জোর করে নরম্যাল ডেলিভারি, প্রসবের সময়ে হাত ভেঙে গেল শিশুর

0
113
Child Birth

সুরজিত দাস, নদিয়া: বাচ্চার ওজন বেশি তা সত্ত্বেও জোর করে নরম্যাল ডেলিভারি(Child Birth) করানোর চেষ্টা! প্রসবের সময়ে সদ্যজাতর ভেঙে গেল একটি হাত। একাধিক ক্ষত! রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে বুকে এবং মাথার পিছনের দিকে। এহেন অভিযোগ উঠল হাসপাতালে কর্মরত প্রসূতি চিকিৎসক সবুজবরণের বিরুদ্ধে। ওই পরিবারের তরফ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর স্টেস্ট জেনারেল হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে শান্তিপুর নতুন পাড়া এলাকার প্রসূতি গৃহবধূ উর্মিলা বিবি, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। গত জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ ভোরবেলায় তিনি বাচ্চা প্রসব করেন। সদ্যজাত শিশুটি প্রসব(Child Birth) করার সময় অতিরিক্ত যন্ত্রণায় ভুগছিলেন তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ, সদ্যজাত শিশুর ওজন অনেকটাই বেশি ছিল। প্রসবের সময় সমস্যায় পড়েছিলেন চিকিৎসক সবুজ বরণ। প্রসবের সময়ে সদ্যজাত শিশুটি কিছুটা বের করলেও পরবর্তীকালে আর বের হচ্ছিল না। পরিবারের দাবি, তখনই শিশুটিকে জোর করে বের করার চেষ্টা করেন কয়েকজন নার্স।

- Advertisement -

এরপরে ঘটনাস্থলে আরও একটি ডাক্তার এলে অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চাটি প্রসব(Child Birth) করানো হয়। পরে চিকিৎসক সদ্যজাতর পরিবারকে হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন। সঙ্গে সঙ্গে পরিবার সদ্যজাত শিশুটিকে নিয়ে রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। বাচ্চাটির অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা পরের দিন কলকাতা জহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে বাচ্চাটিকে ভর্তি না নিলে তাদেরকে মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। পরেরদিনই ওই বাচ্চাটিকে নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। দিন কয়েক আগে বাচ্চাটির রিপোর্টে ধরা পড়ে তার একটি হাত ভেঙে গিয়েছে। শরীরের একাধিক জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে আছে।

এরপরেই পরিবারের তরফ থেকে শান্তিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরিবারের অভিযোগ চিকিৎসকদের উদাসীনতার ফলেই তাদের সদ্যজাত(Child Birth) শিশুর এই পরিণতি। তারা প্রশ্ন তুলছেন বাচ্চাটির ওজন বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও কিভাবে নরমাল ডেলিভারি করানোর চেষ্টা করেন ওই চিকিৎসক। অতিরিক্ত জোর করে বাচ্চাটিকে বের করার চেষ্টার কারণেই শিশুটির আঘাত লাগে। এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষ চন্দ্র দাস জানান, এখনও কোনও অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। তবে এ বিষয়ে অভিযোগ এলে তদন্ত করা হবে। যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এ বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে কটাক্ষ করেছেন জেলার বিজেপি নেতা সোমনাথ কর। তিনি বলেন শুধু শান্তিপুর হাসপাতাল বলে নয় গোটা রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা দেখা দিচ্ছে। এই ঘটনার তিনি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরকে।