ১৩ ব়্যাঙ্ক ছিল৷ পাঁচ বছর পর চাকরি খোয়াতে হবে৷ আমাদের কতটা দোষ, নাকি অন্যের দোষের শিকার হয়ে গেলাম, সেটাও দেখা দরকার৷’’

সুশোভনের কথা কে একেবারে ফেলে দিচ্ছেন না স্কুলের সহ শিক্ষকেরাও৷ কিন্তু আদালতের নির্দেশ৷ তাই আত্মপক্ষ সমর্রথনের সুয়োগের দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সুশোভনের মতো সদ্য চাকরি হারানোদের একাংশ৷

আরও পড়ুন: ছেলের বয়স বাবার তিনগুণ, ফাঁকিবাজ সরকারি কর্মীর ‘পাপের বোঝা’ বইছেন পরিযায়ী শ্রমিক