‘চা-ওয়ালা’ মোদীর সাম্রাজ্যে বাস কনডাক্টর জন, খুশির হাওয়া উত্তরে

0
71

ডুয়ার্স: চোখের পাতা খোলা থেকে চোখ বন্ধ করতে যাওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত অভাব, অনটন ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী৷ জঠরজ্বালা মেটাতে কি না করতে হয়েছিল তাঁকে৷ নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেটা একসময় ছিলেন বাসের কনডাক্টর৷ বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে সেই মানুষটাই কি না নরেন্দ্র দামোদর দাসের মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী, জন বার্লা৷

স্বভাবতই, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই লক্ষীপাড়া চা বাগানের পাহাড়ে কার্যত শুরু হয়ে গিয়ে্ছে অকাল দেওয়ালির উৎসব৷ চারিদিকে চলছে মিষ্টিমুখের পালা৷ নাহ, স্বভাবতই বিজেপি সমর্থক এমনটা নয়৷ এই প্রথম দেশের মন্ত্রিসভায় ঠাঁয় পেলেন পাহাড়ের মানুষ৷ স্বভাবতই উচ্ছ্বাসের ঢেউয়ে ভাসছেন পাহাড়ি মানুষগুলো৷ তাঁদের কথায়, জন বরাবরই ভাল মানুষ৷ সবময়ই মানুষের আপদে বিপদে পাশে দাঁড়াতেন৷ অবশেষে দেরিতে হলেও জন যোগ্য মর্যাদা পেল৷

- Advertisement -

আরও পড়ুন: ‘বাংলা পূর্ণমন্ত্রী না পাওয়ার শোকে তৃণমূল কি ধর্ণায় বসবে?’কটাক্ষ দিলীপের

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জহুরের চোখ থেকে জহর কখনও এড়িয়ে যায় না৷ তাই এতজনের ভিড়েও জনকে চিনতে ভুল করেননি ‘চা-ওয়ালা’ মোদী৷ এক্ষেত্রে মোদী ও জনের মিলও দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ তাঁদের মতে, সামান্য চা বালা থেকে উল্কার গতিতে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে উত্থানের মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদে পৌঁচ্ছেন স্বয়ং মোদী৷ অনেকটা সেই ঢঙেই পাহাড়ের বাস কনডাক্টর থেকে সাংসদ হয়ে জন এখন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী৷

পিতার উত্তরণে নিজের ভাবাবেগ চেপে রাখেননি পুত্র জর্ডন বার্লা৷ উচ্ছ্বসিত জর্ডন বললেন, ‘‘আজ সত্যি আমাদের খুশির দিন৷ নিজের বাবা বলে বলছি না, উনি সত্যি সবসময় মানুষের কথা ভাবেন৷ আমাদেরও সবসময় বলেন, প্রতিবেশী, সমাজ বাদ দিয়ে দেশ নয়৷ তাই দেশকে ভালবাসতে হলে সবার আগে প্রতিবেশীদের কথা ভাবতে হবে৷’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘শুধু বাগানের নয়, বাবা গোটা ডুয়ার্সের মানুষের কথা ভাবতেন৷ উনি এলাকার মানুষের সকলের প্রিয় বলেই না সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন৷’’

আরও পড়ুন: সারমেয়র এই ভিডিও দেখে আমরাও অ-মানুষ থেকে মানুষ হয়ে উঠতে পারি

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য বিষয়টিকে এত সরলীকরণের চোখে দেখতে নারাজ৷ তাঁদের কথায়, গত লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলের আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভোট বিজেপির পক্ষে গেলেও একুশের ভোটে সেই অর্থে আদিবাসী ভোট গেরুয়া শিবিরের অনুকুলে যায়নি৷ স্বাভাবিকভাবেই আদিবাসী সহ বাংলার সংখ্যালঘু মানুষের মন জয় করতেও জনকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করে থাকতে পারে গেরুয়া শিবির৷

রাজনীতি বাদ দিয়ে যে রাজনৈতিক নেতার আলোচনা হতে পারে না, সেটা মেনে নিয়েও পাহাড়ের বাসিন্দারা অবশ্য বলছেন, জনকে যোগ্য সম্মান জানিয়ে আপাতত উত্তরের মন জয় করে নিয়েছেন মোদী-জি৷