মুকুলের বিরুদ্ধে ওঠা সম্মানহানিকর অভিযোগের সামনে দাঁড়িয়েও শুভ্রাংশু নীরব কেন, উঠছে প্রশ্ন

অর্জুন সিংয়ের আনা ‘তথ্য পাচারে’র গুরুতর অভিযোগ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য তো দূরে থাক, উলটে শুভ্রাংশুর মুখে শোনা গিয়েছে ‘অর্জুন বন্দনা’৷ স্বাভাবিকভাবেই জল্পনার পারদ চড়ছে৷ উঠছে প্রশ্ন, তবে কি সত্যি বিজেপির তথ্য তৃণমূলে পাচার করেছিলেন মুকুল?

0
1185

কলকাতা: যা রটে তার কিছু তো বটে৷ বহুল ব্যবহারে জীর্ণ এই প্রবাদটাই ফের সামনে উঠে আসছে মুকুল রায়ের তথ্য পাচারের প্রসঙ্গে পুত্র শুভ্রাংশুর নীরবতাকে কেন্দ্র করে৷ অর্জুন সিংয়ের আনা ‘তথ্য পাচারে’র গুরুতর অভিযোগ সম্পর্কে কোনও মন্তব্য তো দূরে থাক, উলটে শুভ্রাংশুর মুখে শোনা গিয়েছে ‘অর্জুন বন্দনা’৷ স্বাভাবিকভাবেই জল্পনার পারদ চড়ছে৷ উঠছে প্রশ্ন, তবে কি সত্যি বিজেপির তথ্য তৃণমূলে পাচার করেছিলেন মুকুল?

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ‘কারসাজি’তে মাথা নোয়াতে বাধ্য হলেন মুকুল

- Advertisement -

প্রসঙ্গত, সোম থেকে বৃহস্পতি, সাড়ে তিনদিনের দিল্লি সফরে শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে ভোটে দলের ভারডুবির কারণ হিসেবে মুকুলের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত এবং তথ্য পাচারের গুরুতর অভিযোগ জমা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী৷ এরপরই জার্সি বদলেছেন সপুত্র মুকুল৷ তারপরই তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগে সরব হয়েছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং৷ এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি শুভ্রাংশু৷ উলটে বলেছেন, ‘‘উনি আমার থেকে অনেক সিনিয়ার এবং পিতৃ তুল্য৷ ওঁনার বিষয়ে আমি কিছু বলব না৷’’

আরও পড়ুন: ‘ঘরের ছেলে’ মুকুলের পাশে থেকে মিডিয়াকে কড়া বার্তা মমতার

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, অভিযোগ তবে কি সত্য? তা না হলে বাবার বিরুদ্ধে ওঠা এহেন সম্মানহানিকর অভিযোগের সামনে দাঁড়িয়েও পুত্র নীরব কেন? প্রসঙ্গ এড়িয়ে মুকুল পুত্র অবশ্য খোলসা করেছেন নিজের বিজেপি ত্যাগের কারণ৷ শুভ্রাংশুর ব্যাখ্যা, ‘‘বিজেপি যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে ৩৫৬ নিয়ে নাগাতার হুমকি দিচ্ছে, এজেন্সি লেলিয়ে হ্যাকেল করছে, বাংলায় জাতপাত, ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদ তৈরি করছে তা আমি মেনে নিতে পারিনি। তাই বিজেপি ত্যাগ করেছি৷’’

তবে এই মুহূর্তে অসুস্থ মাকে নিয়ে তিনি ব্যস্ত আছেন জানিয়ে শুভ্রাংশু বলেন, মাকে সুস্থ করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় এখন তাঁর কাছে প্রথম চ্যালেঞ্জ। তাঁর মায়ের চিকিৎসার জন্য এর মধ্যেই চেন্নাইতে পাড়ি দিতে পারেন জানিয়ে ক্ষোভের সুরে বলেছেন, ‘‘মা অসুস্থ৷ অথচ আমাদের এই দুঃসময়ে বিজেপির অনেকে খোঁজ নেয়নি। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী আর অভিষেক বন্দোপাধ্যায় দুজনেই প্রথম থেকে পাশে ছিলেন।’’

২০১৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া নামাবলী গায়ে চড়ান মুকুল৷ কিছুদিনের ব্যবধানে বাবার দেখানো পথই অনুসরণ করেছিলেন শুভ্রাংশু৷ প্রায় চার বছরের ব্যবধানে ফের ফিরেছেন পুরনো ঘরে৷ ঘরে ফিরতেই পেয়েছেন যথাযথ অভ্যর্থনাও। মিলেছে রাজ্যের নিরাপত্তাও৷ স্বাভাবিকভাবেই, এদিন থেকেই পুরনো ঘর ‘সাজিয়ে’ তোলার কাজে নেমে পড়েছেন তৃণমূলের চাণক্য মুকুল রায়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পাশা এখন পুরোপুরি উলটে গিয়েছে। ২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে এবং পরের চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। ভোটের পূর্বে ভাঙনের যে ছবি তৃণমূলের ঘরে দেখা গিয়েছিল, সেই একই ছবি বিজেপিতে৷ মুকুলের দেখানো পথ অনুসরণ করে যাঁরা গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন, তাঁরা আবার ‘দাদা’র পদাঙ্ক অনুসরণ করতে মরিয়া৷ এখন দেখার কোথাকার জল কোথায় গড়ায়৷ সেদিকেই নজর রাজনীতির কারবারিদের৷