পত্নী সারদাকে ফলহারিণী অমাবস্যায় পুজো করেছিলেন রামকৃষ্ণ, এই অমাবস্যার গুরুত্ব কী

0
95

বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: ২৪ জৈষ্ঠ্য, ১২৭৯ বঙ্গাব্দ (৫ই জুন, ১৮৭২)। যা ঘটল তা না কেউ আগে দেখেছে আর নাই ভেবেছে। সমাজের হাজার হাজার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজের বিয়ে করা পত্নীকে দেবী ষোড়শীজ্ঞানে আসনে বসিয়ে পুজো করলেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস। কেন করলেন?

আরও পড়ুন: খাটুশ্যামকে চেনেন কি

- Advertisement -

দুটি ব্যখ্যা হয়। এক, ঠাকুর জানতেন, তাঁর ভক্ত আর ভগবানের সংসারে ঘরকন্যা করতে আসা কিশোরী সারদামণি আর কেউ নন। স্বয়ং জগজ্জননী। জীবকে মুক্তির পথ দেখাতে নররূপ ধারণ করে এসেছেন। দুই, ঊনবিংশ শতকের তৎকালীন সমাজে নারীরা ছিল নেহাতই ভোগ্যপণ্য এবং যাবতীয় অবহেলার পাত্র। কিন্তু ঠাকুর বুঝেছিলেন, ভবিষ্যতে খুব শিগগিরই নারী জাগরণ হতে চলেছে দেশে। তাই তিনি সেই জাগরণের-ই শুভ মহরত করে দিলেন।

এই ষোড়শী পুজোর কারণেই ফলহারিণী অমাবস্যা এক বাড়তি মাত্রা পেয়েছে। যদিও তিথিটি এমনিতেও কম গুরুত্ববাহী নয়। এবার সেই প্রসঙ্গেই আসা যাক।

জৈষ্ঠ্য মাসের অমাবস্যা ফলহারিণী অমাবস্যা নামে পরিচিত। কারণ, এদিন দেবী দক্ষিণাকালিকাকে আম, জাম, কাঠাল, লিচু ইত্যাদি মরশুমি ফল দিয়ে পুজো করা হয়। হিন্দু শাস্ত্রমতে, ফলাদি নিবেদন করা নিজের কর্মফল অর্পণ করার রূপক। ফলহারিণী অর্থাৎ যিনি কিনা ফল হরণ করেন।

ফল অর্থে অশুভ কর্মফল। ধারণা করা হয়, দেবী এদিন তাঁর ভক্তের সকল কুকর্মের অশুভ ফল হরণ করে ভক্তকে তার অভীষ্টফল এবং মোক্ষফল দান করেন। বিষয়টি ঋষি মার্কণ্ডেয় ‘দেবীমাহাত্ম্যম্’ গ্রন্থে ব্যখ্যা করেছেন। ঋষি বলেছেন, “মৎসমঃ পাতকী নাস্তি পাপাঘ্নী ত্বৎসমা ন হি। এবং জ্ঞাতা মহাদেবি যথাযোগ্যং তথা করু॥” এর অর্থ, “আমার মতো পাতকী কেউ নেই। এবং তোমার মতো পাপহারিণীও কেউ নেই, মহাদেবী, একথা স্মরণে রেখে যা ভাল মনে হয়, তাই কর।”

খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ-ও নিজেয অভীষ্ট ফল পেয়েছিলেন বৈকি। ষোড়শী পুজোর শেষেই ঠাকুরের সাধন পথের বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়‌।