মুকুলের দলে ফেরার প্রসঙ্গে ‘সাবধানী’ মদনের মুখে ধর্মের কথা

মদন ঘনিষ্ঠরা অবশ্য বলছেন, ‘‘রাজনীতি বড় বিষ-ম বস্তু৷ অনেক পরিস্থিতিতে বুক ফাটলে মুখ খোলা যায় না৷ আমাদের দাদা সামান্য ফেসবুক করলে তখন নাকি দলের ইজ্জত চলে যায়, অথচ অন্যরা দল বদল করে নিজের ইজ্জত খুইয়ে ফের ফিরে এলেও কিচ্ছুটি বলা হয় না!’’

0
407

কলকাতা: ভূতের মুখে রাম নাম! আদ্যন্ত যিনি বিতর্ককে সঙ্গী করে পথ চলতে অভ্যস্ত, সেই তিনিই এড়িয়ে গেলেন বিতর্কিত প্রসঙ্গ৷ মুকুল রায়ের দলে ফেরার বিষয়ে মন্তব্য তো করলেনই না, উলটে সাবধানী মদন মিত্র পুরো দায় ঠেলে দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। স্বভাবতই, তৃণমূলের ‘দামাল ছেলে’ মদন প্রসঙ্গে এমনই উপমা টেনে আনছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷

আরও পড়ুন:মুকুলের বিরুদ্ধে ওঠা সম্মানহানিকর অভিযোগের সামনে দাঁড়িয়েও শুভ্রাংশু নীরব কেন, উঠছে প্রশ্ন

- Advertisement -

শনিবার হাওড়ার বেলুড়ে বুড়িমা লজে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল৷ সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন সকলের প্রিয় মদনদা৷ ‘ভোটের আগে দিদি বলেছিলেন, গদ্দারদের দলে ফেরাবেন না’, পুরনো কাসুন্দি মনে করিয়ে সাংবাদিকরা তাঁর কাছে জানতে চান, মুকুল রায় কি গদ্দার নয়? ‘হ্যাঁ’ কিংবা ‘না’তে উত্তর দিতে গেলে বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে হবে, বুঝতে দেরি করেননি বিচক্ষণ রাজনীতিক মদন মিত্র৷

আরও পড়ুন: ‘ঘরের ছেলে’ মুকুলের পাশে থেকে মিডিয়াকে কড়া বার্তা মমতার

মুহূর্তেই নিজস্ব স্টাইলে হাত পা নেড়ে নিজেকে ‘ছোট মাঠের প্লেয়ার’ আখ্যা দিয়ে মদন-উবাচ, ‘‘পাওয়ার লিগের প্লেয়ারকে আপনি মারাদোনা আর মাদ্রিদের খেলার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছেন! মুকুল রায়কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়েছেন, সেখানে আমি মন্তব্য করার কে?’ খানিক থেমে একটু জোরের সঙ্গেই জানালেন, ‘‘আমাদের কাছে দিদি-ই সব৷’’ এরপরই ধর্মযাজকদের প্রসঙ্গ টেনে এনে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক বলেছেন, ‘‘ভগবান কৃষ্ণ থেকে বুদ্ধদেব, যীশুখ্রীষ্ট থেকে সবকিছুরই শেষ একটাই কথা, ক্ষমাই পরম ধর্ম।”

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ‘কারসাজি’তে মাথা নোয়াতে বাধ্য হলেন মুকুল

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘স্পর্শকাতর’ প্রসঙ্গ এড়াতে এদিন ‘সাবধানী’ মদন অযাচিতভাবে বলেছেন, ‘‘আমার ছোট থেকে আশা ছিল আমি একবার হার্লে-ডেভিডসন বাইক ছুঁয়ে দেখব। কখনও চালাবার সাহস তো ছিলই না। আগে ২৭ লাখ দাম ছিল। এখন ৪৫ লাখ। আজকে সেই গাড়িটাও একটু চালিয়ে দেখলাম।’’ ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘এই মুহূর্তে তৃণমূলের আর এখন সাইকেলের স্পিড নেই। হাই পিক আপ মোটর বাইকের স্পিড। তৃণমূল এখন হার্লে-ডেভিডসনের স্পিডে রয়েছে। ২০২৪ এর নির্বাচনে দিদি ছাড়া প্রধানমন্ত্রিত্বে আর কোনও মুখ নেই।’’

মদন ঘনিষ্ঠরা অবশ্য বলছেন, ‘‘রাজনীতি বড় বিষ-ম বস্তু৷ অনেক পরিস্থিতিতে বুক ফাটলেও মুখ খোলা যায় না৷ আমাদের দাদা সামান্য ফেসবুক করলে তখন নাকি দলের ইজ্জত চলে যায়, অথচ অন্যরা দল বদল করে নিজের ইজ্জত খুইয়ে ফের ফিরে এলেও কিচ্ছুটি বলা হয় না!’’ মদনবাবু অবশ্য স্পর্শকাতর এই প্রসঙ্গে এখনও ‘স্পিকটি নট’৷ যা দেখে স্তম্ভিত ঘনিষ্ঠরাও৷