করোনার কারণে ব্যহত পালস পোলিও টিকাকরণ

0
98
প্রতীকী ছবি

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল: একদিকে লাগাতার প্রচার কর্মসূচি, অন‍্যদিকে তৃণমূল স্তরে গিয়ে ধারাবাহিকভাবে স্বাস্থ‍্য কর্মীদের কাজ চালানো। এই দুই মিলিয়ে ভারতে সফল হয়েছিল পোলিও টিকা। পোলিও মুক্ত হয়েছে দেশ। দেশ থেকে রোগ গেলেও টিকা করণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া জরুরি। কিন্তু করোনা টিকার জনপ্রিয়তার জোয়ারে কি হারিয়ে গেল সেই ধারাবাহিকতা? এমনি প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ।

আরও পড়ুন করোনা আবহে কাজ বন্ধ উপকেন্দ্রের, ক‍্যান্সার রোগ নির্ণয়ে পিছিয়ে ভারত

- Advertisement -

২০২০ সালে ভারতে করোনা থাবা বসিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তারপরেই এলোমেলো হয়ে গিয়েছে সরকারের একাধিক টিকা করণ কর্মসূচি। আর সেই তালিকায় আছে পোলিও টিকা‌।

সূত্রের খবর, গত বছরে মার্চ মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের একাধিক জায়গায় পালস পোলিও কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। অধিকাংশ জায়গা করোনার জন্য কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে প্রশাসন চিহ্নিত করেছিল। তাই সেই এলাকাতে পোলিও কর্মসূচি নেওয়া যায়নি। করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে, এই আশঙ্কাতেই শিশুদের এক জায়গায় নিয়ে গিয়ে, টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল হয়েছে।

সেপ্টেম্বরের পরে বেশ কয়েকটি জায়গায় স্থানীয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তে আশাকর্মীরা বাড়িতে গিয়ে পোলিও টিকা দেওয়ার কর্মসূচি করেছিলেন।  কিন্তু একের পর এক পোলিও দেওয়ার তারিখ বাতিল হওয়ার জেরে জটিলতা বাড়ছে‌।

আরও পড়ুন করোনায় আক্রান্ত একাধিক চিকিৎসক, অস্ত্রোপচার পিছিয়ে যাওয়ায় বিপাকে ক‍্যানসার আক্রান্তরা

সম্প্রতি ১৭ জানুয়ারি পোলিও টিকা দেওয়ার দিন নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু করোনা টিকা ১৬ জানুয়ারি থেকে দেওয়ার দিন নির্ধারিত হওয়ায় ফের বাতিল হয় পোলিও টিকা দেওয়ার দিন। আপাতত এই টিকা করণের দিন ৩১ জানুয়ারি নির্ধারিত হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, বারবার টিকা দেওয়ার দিন বাতিল হওয়ার জেরে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। ভারতের মতো দেশে টিকা নিয়ে পর্যাপ্ত সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই সেখানে সরকারের তরফে টিকা নেওয়া নিয়ে বাড়তি উদ‍্যোগ না নিলে,‌ টিকা করণ কর্মসূচি সফল হবে না। কিন্তু করোনা টিকাকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে গিয়ে, অনেক সময় এই টিকা গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছে। কিন্তু তা বিপদ বাড়াবে। পোলিওর মতো‌ রোগ ফের ভারতে দাপট বাড়ালে তা‌ সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

Lab tests show polio vaccine is not 'Haram' - Pakistan - DAWN.COM

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, করোনা আবহে ভারতে হাসপাতালে প্রসবের সংখ‍্যা কমেছে। কারণ, লকডাউন পর্বে যাতায়াত একটি বড় সমস‍্যা হয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে অনেকেই বাড়িতে প্রসবের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যা প্রসূতি ও সদ‍্যোজাতের ঝুঁকি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব কমার জেরে টিকা নেওয়ার প্রবণতাও কমেছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, করোনা টিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট আলোচনা চলছে। কিন্তু তার পাশপাশি অন‍্যান‍্য টিকা নিয়েও আলোচনা জরুরি। পোলিও টিকা এ দেশে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাড়ি গিয়ে টিকা দেওয়ার কর্মসূচিকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে‌।