কলকাতা: বাগুইআটির (Baguiati) দুই কিশোরের খুনে মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্য বের করছে তদন্তকারী আধিকারিকরা। এই তদন্তেই ধৃতের বয়ান ঘুরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অতনু দে-কেই খুন করার উদ্দেশ্যে ছিল তবে অভিষেক সঙ্গে আসায় তাঁকেও বিনা দোষেই প্রাণ হারাতে হয়।
সূত্রে খবর, সত্যেন্দ্র চৌধুরীর আসল লক্ষ্য ছিল অতনু দে। দু’বার অতনুকে ডাকলেও সে কাউকে না কাউকে নিয়ে আসছিল। কিছুতেই একা পাওয়া যাচ্ছিল না। এদিকে ভাড়াটে খুনিদের খরচ, দুটি ভাড়া গাড়ির খরচ জোগানো মুশকিল হয়ে পড়ছিল। টাকা শেষ হয়ে গেলে ভাড়াটে খুনিদেরও ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই এরপর পরিকল্পনা বদল করে সতেন্দ্র।
আরও পড়ুন: আনিসের ভাইয়ের উপর কেন হামলা, বিস্ফোরক ব্যাখ্যা দিলীপ ঘোষের
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গিয়েছে, গত ২২ আগস্ট অতনু দে তাঁর পিসতুতো ভাই অভিষেক নস্করকে নিয়েই বাইক কেনার জন্য সত্যেন্দ্র চৌধুরীর সঙ্গে যায়। এবারও অতনুকে একা না পেয়ে অভিষেককেও মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আরও একটি বড় কারণ অতনু খুনের কোনও সাক্ষী রাখতে চায়নি ধৃত। হত্যাকাণ্ডে প্রথমেই অভিজিত নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের সঙ্গে দীর্ঘ সময়ের যোগাযোগ ছিল সত্যেন্দ্রর। দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর খুনের সময় নানা ভূমিকা ছিল অভিজিতের।
তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কাজ শেষে ভাড়াটে খুনিদেরও টাকা না দিয়ে পালানোর পরিকল্পনা ছিল সত্যেন্দ্রর। ধৃত অভিজিৎও গ্রেফতারির পর জেরার মুখে পুলিশের সামনে দাবি করেছিল, দু লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কাউকে এক পয়সাও দেয়নি মূল অভিযুক্ত। যদিও ধৃতদের বয়ানে সত্যতা কতটা তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গিয়েছে তদন্তকারীদের।
আরও পড়ুন: মাথায় ধারাল অস্ত্রের কোপ, গুরুতর জখম নিহত আনিস খানের ভাই
উল্লেখ্য, গত ২২ আগস্ট নিখোঁজ হয় বাগুইআটির (Baguiati) দুই বাসিন্দা অতনু দে ও অভিষেক নস্কর। পরিবারের কাছে ১ কোটি মুক্তিপণ চেয়ে মেসেজও আসে। অতনুর বারা পুলিশে খবর দেয়। প্রায় দু সপ্তাহ পর বসিরহাটে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এইভাবে নিষ্ক্রিয়তা না দেখালে দুই কিশোরকে অনেক আগেই খুঁজে পাওয়া যেত। বাগুইআটির এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় সরব হয়ে খুনের তদন্তভার সিআইডিকে দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শুক্রবার হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে। ধৃতের ফাঁসির দাবি করেছে মৃতের পরিবার।