পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার মৎস্যজীবী সংগঠন, ডেপুটেশন কাঁথিতে

0
79

নিজস্ব সংবাদদাতা, কাঁথি: পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে আন্দোলনের নামল মৎস্যজীবী সংগঠন। পুলিশের মদতে বিজেপি রাস্তা অবরোধে নামলে মৎস্যজীবী ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে অভিযোগ। ক্ষতিপূরণের দাবিতে থানা ও কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারীক আবাসন ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল মৎস্যজীবী সংগঠন। একই সঙ্গে মৎস্যজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কাছে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন তাঁরা।

জানা গিয়েছে, বিজেপি অবরোধের জেরে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ পচে নষ্ট হয়েছে বলে মৎস্যজীবীদের অভিযোগ। বৃহস্পতিবার কাঁথি মহকুমা শাসক দফতর থেকে কয়েক শতাধিক মহিলা সহ মৎস্যজীবী মিছিল করে কাঁথি থানার সামনে হাজির হয়। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন মৎস্যজীবী সংগঠনের নেত্রী বসুমতি বর, কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তরুণ জানা, জেলা পরিষদ সদস্য উওম বারিক, কাঁথি ১ ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ গায়েন, মামুদ হোসেন সহ একাধিক নেতৃত্বরা।

- Advertisement -

এরপর কাঁথি থানার সামনে অবস্থানে বিক্ষোভের বসে পড়েন মৎস্যজীবী সংগঠনের মহিলা ও পুরুষরা। এরপর কাঁথি থানার আই সি কৃষ্ণেন্দু দত্ত সঙ্গে দেখা করেন কয়েকজনের প্রতিনিধি দল। এরপর কাঁথি থানার সামনে একের পর এক নেতৃত্বরা বক্তব্য রাখেন। রীতিমতো কাঁথি থানার আই সি, কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলেছেন নেতৃত্বরা। থানায় সামনে বক্তব্য রাখেন রাজ্য তৃণমূলের যুব সহ সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি।

এরপর মিছিল করে কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাছে হাজির হয় এবং স্মারকলিপি তুলে দেন। মৎস্যজীবী সংগঠনের আহ্বায়ক বসুমতি বর বলেন, “পেটুয়ার মৎস্য বন্দর রয়েছে। সকালে গাড়িতে করে সামুদ্রিক মাছ দিঘা মোহনায় যায়। তারপর সেখান থেকে নিলামে বিক্রির পর ভিন রাজ্যের সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়। কাঁথি রসলপুর রাস্তায় বাইজাপুর কাছে ১০-১৫ জন বিজেপি কর্মী রাস্তার উপর কাঠের গুড়ি ফেলে দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করে। সামুদ্রিক মাছের গাড়ি আটক পড়লে পরে সেই মাছ বিক্রি করতে পারেনি। কিছু মাছ পচে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। এর প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়”।

কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তরুণ জানা বলেন, “স্মারকলিপি দেয়ার পর কারণ হল, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমরা থানাতে এসে ছিলাম। বিজেপি কর্মীরা বাস থেকে নেমে তৃণমূলের দলীয় পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া ও কর্মীদের মারধর করে। কাঁথি থানা এখন বিজেপির পার্টি অফিস হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধের ফলে কোন মৎস্যজীবী মাছ বিক্রি করতে পারেননি। রাস্তায় সামুদ্রিক মাছ গুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পুলিশের মদতে বিজেপি কর্মীরা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিল”।

তরুনবাবু আরও কটাক্ষ বলেন, “রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যা বেতন পাচ্ছেন কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কাঁথি থানা আইসি ও কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তা দিয়ে সংসার চালাতে পারছেন না। এই জন্য অধিকারী পরিবারের কাছ থেকে রাজ্য সরকারে ১০ গুন থেকেও বেশি। সেজন্য অধিকারী পরিবারে মদতে বিজেপি সহযোগিতা করছে। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি যোগদানের পর শান্ত কাঁথিকে অশান্ত করেছে”।

প্রসঙ্গত, শুভেন্দু অধিকারী হেঁড়িয়াতে জনসভা পরই রাতেই কাঁথি শহর ও দেশপ্রাণ ব্লকের বিজেপি দলীয় পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া ও কর্মীদের মারধর অভিযোগ উঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে কাঁথি রসুলপুর রাস্তায় বাইজাপুর কাছে দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। অবরোধের জেরে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। পুলিশ গিয়ে বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।