গঙ্গায় জাহাজ দেখলে চমকে ওঠেন দিদিমনি, এই বুঝি স্কুলটা ধসে গেল…

0
28

সুদেষ্ণা মণ্ডল, ফলতা: সালটা ১৯৯৯৷ এলাকায় শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে চালু হয়েছিল শিশু শিক্ষা কেন্দ্র৷ তখন নদীটা ছিল অনেক দূরে৷ পার ভাঙতে ভাঙতে দু’দশকে সেই গঙ্গা হাজির স্কুলের চৌকাঠে! এখন গঙ্গা দিয়ে বড় জাহাজ গেলে নদীর জল চলকে স্কুলের দেওয়ালে এসে ধাক্কা খায়৷ পড়াতে বসে জানালা দিয়ে জাহাজ দেখলে আঁতকে ওঠেন দিদিমনি৷ এই বুঝি স্কুলটা ধসে গেল!

শুধু স্কুল নয়৷ নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে বসেছে আস্ত একটা গ্রাম। দক্ষিন ২৪ পরগনার ফলতা বিধানসভার তারাগঞ্জ জেলেপাড়া৷ পাশ দিয়ে কুল কুল করে বয়ে গিয়েছে গঙ্গা৷ দেখলে বোঝা দায়, এই গঙ্গায় বর্ষায় হয়ে ওঠে ভয়ানক৷ মাঝ গঙ্গায় বয়ে যাওয়া ট্রলারের দিকে আঙুল দেখিয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা
সন্ধ্যা মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই যে দূরে লঞ্চটা দেখছেন৷ ১৯৯৯ সালে নদীটা ওখানে ছিল৷ ১০ বছর ধরে ইরিগেশন দফতরে জানাচ্ছি৷ কিন্তু আজও বাঁধের ব্যবস্থা হল না৷ ৭০ জন পড়ুয়া৷ এমন চলতে থাকলে দু’বছর বাদে স্কুলটাই থাকবে না!’’

- Advertisement -

ফলতার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে হুগলি নদী। ধারাবাহিক নদী ভাঙনের জেরে একের পর এক জমি চলে গিয়েছে নদীগর্ভে। এবার নদীর গ্রাসের মুখে তারাগঞ্জ জেলেপাড়া এবং শিশু শিক্ষা কেন্দ্রটি৷ বাসিন্দারা জানান, ভোট আসে ভোট যায়৷ গ্রামে জনপ্রতিনিধিরা আসেন৷ কিন্তু তাদের সমস্যার কথা শুনলেও আজও কোনও সমাধান হয়নি। ফলে ভরা কোটালের সময় ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হন বাসিন্দারা৷ আর বছরভর আতঙ্কে থাকেন, পায়ের তলার মাটি নিয়ে!

সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ফলতা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গির খান৷ তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা ইতিমধ্যেই লিখিতভাবে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ দপ্তর কে বাঁধ মেরামতের জন্য আবেদন করেন। ইতিমধ্যেই বাদ মেরামতের টেন্ডার হয়েছে৷ আর্থিক অনুদান এলেই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।’’ কবে আসবে আর্থিক অনুদান, কবেই বা শুরু হবে বাঁধ সংস্কারের কাজ. সেটা অবশ্য জানেন না জাহাঙ্গির সাহেব৷ অগত্যা, রাত বাড়লে আতঙ্ক বাড়ে নদী সংলগ্ন তল্লাটের৷

আরও পড়ুন: মমতার সভার আগে বিজেপি-তৃণমূলের সেটিং তত্ত্বে ফুটছে ত্রিপুরা