বিধি উড়িয়ে হোটেলের রুমে হুক্কা বার, মন্দারমণিতে আটক দুই পর্যটক

0
170

মন্দারমণি: হোটেলের ঘরে বসেছিল বেআইনি হুক্কা বারের আসর৷ করোনা বিধি উড়িয়ে চলছিল মোচ্ছব৷ দরজায় টোকার আওয়াজ পেয়ে ভেবেছিলেন, ওয়েটার এসেছে৷ দরজা খুলতেই সাড়ে সর্বনাশ৷ পুলিশকে নিয়ে আলো আঁধারি ধোঁয়ায় ঢাকা রুমে ঢুকলেন রামনগর দুই ব্লকের বিডিও বিপ্রতিম বসাক ও স্থানীয় থানার ওসি অভিজিৎ পাত্র৷ পর্যটকদের এহেন কারবার দেখে ততক্ষণে চক্ষুচড়কগাছ হোটেল মালিকেরও৷ তিনি আপন মনেই বিরবির করে বলে উঠলেন, ‘‘যার জন্য করি চুরি, সেই বলে চোর!’’

আরও পড়ুন: দুপুর ২টোয় প্রকাশিত হবে CBSE-র ক্লাস টুয়েলভের ফল

- Advertisement -

লক্ষ্মীবারের সন্ধ্যায় এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল পর্যটন সৈকত মন্দারমণি৷ আটক দুই পর্যটককে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়৷ রীতিমতো বেশ কয়েকধঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর অন্য পর্যটকদের অনুরোধে মুচলেখা লিখিয়ে তবেই ছাড়া হয়েছে তাঁদের৷ মন্দারমণি থানার ওসি অভিজিৎ পাত্র বলছেন, ‘‘সংক্রমণ ঠেকাতে আমরা তো দিঘা, মন্দারমণির ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপই নিয়েছিলাম৷ কিন্তু তাতে হোটেল মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন৷ ওঁরা নিজেরাই পর্যটকদের কোভিড টেস্টের ব্যবস্থাও করলেন৷ তারপর থেকে নিয়মে কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল৷ কিন্তু সেই সু়যোগ নিয়ে কিছু পর্যটক যদি উশৃঙ্খল কাজকর্ম করেন, সেটা তো মেনে নেওয়া যায় না৷’’

প্রসঙ্গত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে নাজেহাল সারা রাজ্য সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর। মন্দারমণি, দিঘা, তাজপুরের মতো পর্যটনস্থলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা৷ এরপরই জেলা প্রশাসনের তরফে ঘোষণা করা হয়: কোভিডের দুটি ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক এবং সৈকতে প্রবেশের ৪৮ ঘণ্টা আগে কোভিড টেস্টের রিপোর্ট সঙ্গে রাখতে হবে৷ রিপোর্ট হওয়া চাই নেগেটিভ৷ তবেই সৈকতের হোটেল থাকার ছাড়পত্র মিলবে৷

এহেন কড়াকড়ির জেরে কার্যত পর্যটক শূন্য হয়ে যায় দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর৷ মাছি তাড়ানো দশা হয় হোটেলগুলির৷ এরপরই হোটেল মালিকদের দাবি মেনে সৈকত শহরেই চালু করা হয় পর্যটকদের জন্য কোভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা৷ নিয়মেও কিছুটা শিথিলতা আনা হয়৷ কিন্তু ফের বিধি উড়িয়ে একাংশ পর্যটক দাপাদাপি শুরু করেছেন বলে খবর আসে৷ এরপরই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থানার ওসিকে সঙ্গে নিয়ে মন্দারমণি সৈকত লাগোয়া প্রায় ৬৫টি হোটেলে অভিযান চালান রামনগর দুই ব্লকের বিডিও বিপ্রতিম বসাক৷

বিডিও বলেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই সরকারি নির্দেশ মেনে একাধিক হোটেলে অভিযান চালিয়েছিলাম। বেশ কয়েকটি হোটেলে ভিজিট করলাম। দুটি হোটেলে রেজিস্টার খাতায় গরমিল পেলাম। সমুদ্র বিলাসে জমায়েত করে হুক্কা বার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করায় দুজনকে আটক করা হয়েছিল৷’’ সংশ্লিষ্ট হোটেলের মালিক অসহায়তার সুরে বলছেন, হোটেল খোলা থাকলে আমাদের যেমন দুটো পয়সা রোজগার হয় তেমনই পর্যটকেরাও তো এখানে আনন্দ উপভোগ করেন৷ কিন্তু তার বিনিময়ে তাঁরা যদি এভাবে রুমের মধ্যে হুক্কা বার বসিয়ে ফেলেন, তা হলে কি বা বলার আছে বলুন!