বিশ্বকাপে আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধে-ই কি জার্মানি-আর্জেন্টিনার এই দুর্দশা

0
44

বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: শুরু হওয়ার আগে থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে কাতার বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপকে ঘিরে একাধিক কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে কাতারের প্রশাসনের তরফে। রয়েছে মদ্যপান সংক্রান্ত একাধিক নিষেধাজ্ঞা। এছাড়া ফতোয়া জারি করা হয়েছে বিকিনি বা যেকোনও ধরণের খোলামেলা পোশাকের ওপরেও। ফুটবলারদের স্ত্রী কিংবা বান্ধবীরাও রক্ষা পাননি এই কঠোর বিধিনিষেধের হাত থেকে।

আরও পড়ুন: ঘানার বিপক্ষে ম্যাচে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার লক্ষ্যে Ronaldo

- Advertisement -

তবে কি এসবের প্রভাবই পড়ল আর্জেন্টিনা আর জার্মানির খেলায়? তার ফলে যথাক্রমে সৌদি আরব এবং জাপানের বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকেও ম্যাচ খোয়াতে হল দুই প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে। নাঃ ভাবনাটা মোটেই ফু দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, কাতারে বিশ্বকাপ চলাকালীন যে সমস্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা কার্যত ব্যক্তি স্বাধীনতাকে খর্ব করে। আর যদি স্বাধীনতা-ই না থাকে, তাহলে খেলায় মন কী করে দেবেন ফুটবলাররা?

কাতার একটি রক্ষণশীল মানসিকতার ইসলামিক দেশ। ফলতঃ পাশ্চাত্য দুনিয়ার কাছে যা নিত্যকার রোজনামচা, এমন অনেক কিছুই কাতারিদের চোখে দৃষ্টিকটু। অশ্লীল। সে কারণেই বিশ্বকাপ চলাকালীন এ সমস্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু এরই সঙ্গে ফুটবলারদের দিকটাও তো ভাবতে হবে। বিশ্বকাপ বলে কথা। সেই মঞ্চে ভাল কিছু করতে হলে সবার আগে যেটা প্রয়োজন তা হল খোলা মনে একেবারে চাপমুক্ত হয়ে মাঠে নামা।

কিন্তু মাঠের বাইরেই যদি জীবনযাত্রা সংক্রান্ত একাধিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়, তবে তো তার প্রভাব মেসিদের পারফরম্যান্সে পড়তে বাধ্য। খোলামেলা পোশাক পরিধান বা মদ্যপান, এ সবই পাশ্চাত্য জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিযোগিতার কথা স্মরণে রেখে অন্ততঃ ফুটবলারদের ছাড় দেওয়া উচিত ছিল কাতার প্রশাসনের। তাদের মাথায় রাখতে হত— আমি যেমন পশ্চিম থেকে আগত অতিথিদের আমার দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি মেনে চলতে বলছি। একইভাবে আমারও উচিত তাদের রুচি আর সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।

খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/

যদিও এ যুক্তির পাল্টা যুক্তি-ও বিদ্যমান। আর্জেন্টিনা এবং জার্মানি হেরেছে। উল্টোদিকে ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস কিংবা স্পেন কিন্তু হারেনি। বরং হেলায় হারিয়েছে বিপক্ষকে। এরাও তো পাশ্চাত্যের দেশ। বিধিনিষেধের কারণে জীবনযাত্রা সংক্রান্ত জটিলতায় এ মুহূর্তে এদেরও পড়তে হচ্ছে। তাহলে সেই প্রভাব এদের খেলায় কেন পড়ল না?

এখন পড়ল না মানেই যে ভবিষ্যতেও পড়বে না, তার কি কোনও মানে আছে? আর এদের খেলায় সেই প্রভাব পড়েনি, তার অর্থ এও নয় যে আর্জেন্টিনা বা জার্মানির ওপরেও সে প্রভাব পড়বে না। বৃহস্পতিবার মাঠে নামছে পর্তুগাল এবং ব্রাজিল। কে বলতে পারে, এই দুই জায়ান্টের-ও একই অবস্থা হবে না?