Playgroup Admission: ‘প্লে স্কুলে’ ভরতি হতে হলে ‘নির্দিষ্ট ওজন ও দাঁত’ থাকতে হবে, উল্লেখ বিজ্ঞপ্তিতে

শিশুদের উচ্চতা ৩ ফুট থেকে ৩ ফুট ৮ ইঞ্চির মধ্যে হতে হবে। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সেই শর্ত ছিল ১৩ থেকে ২১ কেজির মধ্যে হতে হবে শিশুদের ওজন।

0
205

ঢাকা: নিজের ছোট সন্তানকে এই স্কুলে ভরতি করবেন ভাবছেন কিন্তু শর্ত জানা আছে তো। সন্তানের ওজন কত? ওজন বেশি হলেই কিন্তু আর ভরতি নেওয়া হবে না ‘প্লে স্কুলে’ এমন শর্তের কথাই নির্দেশিকায় উল্লেখ করেছে করা হয়েছিল ঢাকার ‘প্রিপারেটরি স্কুলে’-এর পক্ষ থেকে। শুধু তাই নয় দেওয়া হয়েছিল আরও কয়েকটি শর্ত। যা নিয়ে দেশ জুড়ে উঠেছিল সমালোচনার ঝড়। তবে চাপের মুখে পড়ে শিশুদের ওজনের শর্ত প্রত্যাহার করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ‘প্লে গ্রুপে’ যারা ভর্তি হবে তাঁদের জন্য শর্ত ও ‘যোগ্যতা’ বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বিতর্কিত শর্তে ভর্তির জন্য শিশুদের নির্দিষ্ট উচ্চতা এবং ওজনের সীমার মধ্যে থাকতে হবে। স্কুলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল যে সমস্ত শিশুরা প্লে-গ্রুপে ভর্তি হবে তাদের বয়স ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যে হতে হবে আগামী বছরের ১ জানুয়ারির হিসাবে। শিশুদের উচ্চতা ৩ ফুট থেকে ৩ ফুট ৮ ইঞ্চির মধ্যে হতে হবে। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সেই শর্ত ছিল ১৩ থেকে ২১ কেজির মধ্যে হতে হবে শিশুদের ওজন। নানা এখানেই শেষ নয় আরও একটি শর্ত ছিল। যেখানে বলা হয়েছিল শিশুদের নির্দিষ্ট সংখ্যক দাঁত থাকতে হবে। এই শর্ত সামনে আসার পরেই অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন ‘প্লে স্কুলে’ ভর্তির জন্য কিভাবে একটি শিশুর ওজন নির্দিষ্ট করে দেওয়া যেতে পারে।

- Advertisement -

এই স্কুলের অধ্যক্ষ বেলায়েত হুসেন জানিয়েছেন এই শর্তগুলো গত কয়েক বছর ধরে কার্যকর ছিল। তবে ঢাকার মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে জনরোষের পর প্লে-গ্রুপে ভর্তির ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক শর্ত প্রত্যাহার করেছে। স্কুলের অধ্যক্ষ শুক্রবার জানিয়েছেন, প্লে-গ্রুপে ভর্তি হতে ইচ্ছুদের বয়স চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে হতে হবে একমাত্র শর্ত এখন এটাই করা হয়েছে, বাকি সব প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিতর্কিত শর্ত প্রসঙ্গে তাঁর সাফাই, “আমাদের উদ্দেশ্য, পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে একটি সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা। মোটা ছেলেরা দুষ্টু হয়। তাদের চেয়ে অন্য বাচ্চাদের সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এখানে অভিভাবকেরা অনেক টাকা খরচ করে সন্তানদের পড়ান। যারা বিশেষভাবে সক্ষম তাদের দিকে আলাদা নজর দেওয়ার মতো শিক্ষক আমাদের নেই।”

বেলায়েত হুসেন আরও বলেছেন, “আমরা কখনই ভাবিনি যে নির্দেশিকা এতটা বিতর্ক তৈরি করবে। যেহেতু সমালোচনা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, আমরা সেগুলি প্রত্যাহার করার এবং সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” এই শর্তের ব্যাখ্যা দিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, “কয়েক বছর আগে, আমরা দেখেছি যে সাত বা এমনকি আট বছর বয়সী বাচ্চারা প্লে-গ্রুপে ভরতি হতে চাইছিল কারণ তাদের বাবা-মা তাদের জন্ম শংসাপত্রে বয়স কমিয়ে দিয়েছিল। শুধুমাত্র উপযুক্ত বয়সের শিশুদের খেলার গ্রুপে ভর্তি করা হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য শর্তগুলি চালু করা হয়েছিল।”

বিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির সদস্য খালেদ মোশাররফ নিশ্চিত করেছেন যে বয়সসীমা ব্যতীত অন্য সব শর্ত বাদ দেওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ বৈষম্যমূলক নির্দেশিকা প্রণয়নের জন্য সমস্ত শিশু এবং তাদের অভিভাবকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। তবে, বেশ কয়েকজন অভিভাবক দাবি করেছেন যে শর্তগুলি শুধুমাত্র ঘুষ সংগ্রহের উপায় হিসাবে চালু করা হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বিতর্কিত শর্তগুলোকে বৈষম্যমূলক ও আপত্তিকর বলে বর্ণনা করেছেন।