রক্তে ভেসে যাচ্ছে স্ত্রীর দেহ, অদূরের রেললাইনে স্বামীর মুন্ডুহীন দেহ

0
135

নদিয়া: হাসুয়া দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করে আত্মঘাতী স্বামী। সাত সকালে জোড়া মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। ঘটনাটি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার কুটিরপাড়া এলাকার। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, আত্মঘাতী ব্যক্তির নাম জয়ন্ত সরদার। কুঠিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা৷ ১২ বছর আগে ওই এলাকারই যুবতী দিপালী সরদারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের আগে দু’জনের মধ্যে গড়ে উঠেছিল প্রেমের সম্পর্ক। বর্তমানে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। সূত্রের দাবি, বিয়ের পর থেকেই মাঝেমধ্যেই অশান্তি লেগে থাকতো দু’জনের মধ্যে। কয়েক বছর আগে অশান্তি আদালতে পর্যন্ত পৌঁছায়। সেই কারণে দীর্ঘদিন ধরেই আদালতে মামলা চলছিল দুজনের। অশান্তির কারণে এবং আদালতে মামলা চলার কারণে দিপালী সরদার তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন। তবে অশান্তি এবং মামলার মাঝেও দিপালী ও জয়ন্তকে মাঝেমধ্যেই একসঙ্গে দেখা যেত বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা৷

- Advertisement -

অভিযোগ, শুক্রবার রাতে দিপালীকে ডেকে পাঠায় স্বামী জয়ন্ত সরদার। জয়ন্ত ডেকেছে শুনে দিপালী বাড়ি ছেড়ে জয়ন্তর কাছে আসে। এরপরে সে আর বাড়িতে ফিরে যায়নি৷ সকালবেলা স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে দেখে, হাত বাঁধা অবস্থায় দিপালী সরদারের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে জমিতে। কিছুটা দূরে রেললাইনে মাথা ছিন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে জয়ন্ত সরদারের মৃতদেহ। তাঁদের চিৎকার চেঁচামেচিতে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দিপালীর বাবার বাড়ি এবং জয়ন্তর পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। অন্যদিকে ঘরের মধ্যে থেকে পুলিশ একটি ধারালো হাসুয়া উদ্ধার করেছে।

পুলিশ এবং স্থানীয়দের প্রাথমিক অনুমান, অভিযুক্ত জয়ন্ত সরদার নিজের স্ত্রীকে প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। পরবর্তীকালে রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে নিজেও আত্মঘাতী হন। স্থানীয় বাসিন্দা কাজলী সদ্দার বলেন, ‘‘ওদের দুজনের মধ্যে ঝামেলা লেগেই থাকতো। মামলাও চলছিল আদালতে৷ তবে মাঝেমধ্যে দেখা করতো জয়ন্ত এবং দিপালী। শুক্রবার রাতে জয়ন্ত দীপালিকে ডেকে নিয়ে নিজের ঘরে ঢুকেছিল৷’’ মৃত দীপালি সরদারের মা বলেন, ‘‘শুক্রবার রাত এগারোটার সময় জয়ন্ত মেয়েকে ডেকে পাঠিয়েছিল। তখন মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। জয়ন্তর ফোন পেয়ে ও ওই বাড়িতে যায়! জানি না, কোথা থেকে কি হয়ে গেল!’’ এলাকার আরেক স্থানীয় বাসিন্দা তপন সরদার বলেন, নিজের স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হাত পা বেঁধে খুন করে জয়ন্ত এরপর নিজেও আত্মঘাতী হন।

সাত সকালে এই ঘটনায় রীতিমত আতঙ্কিত গোটা এলাকাবাসী। আদালতে মামলা চলার পরে জয়ন্ত নিজের স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হবেন এটা কেউ বুঝে উঠতে পারেনি। যদিও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ।

আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলাজনিত দায়িত্বপূর্ণ কাজে ‘না’, লাঠি হাতে শুধুই ভিড় সামলাবেন Civic Volunteers