সর্ষের মধ্যেই ভূতের প্রশ্ন জোরাল হচ্ছে বন্দি পালানোর ঘটনায়

0
56

মিলন পণ্ডা, তমলুক: ভিন রাজ্যের স্টাইলে বন্দি পালানোর ঘটনা অবশ্য পূর্ব মেদিনীপুরের ইতিহাসে নতুন নয়৷ অতীত সরণি বেশিদূর ঘাঁটারও প্রয়োজন নেই৷ মাত্র দু’বছর আগের ঘটনা৷ কাঁথি আদালত থেকে রীতিমতো বোম্ব মেরে এবং গুলি চালিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল চার দুষ্কৃতী৷ ওই চার দুষ্কৃতীর মধ্যে ঘটনার কিছু পরেই কর্ণ বেরাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ৷ পরে কলকাতার সল্টলেক থেকে ধরা পড়ে শেখ মুন্না এবং শেখ রফিক৷ অপর অভিযুক্ত সুরজিৎ গুড়িয়া এখনও পুলিশের ধরা ছোঁয়ার বাইরে৷

আরও পড়ুন: চলন্ত পুলিশ ভ্যান থেকে পালিয়ে গেল দুই মাদক পাচারকারী

- Advertisement -

স্বভাবতই, মঙ্গলবার মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল থেকে তমলুক আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ বাস থেকে বন্দী পালানোর ঘটনায় উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন৷ প্রথমত: যেভাবে বাসের জানালার লোহার শিক বাঁকানো হয়েছে, তা স্রেফ হাতের জোরে বাঁকানো অসম্ভবই-বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷ মনে করা হচ্ছে পালিয়ে যাওয়া দুই আসামী অনিমেষ বেরা ও বিশাল দাসের কাছে কোনও ধাতব অস্ত্র ছিল, যার সাহায্যে তারা জানালা বাঁকিয়েছিলেন৷ সেক্ষেত্রে বিচারাধীন বন্দীদের সংশোধনাগার থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় অন্তত তিন দফায় চেকিং হয়৷ তাহলে কি চেকিংয়ের গোড়াতেই কোনও গলদ ছিল?

দুই: বাসে কি স্রেফ দু’জন বন্দি ছিলেন? সঙ্গে কোনও রক্ষী ছিল না? সূত্রের খবর, রক্ষী ছিল৷ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে তাঁরা কি করছিলেন? তিন: পুলিশের তরফে একটি তত্ত্ব খাড়া করা হচ্ছে যে বন্দিদের পিছু ধাওয়া করেছিলেন পুলিশ কর্মীরা৷ প্রশ্ন উঠছে, তারা যখন জানালার লোহার শিক বাঁকাচ্ছিলেন কিংবা পালানোর জন্য সিট থেকে উঠে দাঁড়ালেন তখন কি সেদিকে কেউ নজর করেনি? তাহলে ব্যর্থতা কার?

আরও পড়ুন: একরত্তি ছাত্রের বুদ্ধিতে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা, বাঁচলেন লোকাল ট্রেনের যাত্রীরা

চতুর্থত: সম্প্রতি নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর তরফে কলকাতার বিমানবন্দর থেকে ৫০টি বিদেশি খেলনা বাজেয়াপ্ত করা হয়৷ তার ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয় ২০ কেজি বিদেশি মাদক৷ গ্রেফতার হয় দুই তরুণী সহ তিনজন৷ ওই ঘটনায়ও উঠে এসেছে প্রভাবশালী তত্ত্বের প্রসঙ্গ৷ তারপরই হলদিয়ার দুই মাদক পাচারকারীর পালানোর ঘটনা৷ স্বভাবতই এই পালানোর কাণ্ডে অন্য কোনও চক্রের হাত থাকার সম্ভবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷

যদিও তমলুক জেলা আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এসডিপিও অতীন বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’জন বন্দি পালিয়েছেন৷ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে৷ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে৷ এখনই এর চেয়ে বেশি কিছু মন্তব্য করা যাবে না৷’’  ইতিমধ্যেই ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ জেলার প্রত্যেকটি সড়ক ও নদী পথ সিল করে চেকিং শুরু করেছে পুলিশ৷