কলকাতা: নন্দীগ্রামের বিধায়ক, বিজেপির দাপুটে নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরাকে পুনরায় গ্রেফতার করে আদালতের একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য৷
আদালত সূত্রের খবর, ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিচারপতিরা এদিন সরকারি আইজীবীর কাছে জানতে চান- আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কীভাবে রাখালকে গ্রেফতার করা হল? এত তাড়াহুড়ো কেন? কোন অফিসার রাখালকে গ্রেফতার করেছেন? নিম্ন আদালতের নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চে জানানো হয়নি কেন? কিসের স্বার্থে এত লুকোচুরি? আগামীকাল বুধবার আদালতে এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে রাজ্যকে৷
আরও পড়ুন: খেলার ছলে এক বছরের শিশুর গলায় আটকে গেল কই মাছ
সোমবারই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ রাখাল বেরাকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেয়৷ মঙ্গলবার ফের তাঁকে তমলুকের অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ৷ রাখালের আইনজীবী লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও ফের ১৫ জুনের একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে রাখালকে। এবিষয়ে আমরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করার পর বিচারপতি এই গ্রেফতারি সংক্রান্ত সব তথ্য ও নথি আদালতে পেশ করার জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে৷’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমার মক্কেলকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ‘জেলের মোড়ে টার্নিং নেওয়ার সময় দেখি গাড়িতে বন্দি নেই’
রাখালকে পুনরায় গ্রেফতারির বিষয়টি এদিন ডিভিশন বেঞ্চের নজরে আনেন রাখালের আইনজীবী৷ এরপরই বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তোলেন, সিঙ্গেল বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল গ্রেফতারির আগে আদালতের অনুমতি নিতে হবে, তা নেওয়া হয়নি কেন৷ তাছাড়া জামিনের আবেদন খারিজ নিয়ে যখন ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলছে তখন কেন এত তাড়াহুড়ো? আদালত সূত্রের খবর, রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিচারপতিদ্বয় এরপরই জানতে চান, কিসের এত তাড়াহুড়, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কোন অফিসার রাখালকে গ্রেফতার করলেন, তাঁর নাম কি!’’
আরও পড়ুন: চলন্ত পুলিশ ভ্যান থেকে পালিয়ে গেল দুই মাদক পাচারকারী
এরপরই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের তরফে বিচারপতিদের জানানো হয়ে যে সোমবার সকাল ১১টার সময় নিম্ন আদালত রাখালকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছে। পাল্টা হিসেবে বিচারপতিরা জানতে চান, নিম্ন আদালতের সেই রায় ডিভিশন বেঞ্চকে জানানো হল না কেন? এরপরই এই মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি আগামীকাল বুধবার আদালতে পেশ করার জন্য অ্যাডভোকেট জেনারেলকে নির্দেশ দেন বিচারপতিরা৷
আরও পড়ুন: পুকুর পাড়ে বিজেপি কর্মীর দেহ, এগরার গ্রামে তীব্র উত্তেজনা
প্রসঙ্গত, এই মামলায় রাজ্যের হয়ে লড়ছেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। তবে এদিনের ঘটনার পর বুধবার তিনি আদৌ শুনানিতে থাকবেন কি না তা স্পষ্ট নয়৷ আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, অকারণে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আদতে আদালতের সামনে পচা শামুকে নিজেদের পা কাটল রাজ্য৷