নদিয়ায় বেতন বৃদ্ধি না হওয়ায় বিক্ষোভ অস্থায়ী কর্মীদের

0
134

নিজস্ব সংবাদদাতা, নদিয়া: বেতনের বৈষম্য ও বৃদ্ধি না হওয়ার ঘটনা চলছে বহু দিন ধরে। সঙ্গে দীর্ঘ আট মাস ধরে ডিউটি করেও নিরাপত্তা ও বেতনের অনিশ্চয়তাও রয়েছে। এই কারণেই  শনিবার বিক্ষোভ দেখাল কৃষ্ণনগর কোভিড হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীরা।

 

- Advertisement -

জানা গিয়েছে, এদিন দুপুরে কৃষ্ণনগর গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করলেন হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মীরা। তাঁদের দাবি, করোনা আবহের প্রথম দিকে হাসপাতাল তৈরী হওয়ার সময় থেকেই জীবনের ঝুঁকি কাজ করছেন তাঁরা। করোনা আক্রান্ত রোগীদের শুশ্রূষা করে আসছেন মাসিক মাত্র আট হাজার টাকার বিনিময়ে।

 

কিন্তু সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ইচ্ছুক কোভিড আক্রান্তদের মাসিক পনেরো হাজার টাকার বিনিময়ে হাসপাতলের কাজে নিযুক্ত করছে কর্তৃপক্ষ। অথচ এখনও পর্যন্ত পুরোনো কর্মী হিসেবে তাঁদের কোনও রকম বেতন বৃদ্ধি করা হয়নি।

 

পাশাপাশি এখনও অবধি তাঁদেরকে কোনওরকম চিকিৎসা বীমা সুরক্ষার আওতায়ও আনা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। অবিলম্বে এই বেতন বৈষম্য দূর করে তাঁদের বেতন বৃদ্ধি সহ সুরক্ষা বীমা ব্যবস্থা করতে হবে। এই দাবির জন্যই এদিনের এই বিক্ষোভ বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

 

করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় নতুন ভাবে আলাদা আলাদা দুটি কোভিড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। সেই মতো নদিয়াতেও দুটি কোভিড হাসপাতাল রয়েছে। একটি কল্যাণীতে এবং অন্যটি কৃষ্ণনগরে।

 

বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, কৃষ্ণনগর গ্লোকাল কোভিড হাসপাতাল চালু হওয়ার পর থেকেই তাঁরা কর্মরত। শুরু থেকেই করোনা আক্রান্তদের সুস্থ করে তোলার কাজ করে চলেছেন তাঁরা। প্রায় ১২ ঘন্টা ডিউটি করেও মাসিক বেতন মেলে মাত্র আট হাজার টাকা।

 

এই দুর্মূল্যের বাজারে যা দিয়ে বর্তমানে কোনও সংসার চলে না। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে তাঁরা যাঁদেরকে সুস্থ করে তুলছেন। তাঁরা পরবর্তী সময়ে ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ পাচ্ছেন ওই একই হাসপাতালে। অথচ প্রথম থেকে কাজ করে আসছে ওই অস্থায়ী কর্মীরা। সেই ক্ষেত্রে তাঁদের বেতন নিয়ে কোনো রকম ভাবনা চিন্তা নেই স্বাস্থ্য দপ্তরের।

 

ওই হাসপাতালে কর্মরত অসিত কর্মকার বলেছেন,”আমরা করোনা হাসপাতালে কর্মরত। সেই কারণেই আমাদের সব সময় আক্রান্ত হওয়ার একটা ভয় থেকেই যায়। কাজ করতে গিয়ে মারা গেলে আমাদের নেই কোনও বিমার ব্যবস্থা। আমাদের কিছু হয়ে গেলে পরিবারের কি হবে”?

 

তিনি আরও বলেছেন, ”বেতনের কেন এত বৈষম্যতা। পিপিই পরে কখনও ছয় ঘন্টা কখনও বা ১২ ঘন্টা এই কাজ করে যাচ্ছি। আমরা প্রথম থেকেই এই কোভিড হাসপাতালে কাজ করছি। কোভিড আক্রান্তদেরকে সুস্থ করেছি। আর তাঁদেরকেই এখন ‘কোভিড ওয়ারিয়র’ সম্মান দিয়ে ১৫ হাজার টাকায় কাজ করানো হচ্ছে”।

 

বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবিলম্বে স্বাস্থ্য দপ্তরকে এই বিষয়ে নজর দিতে হবে। ন্যূনতম বেতন বাড়ানো এবং স্যালারি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই তা করতে হবে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, এই দাবিগুলি না মানলে পরবর্তীকালে বড়সড় আন্দোলনে সামিল হবেন তাঁরা। পাশাপাশি কর্মবিরতি রাখারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।