Suvendu-র খাসতালুকে সক্রিয় সিবিআই, ভোট-পরবর্তী হিংসায় মৃত ব্যক্তির খুনের তথ্য পেশ আদালতে

0
204

কাঁথি: পুরভোট মিটতেই তৎপর সিবিআই। রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত চলছে পুরোদমে। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলায় জেলায় গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। এর মাঝেই ভোট-পরবর্তী হিংসায় বলি হওয়া জন্মেঞ্জয় দলাই খুনের কিছু তথ্য কাঁথি আদালতে জমা দিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

আরও পড়ুনঃ Road: বরাদ্দ ৪০ লক্ষ, তবু একদিকে তৈরি হচ্ছে রাস্তা, অন্যদিকে উঠে যাচ্ছে চাঁওড়

- Advertisement -

ভোট পরবর্তী হিংসায় বলি হওয়া মৃতদেহ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। মৃতদেহ কোন দলের কর্মী ? দীর্ঘ ছয় মাস পরও এখনও কেন পরিষ্কার হল না। সিপিএম ও বিজেপির মধ্যে মৃত কর্মীকে নিয়ে রাজনৈতিক তরজা এখনও চলছে। মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে পরিবারের পাশাপাশি দুই রাজনৈতিক দলও সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিল। এরপরই বুধবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কাঁথি আদালতে ১১ জন তৃণমূল নেতাকর্মীর নামে চার্জশিট জমা দেয়।

আরও পড়ুনঃ Mamata Banerjee : চোরের খপ্পরে এবার মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা রক্ষী, চলন্ত ট্রেন থেকে উধাও আগ্নেয়াস্ত্র-ব্যাগ

গত ২৯ শে মারিশদা ভাজাচাউলি এলাকায় জন্মেঞ্জয় দলাই (৪৫) নামে এই ব্যাক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয় এলাকারই একটি ফাঁকা মাঠ থেকে। পরিবারের পাশাপাশি, সিপিএম এবং বিজেপি দুই রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আর্জি জানানো হয়। জন্মেঞ্জয় দলাই খুনের ঘটনায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বেশ কিছু তথ্য কাঁথি আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শিভম কুমার মিশ্রের কাছে জমা দেন বলেও জানা গিয়েছে। এরপরেই এই ঘটনায় সিপিএম এবং বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

এই বিষয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কাঁথি সাংগঠনীক জেলার আইএনটিটিইউসি সভাপতি বিকাশ বেজ। তিনি বলেন, “বিজেপি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। নিহতের পরিবার সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু, হাইকোর্টের নির্দেশের আগেই সিবিআই যেভাবে তৎপরতা দেখাচ্ছে তা দেখে বোঝাই যাচ্ছে বিজেপি নেতাদের উস্কানিতে কেন্দ্রীয় সংস্থা পরিচালিত হচ্ছে।”

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। কাঁথি সাংগঠনীক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক অসীম মিশ্র বলেন, “তৎকালীন থানার ওসি শাসক দলের নেতাদের বাঁচাতে সিপিএম কর্মী বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। দোষীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি প্রকৃত তদন্তের উদঘাটনের জন্য প্রথম থেকেই দাবি জানিয়ে ছিলাম। সিবিআই খুনের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।”

এদিকে, জন্মেঞ্জয় দলাই সিপিএম কর্মী বলে দাবি করেছেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য হিমাংশু দাস। তিনি বলেন, “জন্মেঞ্জয় দলাই প্রথম থেকে সিপিএম করতো। আমরা প্রথম থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে এসেছি। সিবিআই তদন্ত করায় কার্যত খুশি। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফায় ভোট গ্রহণ ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ বিধানসভা। তার মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ কাঁথি নির্বাচন ছিল। গত ২৭ শে মার্চ নির্বাচনের দিন বিকেলে কাঁথি ৩ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নন্দদুলাল মাইতিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠে জন্মেঞ্জয় দলাই বিরুদ্ধে। এরপরই ফাঁকা মাঠ থেকে উদ্ধার হয় তৃণমূল কর্মীর রক্তাক্ত দেহ। তাঁকে উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।

ঠিক তার দুদিন পর ২৯ শে মার্চ জন্মেঞ্জয় দলাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পরেই ফাঁকা মাঠ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় জন্মেঞ্জয় দলাই দেহ। উদ্ধার করে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এরপরই প্রাথমিকভাবে জন্মেঞ্জয় সিপিএম কর্মী দাবি করে ১১ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে এলাকায় সিপিএম নেতা।