অভিষেকের জন-সংযোগ যাত্রা, আসলে কি সবটাই আইওয়াশ- প্রশ্ন দলের নেতারই

0
60

মালদহ: সপ্তাহও ঘোরেনি এখনও৷ ৪ মে নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে মালদহে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তারপরও ফের প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল৷ সূত্রের খবর, গোষ্ঠী কোন্দলের নেপথ্যে জেলা সফরে এসে অভিষেকেরই দেওয়া একটি নির্দেশ৷

আরও পড়ুন: মমতা জামাকাপড় পাল্টানোর মতো সকাল বিকাল মত পাল্টান, বিস্ফোরক দিলীপ

- Advertisement -

আরও পড়ুন: নবজোয়ারের আড়ালে আসলে অভিষেক যা করতে চাইছেন…

এখানে উল্লেখ করা থাক, গত ২৫ এপ্রিল কোচবিহারের মদন মোহন মন্দিরে পুজো দিয়ে জন সংযোগযাত্রা শুরুর সময়ই অভিষেক স্পষ্ট করেছিলেন, ‘‘এই কর্মসূচিতে আমরা মানুষের কাছে গিয়ে জানতে চাইছি, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে আপনারা কাদের প্রার্থী চাইছেন। কারণ, মানুষের পছন্দ মেনে প্রার্থী বাছাই করলে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত ও রক্তপাতহীন পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্ভব হবে৷ তারই প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে, সঠিক প্রার্থী নির্বাচন করা। যদি সঠিক প্রার্থী নির্বাচন না হয়, এই কাজে আমরা কখনও সফল হব না।’ অর্থাৎ দুর্নীতি মুক্ত সংগঠন গড়ে তোলার ওপরেই নজর দিতে চেয়েছেন অভিষেক৷

আরও পড়ুন:  Horoscope Today : এই সপ্তাহে মা লক্ষ্মীর কৃপা কি আপনার দিকেই, রইল বিস্তারিত

আরও পড়ুন:  দুয়ারে মদ প্রকল্প, প্রতিবাদে আন্দোলনে গ্রামের শতাধিক মহিলা

তারই অঙ্গ হিসেবে দুর্নীতি এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রুখতে মালদহে দলের নেতৃত্বদের নিয়ে গোপন বৈঠক করেছিলেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক৷ সেখানে একই অঞ্চলের দু’জন অঞ্চল সভাপতি থাকার বিষয়টি জানতে পেরে রীতিমতো প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল অভিষেককে৷ সূত্রের খবর: সরাসরি ব্লক সভাপতির কাছে জানতে চেয়েছিলেন, কত টাকার লেনদেনে অঞ্চল সভাপতি দু’জনকে করা হয়েছে? এরপরই স্বচ্ছ কমিটি তৈরির জন্য বেঁধে দিয়েছিলেন এক সপ্তাহের সময়সীমা। কিন্তু এক সপ্তাহ হতে চললেও নতুন কমিটি তো দূরে থাক, তা নিয়ে কোনও বৈঠকই ডাকেননি ব্লক সভাপতি মানিক দাস। এমনটাই অভিযোগ এনেছেন পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধক্ষ্য কেরামউদ্দিন আহমেদ। কেরামউদ্দিনের প্রশ্ন, ‘‘তাহলে অভিষেকের এই জন সংযোগ যাত্রা, নির্দেশ -সবটাই কি আইওয়াশ৷ নাকি শীর্ষ নেতৃত্বর নির্দেশ মানার মতো প্রয়োজনীয়তা মনে করছেন না জেলার নেতারা?’’

আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়, তবু বাংলার তাপমাত্রা কমছে না কেন, জানুন আসল কারণ

আরও পড়ুন: অনুন্নয়নের ক্ষোভে তেতে উঠছে জঙ্গলমহল, ভোট বয়কটের ডাক

তাই অভিষেকের নির্দেশ লঙ্ঘন করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্লক সভাপতিকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি তুলেছেন ঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধক্ষ্য কেরামউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটি ঠিক করতে বলেছিলেন। কিন্তু মানিক দাস এখনো বৈঠক করলেন না। তিনি নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত। একজন ব্লক সভাপতি হয়ে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশ অমান্য করছে? এত সাহস পাই কি করে? তাই আমি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আবেদন করব উনাকে অপসারণের জন্য। উনি আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত আছেন।’’

আরও পড়ুন: অনুন্নয়নের ক্ষোভে তেতে উঠছে জঙ্গলমহল, ভোট বয়কটের ডাক

অস্বস্তি এড়াতে সমগ্র বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। মুখ খুলতে চাননি অভিযুক্ত ব্লক সভাপতি মানিকও। পরিস্থিতি বুঝে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবিরও৷ উত্তর মালদহ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘কিছুদিন পর তো কয়লা কাণ্ডে অভিষেক নিজেই গ্রেফতার হবে। যে দলের অভিভাবক দুর্নীতিগ্রস্ত সেখানে ছোট ছোট নেতারা দুর্নীতি করবেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সবকিছুর জবাব মানুষ এদেরকে দেবে।’’

প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক কে সাংগঠনিকভাবে দু’ভাগে ভাগ করার পর চাঁচল বিধানসভার অন্তর্গত পার্ট বি তে বারবার সামনে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ব্লক সভাপতি মানিক দাসকে সরানোর দাবি উঠেছে দলের অন্দরেই। ফের একবার সেই দাবি তুললেন খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ। যার মধ্যে জড়িয়ে পড়লো, খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশের প্রসঙ্গ। স্বাভাবিকভাবে মুখ খুলতে না চাইলেও বিপাকে শাসক শিবির।

আরও পড়ুন: দুয়ারে মদ প্রকল্প, প্রতিবাদে আন্দোলনে গ্রামের শতাধিক মহিলা