সংক্রমণের দাপটে ফের লকডাউনের আশঙ্কা, তবু মাস্কে অনীহা

0
27

সুমন বটব্যাল, কলকাতা: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন শুরু হয়ে গিয়েছে৷ দু’বছর পর আমি, আপনি করোনাকে উপেক্ষা করে রথের দৌলতে ভিড়ের স্বাদ ফিরে পেলাম! থিক থিক করতে থাকা জনারণ্যে রথের দড়ি টানা, মেলার ভিড়ে নিজের পাগলপনকে খুঁজে পাওয়া, হাত না ধুয়ে এটা, সেটা খাওয়া? আর মাস্ক? দূর মশাই, ওসব পরলে সেলফি তুলব কি করে! সোজা রথের ছবিটা আরও কয়েকগুণ বেশি ভিড় নিয়ে হাজির৷ কলকাতা থেকে মফঃস্বল, দিকে দিকে করোনা বিধি উড়িয়ে সেই ভিড়ের সাক্ষী থাকলাম আমরা, জন সাধারণ থেকে উর্দিধারীরা, এমনকি আমার-আপনার ‘সরকারি’ প্পতিনিধিরাও৷

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই আমাদের আসলি ছবি৷ মুখে মারিতং জগত৷ সব জানি৷ কিন্তু নিজের ক্ষেত্রে সেটি পালন করতে বললেই মুখ বেঁকিয়ে পাল্টা যুক্তি খাড়া করব৷ নতুবা, বোঝাতে চাইব- নিয়ম আমিও মানি৷ এই প্রথম মাস্ক পরতে ভুলে গেলাম! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের একাংশের এই চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জেরে হু হু করে ফের বাড়ছে সংক্রমণ৷ দৈনিক সংক্রমণের পরিসংখ্যানের নিরিখে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে পোড়া বাংলার নাম!

- Advertisement -

এমন চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে ফের লকডাউনের কোপ নেমে আসবে৷ এই সরল সত্য কথাটা জেনেও আমরা আচরণ করে চলেছি, সেই পিপু ফিশুর মতো (পিঠ পুড়ছে ফিরে শু)! এদিকে নিজের কাজ করে চলেছেন সেই ভয়ঙ্করীও৷ ইতিমধ্যেই রূপ বদলে বাংলা সহ দেশের ১০ রাজ্যে থাবা বসিয়েছে করোনার নয়া ভাইরাস৷ চিকিৎসকদের পরিভাষায় যার পোশাকি নাম, বিএ.২.৭৫৷ এই বিষয়ে নিজের উদ্বেগের কথা সোশ্যাল সাইটে সামনে এনেছেন ইজরায়েলের সেবা মেডিক্যাল সেন্টারের সেন্ট্রাল ভাইরোলজি ল্যাবরেটরিতে কর্মরত বিজ্ঞানী শে ফ্লেইশন৷

সম্প্রতি নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে ওই ইজরায়েল বিজ্ঞানীর দাবি, ‘‘করোনা যেভাবে একের পর এক রূপ বদলে ক্রমেই আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে, তাতে বিষয়টি যথেষ্ট উদ্বেগের৷’’ তারপরও আমরা আটকে নিজস্ব বদ্ধ মানসিকতা এবং আত্মকেন্দ্রিকতায়৷ যার নিট ফল, নিজের সঙ্গে অন্যদেরও বিপদকে আরও তীব্রতর করে তোলা৷ সরকারি পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে. বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ২৫ হাজার ২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার দাপটে ঝরেছে ৪৩টি তাজা প্রাণ৷ দেশে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মোট মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৮৬ জন। তারপরেও আমাদের ভাবখানা এমন, যেন কিছুই হয়নি৷ ট্রেনে, বাসে থেকে শুরু করে পাড়ার ঠেক, কোথাওই দেখা নেই মাস্কের৷ এমন চলতে থাকলে পুরনো দিন (লকডাউন) আর বেশি দূরে নেই, সতর্ক বার্তা বিশেষজ্ঞদের৷ তাঁরা বলছেন, ফের ঘরবন্দী হওয়ার চেয়ে বরং একটু নিয়ম মেনে চলুন৷ তাতে নিজের এবং দশের উপকার সকলেরই৷

আরও পড়ুন: পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নজর এড়িয়ে পালাল সহবাসে অভিযুক্ত আসামী