বদলে গেল অভিষেকের সভার মাঠ, শুভেন্দুর ডেরায় প্রকাশ্যে শাসকের কোন্দল

বে সুযোগ বুঝে শাসকের গোষ্ঠীকোন্দলের ঘোলা জল আরও ঘুলিয়ে দিতে তৎপর গেরুয়া শিবির৷ বিজেপির জেলা নেতৃত্বর কটাক্ষ, যাঁরা নিজেদের ঘর সামলাতে পারে না, হাজারও কোন্দলে জর্জরিত, তারা এই জেলায় শুভেন্দুর মতো হেভিওয়েট ‘খেলোয়াড়ে’র সঙ্গে মাঠে লড়বে কীভাবে৷

0
482
Abhishek Banerjee

কাঁথি ও কলকাতা: একুশের ভোটে ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম৷ তেইশের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও যেন তারই পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে! বাকি জেলাকে পিছনে ফেলে হটস্পট হতে চলেছে বিরোধী দলনেতার খাসতালুক পূর্ব মেদিনীপুর৷ ইতিমধ্যেই দলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে জেলার গুরু দায়িত্বে পাঠিয়ে সেই বার্তা স্পষ্ট করেছেন শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বরা৷ এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের কর্মীদের রুটম্যাপ তৈরি করে দিতে আগামী ৩ ডিসেম্বর কাঁথিতে সভা করতে আসছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)৷ আর তাকে ঘিরেই প্রকাশ্যে শাসকের কোন্দল৷

দলীয় সূত্রের খবর, অভিষেকের (Abhishek Banerjee) সভা করার জন্য প্রথমে কাঁথি অরবিন্দ স্টেডিয়ামটিকে বেছে ছিলেন তৃণমূলের একাংশ নেতৃত্ব৷ সুষ্ঠুভাবে সভা সম্পন্ন করতে গত ১৬ নভেম্বর দলের একাংশ নেতৃত্বর উদ্যোগে খুঁটি পূজাও করা হয়েছিল৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের কাঁথি সংগঠনিক জেলার সভাপতি ও বিধায়ক তরুন কুমার মাইতি, কাঁথি পুরসভা পুরপ্রধান সুবল কুমার মান্না সহ তৃণমূল নেতৃত্বরা৷ অভিযোগ, রাজ্যের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরিকে ‘অন্ধকারে’ রেখে ওই কর্মসূচি পালন করা হয়৷ যা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন অখিল৷

- Advertisement -

সূত্রের খবর, নেতৃত্বকে তিনি অনুযোগের সুরে জানান, ‘শুভেন্দুর লাগাতার ব্যক্তি আক্রমণের মুখে রাষ্ট্রপতি নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে তিনি এমনিতেই কোনঠাসা৷ প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার পরও বিরোধীরা তো বটেই, জেলায় দলের একাংশ এখনও কলকাঠি নেড়ে চলেছে৷ তার ওপর জেলায় অভিষেকের সভা হবে৷ অথচ মূল অনুষ্ঠান থেকে তাঁকেই বঞ্চিত রাখা হচ্ছে৷’ সূত্রের খবর, বিষয়টি জানতে পারার পরই বদলে ফেলা হয় অভিষেকের সভাস্থল৷ কাঁথি অরবিন্দ স্টেডিয়ামের পরিবর্তে সভাস্থল ঠিক করা হয় কাঁথির কলেজ মাঠ৷ অধিকারী পরিবারের বাড়ি শান্তিকুঞ্জ থেকে এই মাঠের দূরত্ব বড়জোর ২০০ মিটার৷ এবং মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অখিল গিরিকেই৷ স্বভাবতই, উচ্ছ্বসিত অখিল অনুগামীরা৷

তাঁরা বলছেন, ‘‘এত দুর্যোগের পরও দলের পুরোনো সৈনিকের (অখিল) উপর আস্থা রাখলেন শীর্ষ নেতৃত্ব৷ এতে দলের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা আরও বাড়ল৷’’ যদিও মাঠ পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে দলের জেলা নেতৃত্বদের কেউই মুখ খুলতে চাননি৷ তবে সুযোগ বুঝে শাসকের গোষ্ঠীকোন্দলের ঘোলা জল আরও ঘুলিয়ে দিতে তৎপর গেরুয়া শিবির৷ বিজেপির জেলা নেতৃত্বর কটাক্ষ, যাঁরা নিজেদের ঘর সামলাতে পারে না, হাজারও কোন্দলে জর্জরিত, তারা এই জেলায় শুভেন্দুর মতো হেভিওয়েট ‘খেলোয়াড়ে’র সঙ্গে মাঠে লড়বে কীভাবে৷ তাঁদের দাবি, নন্দীগ্রাম বিধানসভা ভোটের পুনরাবৃত্তি ঘটবে পঞ্চায়েতেও৷ অন্তত, পূর্ব মেদিনীপুরে তো বটেই৷

আরও পড়ুন: দিনমজুরের নামে সীমান্তের গ্রামে মাদকের রমরমা কারবার, মুখে কুলুপ বাসিন্দাদের