‘বন্ধ পাথর শিল্প, অর্ধাহারে তিরিশ হাজার মানুষ’ বাঁকুড়া সফরে উন্নয়নের বহর দেখলেন অভিষেক

0
27

তিমিরকান্তি পতি, বাঁকুড়া: প্রায় দু’বছরেরও বেশি সময় বন্ধ বাঁকুড়ার শালতোড়ার পাথর বা ক্র্যাশার শিল্প। এই অবস্থায় চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন ওই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচিতে তৃণমূলের ‘সেকেণ্ড ইন কমাণ্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শালতোড়ায় এলে তাঁকে দ্রুততার সঙ্গে এই শিল্প চালুর দাবি জানিয়েছেন কর্মহীন শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে ব্যস্ত সিডিউল কাটছাঁট করে সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাও বলেন অভিষেক৷ দিয়েছেন আশ্বাসও৷ তবে যতক্ষণ না আশ্বাস বাস্তবে পরিণত হচ্ছে, ততক্ষণ নিশ্চিত হতে পারছেন না শালতোড়ার পাথর বা ক্র্যাশার শিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষগুলো৷

এখানে উল্লেখ করা থাক, শালতোড়া ব্লক এলাকার আঞ্চলিক অর্থনীতির অন্যতম উৎস এই ক্র্যাশার শিল্প। এই এলাকায় ক্র্যাশারের সংখ্যা প্রায় ৩০০। একই সঙ্গে এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত রয়েছেন প্রায় তিরিশ হাজারেরও বেশি মানুষ। রুখা-শুখা এলাকা৷৷ চাষাবাদ প্রায় হয় না বললেই চলে। এই অবস্থায় আয়ের উৎস ক্র্যাশারগুলিও প্রায় দু’বছরেরও বেশি সময় বন্ধ। ফলে চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিক পরিবারগুলি। এর আগে শ্রমিক স্বার্থে বন্ধ ক্র্যাশার চালুর দাবিতে স্থানীয় প্রশাসন থেকে জেলাশাসকের দপ্তর পর্যন্ত আবেদন, নিবেদন ও আন্দোলন করলেও কোন কাজ হয়নি বলে তারা জানিয়েছেন। এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক দলের অন্যতম শীর্ষ নেতাকে হাতের কাছে পেয়ে নিজেদের দাবি তুলে ধরার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি কেউই।

- Advertisement -

ওই কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা বলেন, যখন ক্র্যাশালগুলি চালু ছিল তখন কোনও অর্থের অভাব ছিল না। কিন্তু দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে এই শিল্প বন্ধ থাকার ফলে প্রতিটি পরিবারে আর্থিক অনটন লেগেই আছে। এখন প্রায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তাদের। এই অবস্থায় আগামী ৪০ দিনের মধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে তারা দাবি করেন। বাঁকুড়া জেলা পাথর শিল্প কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রিয়দর্শী চক্রবর্তী বলেন, ‘সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই’ আজকের এই অবস্থা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা চাইলেই ফের এই শিল্প চালু হতে পারে। তিনি নিজে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন৷

২০২১-র বিধানসভা নির্বাচনে শালতোড়া কেন্দ্রে বিজেপি জেতার পর প্রতিহিংসাবশত ওই ক্র্যাশার গুলি বন্ধ করা হয়েছে, দাবি বিজেপির। দলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, স্থানীয় প্রশাসন থেকে মুখ্যমন্ত্রী সবার কাছে দরবার কাছে করা হলেও কাজ হয়নি। বেকার হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক শ্রমিক। এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় এসে বলছেন আগামী ৪০ দিনের মধ্যে ফের ক্র্যাশার চালু হবে, কিন্তু দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পিছনে সম্পূর্ণ দায় তো তাঁর ও তাঁর দল তৃণমূলের। উনি চাইলে ৪০ দিনের অপেক্ষা নয়, আজই চালু হতে পারে। এখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলছেন তা পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘রাজনীতি করার জন্য বলছেন’ বলে তিনি দাবি করেন।

অর্থাৎ দাবি পূরণ নিয়ে শুরু শাসক বিরোধীর তরজা৷ এমন দোলাচলে সত্যি কি সুদিন ফিরবে? নাকি সবটাই কথার কথা, স্রেফ মুখ রক্ষার আশ্বাস? সময়েই মিলবে সদুত্তর৷ , এবার হয়তো সুদিন ফিরবে বলে তাঁরা মনে করছেন বলে জানান।

আরও পড়ুন: বালি চোর, কয়লা চোর! অভিষেকের নামে পোস্টার! বিষ্ণুপুরে জোর উত্তেজনা

আরও পড়ুন:  প্রথম দশে নেই কলকাতা, ফেল করল ১ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী! উঠে আসছে অযোগ্য শিক্ষকদের প্রসঙ্গ