মেদিনীপুরে বিয়ের চারদিন আগেই আত্মঘাতী প্রেমিক যুগল

0
154

নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: ছোটবেলা থেকেই দুজনের প্রেম ভালোবাসা। বিয়ে চারদিন আগেই বিষপান করে আত্মহত্যা করল প্রেমিক যুগল। মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা থানা কিয়ালী গ্রামে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত প্রেমিকার নাম পিউ পাহাড়ি (২০) ও প্রেমিকের নাম মুক্তিপদ সাউ (২৪)। দুজনেরই বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদা থানার কিয়ালী গ্রামের বাসিন্দা। এই দুর্ঘটনার পরই দুই মেদিনীপুরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রীতিমতো শোকাস্তব্ধ দুই পরিবার।

- Advertisement -

স্থানীয় সূত্রের খবর, দুজনই একই গ্রামের একে অপরের পরিচিত ছিল। সেই সুবাদে গ্রামের যুবক মুক্তিপদ সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে পিউ পাহাড়ি। এরপর পিউকে তাঁর বাড়ির লোকেরা মামার বাড়িতে পড়াশোনা জন্য রেখে দিয়ে আসে। কিন্তু তাতেও প্রেম সম্পর্ক থেমে থাকেনি, লুকিয়ে তাঁরা প্রেম সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এই সম্পর্ক জানতে পারেন আপত্তি জানায় পিউ পরিবারের সদস্যরা। কোন মতেই দুজনের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরা।

এরপর ওই যুবতীকে জোর করে অন্যত্র বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। সেই মতন আগামী ১৯ জানুয়ারি পিউ বিয়ে ঠিক করেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বিয়ে অনুষ্ঠান প্রায়ই সম্পূর্ণ পথে। বাড়িতে প্যান্ডেল থেকে আত্মীয়স্বজন আসতে শুরু করেছে। পাশাপাশি পিউ বিয়ের গয়না সহ সাজ কেনাই প্রায় সম্পূর্ণই।

জানা গিয়েছে, প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরা জোর করে অন্যত্র রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করিয়ে দেয় তাঁর। কিন্তু তাতেও থেমে থাকেনি প্রেমিক যুগল। দুই পরিবারের সদস্য অলক্ষ্যে দুই প্রেমিক যুগল দেখা করেন। সেই মতন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত বেছে নেয় দুজনই। রাতেই দুজনেই বিষ খেয়ে নেয় ওই প্রেমিক যুগল। পিউ পরিবারের লোকেরা জানতে পারে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওই যুবক দুজনই বিষ পান করেছি। পরিবারের সদস্যরা তড়িঘড়ি করে দুই জনকে উদ্ধার করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা সুপার স্পেশালটি হাসপাতালে ভরতি করেন। সেখানেই দুজনের মৃত্যু হয়।

এবিষয়ে মৃত পিউ পাহাড়ি এক আত্মীয় বললেন, “গত আগামী ১৯ শে জানুয়ারী বিয়ে ঠিক হয়েছিল। সেই মতন বিয়ের প্যান্ডেল বাঁধা, গয়না কেনা এবং সব কিছুই সম্পূর্ণ পথে। রাতেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পাই। ওকে পরিবারের সদস্যরা জিজ্ঞাসা করলে বিষয়টি জানায় গ্রামের রবিশঙ্কর সাউ সঙ্গে তাঁর প্রেম সম্পর্ক রয়েছে। সেই কারণে দুজনেই বিষ পান করেছেন। দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই রকম পরিণতি হবে আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি”। এগরায় থানার এক পুলিশ আধিকারিক বললেন, “মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে”।