গো-হারান হেরে ভোল বদল, দলের অন্তর্ঘাতকে দায়ী করছেন ঝালদার তৃণমূল প্রার্থী

0
37

পুরুলিয়া: রবিবার শান্তিপূর্ণভাবেই মিটেছিল ভোট৷ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে এক সঙ্গে প্রধান তিন প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীকে বসে থাকতে দেখা গিয়েছিল৷ এমনকি একসঙ্গে আইসক্রিম ও দুপুরের খাবারও খান তিনজনে। ভোট শেষে তৃণমূল প্রার্থী জগন্নাথ রজক বলেছিলেন, ‘‘কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।’’ বুধবার ফল প্রকাশ হতেই অবশ্য বদলে গেল শাসকের বয়ান৷ ভোটে গো-হারান হেরে তৃণমূল প্রার্থীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা কখনও সম্ভব? মাত্র ১৫২টি ভোট পেয়েছি! আমার দলের ভেতরের অন্তর্ঘাত ছাড়া এটা সম্ভব নয়!’’

বস্তুত, পুরভোটের ফল প্রকাশের পরই গত ১৩ মার্চ প্রকাশ্য রাস্তায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিলেন ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। যার জেরে তপ্ত হয়েছিল বঙ্গ রাজনীতির উঠোন৷ এবারে সেখান থেকেই কাকার জয়ের চেয়ে প্রায় ৬ গুন বেশি ব্যবধানে ৭৭৮ ভোটে জয়ী হয়েছেন তপনের ভাইপো, কংগ্রেস প্রার্থী মিঠুন। জয়ের পর মিঠুন বলেন, ‘‘এটা প্রত্যাশিতই ছিল৷ তবে ফরওয়ার্ড ব্লক আমাদের সমর্থন করায় একটা বিষয় স্পষ্ট, বিরোধী ভোট এককাট্টা হলে শাসকের সন্ত্রাসকেও পরাজিত করা যায়!’’ মিঠুনের জয় নিয়ে শাসকের উদ্দেশ্যে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রয়াত কাউন্সিলরের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুও৷ তিনি বলেন, ‘‘যেভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছিল, তার প্রতিবাদ জানাতেই মানুষ উজাড় করে ভোট দিয়েছেন৷ তাই এই ব্যবধানে মিঠুনের জেতা সম্ভব হয়েছে৷ এটা আমার স্বামীর রক্তের জয়৷’’ বিজেপি প্রার্থী থাকলেও তিনি লড়াইয়ের ময়দানে সেই অর্থে ধোপে টেকেননি৷

- Advertisement -

স্বভাবতই ফল প্রকাশ হতেই ফলাফলের অন্তর্তদন্ত শুরু হয়েছে৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ফলের পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে৷ প্রথমত, তপন কান্দুর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি৷ যেভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল, সেটা মানুষ ভাল চোখে নেননি৷ এর ফলে একটা অংশের ভোট শাসক-বিরোধী বাস্ক পড়েছে৷ দ্বিতীয়ত, তপনকে এভাবে হত্যার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি খোদ শাসকের অন্দরের একাংশ কর্মী, সমর্থকও৷ তাঁদের ভোটও মিঠুনের দিকে গিয়ে থাকতে পারে, সেক্ষেত্রে সেন্টিমেন্ট ইস্যুতে অন্তর্ঘাতের প্রসঙ্গটিও উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল৷ তৃতীয়ত, কংগ্রেসকে বামেদের সমর্থন৷ এই ত্র্যহস্পর্শের দৌলতেই পুরুলিয়ার ঝালদার ২ নম্বর ওয়ার্ড ঘাসফুলের বদলে হাতেই আস্থা রাখল বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের৷

আরও পড়ুন: মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচন অবৈধ, জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট