ত্রাণের হাহাকারের মাঝে জলবন্দি এলাকায় পৌঁছে বাহবা কুড়োলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা

0
18

মালদহ: একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকাগুলি। রীতিমতো বৃষ্টির ফলে নদীর জল আরও ফুলে ফেঁপে উঠেছে। যার জেরে নদীর দুই তীরের একাংশ এলাকায় এখন জলের তলায়। চাষের জমি থেকে শুরু করে মানুষের ঘর বাড়িতে ঢুকে পড়ছে নদীর জল। বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে বাসস্থান।

আরও পড়ুন-রোগীর আত্মীয়দের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে , উত্তপ্ত মালদহ

- Advertisement -

এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক এলাকায় এখনও পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছায়নি। অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। এর মধ্যেই বন্যা কবলিত মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করল মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য বিভাগ।

জলবন্দি এলাকায় পৌঁছে সমস্ত মানুষের শারীরিক পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হয়। এই বিশেষ উদ্যোগের নেতৃত্বে ছিলেন মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডক্টর হেম নারায়ন ঝা। দুর্গত মানুষেরা এই চিকিৎসার পরিসেবা পেয়ে খুশি হলেও সরকারি ত্রাণ সামগ্রী না পাওয়া নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ পরিবারগুলি।

প্রসঙ্গত, মালদহের মানিকচক ব্লকের প্রায় কুড়িটি গ্রাম বর্তমানে জলমগ্ন রয়েছে। গঙ্গা নদীর জল বিপদসীমার ছাড়িয়ে জামাই জল ঢুকেছে নদী তীরবর্তী বহু গ্রামে। এই অবস্থায় কার্যত দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে চলে প্লাবিত হাজার হাজার মানুষ। মানিকচক, গোপালপুর,ধরমপুর সহ ভূতনির বিস্তীর্ণ এলাকায় জলমগ্ন রয়েছে। হাজার হাজার মানুষ জলের তলায় দিন কাটছে।

আরও পড়ুন-শিশুদের ভ্যাকসিনের জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আবেদন ‘জনসন অ্যান্ড জনসনে’র

বহু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে ত্রিপলের নীচে আশ্রয় নিয়ে চলছে জীবন যুদ্ধ। শুক্রবার মানিকচক অঞ্চলের গঙ্গার জলে প্লাবিত এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে উদ্যোগ গ্রহণ করেন মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকায় পৌঁছান মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ হেম নারায়ণ ঝা। সকল মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় পাশাপাশি সরকারিভাবে ওষুধ বিতরণ করা হয়।

স্বাস্থ্যপরিসেবা পেয়ে খুশি এলাকার বাসিন্দারা হলেও প্রশাসনের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ রয়েছে বন্যা কবলিত মানুষদের। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে এখনো পর্যন্ত কোনও রকম খাদ্যসামগ্রীর সহযোগিতা পৌঁছয়নি দুর্গত মানুষদের জন্য। বেশকিছু ত্রিপল রাতের অন্ধকারে বিলি করা হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে তাও আবার পঞ্চায়েত সদস্যরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজনকে দিচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য দফতর যেভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এগিয়ে এসেছে তার প্রশংসা করেছে এলাকাবাসী।

এপ্রসঙ্গে মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ হেম নারায়ণ ঝা জানান, বহু পরিবার জলের তলায় রয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানের কোনক্রমে ত্রিপল এর নিচে দিন কাটাচ্ছে পরিবারগুলি। জলে প্লাবিত থাকায় এলাকায় জ্বর সর্দি-কাশি সহ বিভিন্ন রোগের দেখা মিলেছে। তবে বড় ধরনের কোনো রোগ ডায়রিয়ায় সমস্ত রোগের এখনো দেখা নেই।

তিনি আরও জানান, তবে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে সকল স্তরের কর্মীদের হাই এলার্ট করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতর পরিষেবা দিতে তৎপর রয়েছে। আগামী দিনে ভুতনি এলাকার মানুষকে পরিষেবা প্রদান করা হবে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি কোনও রকম রোগ যাতে না ছড়ায় তার জন্য লক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।