EXCLUSIVE: এক মেসেজেই লাখপতি, হুলস্থুল কাণ্ড ভগবানপুরে

0
266

 ভগবানপুর: সারাদিনে তো কত মেসেজই আসে৷ অনিচ্ছাসত্ত্বেও মোবাইল স্ক্রিনে চোখ রাখলেন৷ তারপরই বিছানা থেকে তড়াক করে উঠলেন রঘুপতি সর্দার (নাম পরিবর্তিত)৷ পেশায় ক্ষুদ্র সবজি বিক্রেতা৷ দুপুরের খাওয়া সেরে সেই একটু শুয়েছিলেন৷ পরণে লুঙ্গি, খাল গা৷ তাতেই দে দৌড়!

আরও পড়ুন: ভাঙছে শ্যামাপ্রসাদের অ্যাটিটিউড, পুলিশের নজরে রাজ্যের প্রাক্তন আরও এক মন্ত্রী

- Advertisement -

কিন্তু এ কি! ভর দুপুরে এটিএম কাউন্টারে ভিড় কেন এবং লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় সকলেরই আলু থালু পোশাক কেন! মাথায় সাত পাঁচ চিন্তা ভেসে আসছে৷ তারই মাঝে পাশের জন মিনমিনে গলায় জানতে চাইলেন, ‘‘দাদা, আপনারাও কি মোবাইলে মেসেজ এসেছে!’’ যা শুনে আত্মারাম খাঁচা ছাড়া হওয়ার জোগাড় রঘুপতির৷ ছানাবড়া চোখে চেয়ে থেকে আপন মনেই বিরবির করতে থাকেন, ‘‘যাঁর পাশে শুয়েছিলাম, সেই গৃহিনীকে পর্যন্ত কথাটা এখনও বলিনি৷ এব্যাটা জানল কি করে!’’

রাতারাতি লাখপতি। হুলস্থুল কাণ্ড বেঁধে গেল পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে! বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ভগবানপুর থানার ভীমেশ্বরী গ্রামের কয়েকজনের মোবাইলে মেসেজ আসে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঁচ লক্ষ টাকা ঢুকেছে। জানাজানি হতেই গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা রীতিমতো আনন্দে আত্মহারা। কেউ কেউ আবার টাকা তোলার জন্য এটিএম কাউন্টারে চলে যান৷ কিন্তু এটিএম থেকে টাকা বেরুচ্ছে না!

পরক্ষণেই মাথায় চিন্তা আসে, টাকা যদি অ্যাকাউন্টে এলই, তাহলে একসঙ্গে এতজনের কেন? তাও আবার বঙ্গীয় বিকাশ ব্যাঙ্কে যাদের অ্যাকাউন্ট আছে স্রেফ তাঁদেরই অ্যাকাউন্টে কেন? কোনও প্রতারণা চক্রের ফাঁদ নয় তো? চিন্তাশক্তির ঠ্যালায় এবার ধমনী দিয়ে হাড় হিম করা আতঙ্কের স্রোত বয়ে যাওয়ার পালা৷ এটিএম ছেড়ে ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’র ন্যায় আলু থালু পোশাকেই রঘুপতিরা দৌড়ালেন থানায়৷

অভিযোগ পেয়ে ভুরু কোঁচকালেন ভগবানপুর থানার পুলিশ কর্তারা। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ও আধিকারিকের সঙ্গে কথা বললেন। ফোন রেখে তাচ্ছিল্যের সুরে পুলিশ কর্তা জানিয়ে দিলেন, ‘‘ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই, টেকনিক্যাল ফল্ট! আগামীকাল দেখবেন সব ঠিক হয়ে গিয়েছে৷ মানে পাঁচ লাখ ঢোকার আগে যার যা ব্যালেন্স ছিল, তাই দেখতে পাবেন!’’

ভগবানপুর থানার ওসি নাড়ুগোপাল বিশ্বাস বলেন, “বিষয়টি জানতে পেরে ব্যাঙ্কের আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলি। টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এমন ঘটনা। গ্রাহকদের আশ্বস্ত করা হয়৷’’ যদিও এ বিষয়ে ব্যাঙ্কের আধিকারিকের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

রঘুপতিরা ব্যাজার মুখে বাড়ি ফিরেছেন আর আপন মনেই ওপরওয়ালার উদ্দেশ্যে গালমন্দ করেছেন, ‘‘ছেঁড়া কাথাতেই তো শুয়েছিলাম, খামোখা কেন লাখ টাকার স্বপ্ন দেখালি মা?’’