দার্জিলিং সফরের আগেই রাজ্যকে কটাক্ষ রাজ্যপালের

0
66

শিলিগুড়ি: বিমল গুরুংকে নিয়ে এখন উত্তপ্ত পাহাড়ের পরিবেশ। ঠিক সেই সময়েই দার্জিলিং সফরে এলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নভেম্বর মাসজুড়ে পাহাড়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। আজই দার্জিলিংয়ে পৌঁছানোর কথা তাঁর। তার আগে শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে ফের রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যপাল।

 

- Advertisement -

সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন,” এ রাজ্যের মানুষকে কেন্দ্র এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে চলমান লড়াইয়ের জন্য প্রতিনিয়ত নানাভাবে এই যুদ্ধের মূল্য দিতে হচ্ছে। কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলি উন্নয়নের দুটি চাকা। আরা জনগণকে সাহায্যের জন্য ‘সমবায় ফেডারেলিজম’ এবং ‘একত্রিত পদক্ষেপ’ নিতে হবে”।

 

রবিবার করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলেও অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেছেন, ”এই মহামারী প্রমাণ করেছে বাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। কোনও রাজ্য একা কাজ করতে পারে না। বিপদের সময় রাজ্যের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ গ্রহণ করা উচিত ছিল। দূরদর্শিতার অভাবে রাজ্যবাসীকে ভুগতে হবে”।

 

তাঁর দাবি কেন্দ্রের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের বিরোধিতা করে রাজ্য ‘ভুল’ করছে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ” রাজ্যের বিরোধিতার কারণে কৃষকদের ভুগতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী-কিষান সম্মান বিধি যোজনার আওতায় কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গ বাদে দেশের প্রতিটি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ১২,০০০ টাকা জমা করেছিল”।

 

পশ্চিমবঙ্গে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সরকারের সঙ্গে নানা দ্বন্দ্ব যুক্ত ধনখড় বলেছেন, ”এই কর্মসূচির আওতায় কেন্দ্রের মাধ্যমে সর্বমোট ৯২,০০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তবে রাজ্যের কৃষকরা এ জাতীয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি কেন্দ্রের সাথে ভুল নীতি, নিষ্ক্রিয়তা এবং দ্বন্দ্বের ফল”। রাজ্যপাল আরও বলেছেন, তিনি এই বিষয়টি রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানিয়েছিলেন।

 

এই প্রকল্প সূচনা হওয়ার ২১ মাস পরে তিনি কেন্দ্রকে একটি চিঠি লিখে কৃষকদের মাঝে টাকা বিতরণের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে অর্থ প্রেরণের আবেদন করেছিলেন। কেন রাজ্য সরকার মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করতে চায়? সরাসরি কৃষকদের কাছে এই টাকা যাচ্ছে। তাহলে এতে কেন আপত্তি রাজ্যের তিনি জানতে চেয়েছিলেন।

 

ধনখড় রাজ্যের মহিলাদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অপরাধের জন্যও রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন। “আমি এই জাতীয় অপরাধের বিরুদ্ধে টুইটারে অনেক কথা বলেছি” তিনি বলেছেন। উত্তরবঙ্গ সফরে তাঁর উদ্দেশ্য এখানের বাস্তবতা মূল্যায়ন করা।

 

রাজ্যপালের দার্জিলিং সফরের আগে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং তার দলকে এনডিএ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এর সঙ্গে পরের বছরের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

জেজেএম নেতা বিমল গুরুংয়ের বিষয়ে তিনি বলেছেন,” যিনি ইউএপিএর অধীনে হত্যার অভিযোগ ও মামলা দায়েরের পরে তিন বছর ধরে পালিয়ে যাওয়ার পরে কলকাতায় নাটকীয়ভাবে জনসমক্ষে উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি আইনের কাছে একজন পলাতক এবং সমাজের কাছেও পলাতক একজন মানুষ”।

 

ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের পাহাড়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে রাজ্যের বিরুদ্ধে করা অভিযোগে নবান্ন-রাজভবন সম্পর্কের ফাটল যে আরও খানিকটা বেশি হল। সে বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই।