পেটের জ্বালা বড় দায়, তরমুজ বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে ক্ষুদে

0
83

বিশেষ প্রতিবেদন: চারিদিকে শিক্ষিত বেকারের ছড়াছড়ি৷ পাশ করলেও চাকরি জুটবে কি না, নেই তার নিশ্চয়তা৷ ১২ বছরের শিশু এতসব বোঝে কি না জানা নেই৷ তবে ছোট্ট মাথায় একটা কথা বেশ ভালভাবেই ঢুকে গিয়েছে, গায়ে গতরে পরিশ্রম করলে তবেই ঘরে জ্বলবে আঁচের আগুন৷ আর তাতেই হবে ক্ষুধার নিবারণ৷ অগত্যা, পড়াশোনা ছেড়ে কচি হাতে তরমুজ বিক্রিকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে ক্ষুদে৷ ইতিমধ্যে সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল তার তরমুজ বিক্রির দৃশ্য৷

আরও পড়ুনঃ Viral Video: সিনেমা নয়, বাস্তব, বহুযুগ পর দেখা মিলল ‘ডাইনোসরের’

- Advertisement -

করোনা-আবহের সময় থেকেই এই শুরুয়াৎ৷ রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতই ওর বারোমাস্যা৷ বৈশাখের প্রখর তাপদাহে চারিদিক যখন জ্বলে পুড়ে ছাড়খাড় হয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনও পেটের জ্বালা নিবারণ করার জন্য ভ্যানরিকশা বোঝাই তরমুজ বিক্রি কর চলেছে বালক। তার কথায়, ‘করোনার সময় অনেকদিন স্কুল বন্ধ ছিল৷ তাই এখন আর স্কুলে যেতে ভাল লাগে না।’ বালক আরও বলেছে, ‘এখন স্কুল বন্ধ। তাই তরমুজ বিক্রি করছি। আর সন্ধেয় বাড়ি ফিরে তার পরে কিছুক্ষণ পড়াশোনা করি।’

পরিস্থিতি বদলে দেয় মানুষের স্বপ্ন৷ ওই ছাত্রের মায়ের কথায়, “ভেবেছিলাম ছেলেটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে একটু মানুষ করব। করোনা সব স্বপ্ন ভেঙে চু়রমার করে দিয়েছে।’’ খানিক থেমে নাগাড়ে বলতে শুরু করেন, ‘‘স্বামী ভিন রাজ্যে কাজ করতেন। দু’বছর আগে লকডাউনের সময়ে কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরে আসতে বাধ্য হল৷ তারপর থেকে আর তেমন কাজ নেই৷ বাধ্য হয়েই ছোট্ট ছেলেটাকেও কাজে নামাতে হয়েছে।’’ কথার ফাঁকে মায়ের চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ে জল৷ ছলছলে চোখের ভাষা যেন বলতে চায়, এই অভাবের কি নেই কোনও পরিত্রাণ৷

কথায় আছে ক্ষিদের জ্বালা নাকি সব ভুলিয়ে দেয়। জলপাইগুড়ির বছর বারোর শিশু যেন তারই নিদারুণ উদাহরণ৷ অগত্যা সামান্য রোজগারের আশায় খাতা-কলম ছেড়ে তরমুজ বিক্রি করছে বুভুক্ষ শিশু৷ যা দেখে আপনার স্মৃতিতে ভেসে উঠতেই পারে বিদ্রোহী কবি সুকান্তের ঝলসানো রুটির প্রসঙ্গ! সময় বদলেছে৷ বদলেছে আঙ্গিকও৷ তবু নিদারুণ দারিদ্রতা আজও যেন হুবহু একই রয়ে গিয়েছে৷