কাঁথিতে আরও প্রকট শাসকের গোষ্ঠীকোন্দল, লড়াই এবার আসল বনাম নকলে

0
444

কাঁথি: তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও তীব্রতর আকার নিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক কাঁথিতে৷ যা নিয়ে সরগরম স্থানীয় রাজনীতি। একদিকে রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি, কাঁথি পুরসভা উপপুরপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি, তৃনমূল দাপুটে নেতা তরুণ জানা সহ অনুগামীরা। অপর গোষ্ঠীতে পটাশপুরে বিধায়ক উওম বারিক, কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধান সুবল মান্না সহ অনুগামীরা। সভা পাল্টা সভাকে ঘিরে ফের প্রকাশ্যে শাসকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব৷ স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপিও।

কাঁথি পুরসভা পুরপ্রধান সুবল মান্নাকে হেনস্থা করার এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কাঁথির নির্দল কাউন্সিলর সুময় দাসের বিরুদ্ধে। তার নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পুরপ্রধান৷ পাল্টা হিসেবে নির্দল কাউন্সিলরকে হেনস্থার প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ওয়ার্ডের মহিলারা। তারা পুরপ্রধানের কাছে ডেপুটেশন দিতে যান। সেখানেই কাঁথি পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর আলেম আলি খানের বিরুদ্ধে এক মহিলার শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে৷ বিচার চেয়ে ডাকযোগে কাঁথি মহিলা থানা, পূর্ব মেদিনীপুর পুলিশ সুপার, রাজ্য মহিলা কমিশনের অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা।

- Advertisement -

ওই হামলাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার বিকেলে পুরপ্রধান সুবল মান্নাকে হেনস্থার প্রতিবাদে পথে নামেন বিধায়ক সহ একাধিক কাউন্সিলররা। কাঁথি শহরে আউটডোর মোড় থেকে মিছিল করে কাঁথি থানায় ডেপুটেশন দিতে আসেন পটাশপুরে বিধায়ক উওম বারিক, পুরপ্রধান সুবল মান্না, শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত কাউন্সিলর আলেম আলি খান সহ তৃনমূল নেত্বয়রা। অবিলম্বে জয়ী নির্দল প্রার্থী সুময় দাসকে গ্রেফতারের দাবি জানান তারা৷ ঘটনার নেপথ্যে নাম না করে গিরি পরিবারের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ তাদের৷

পাল্টা হিসেবে ২১ জুলাই সামনে রেখে কাঁথি জনমঙ্গল একটি সমিতিতে কাঁথি শহর তৃনমূল কংগ্রেস ও যুব তৃনমূল কংগ্রেস পক্ষ থেকে সভা হয়৷ সেখান থেকে মন্ত্রীপুত্র, কাঁথি পুরসভার উপপ্রধান তথা কাঁথি সংগঠনিক জেলার যুব তৃনমূল সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি দাবি করেন, “নির্দল কাউন্সিলর সুময় দাস খাঁটি সোনা৷ নকল তৃনমূল হচ্ছে তরুণ কুমার বেরা!’’ নিজের দাবির স্বপক্ষে তার যুক্তি, ‘‘তরুণ বেরা তো বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন৷ ভেবেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আর আসতে পারবে না৷ ফলে দলের দুর্দিনে যারা দল ছেড়ে দলের বিরোধীশক্তির হাত শক্ত করেছিল, তারা আসল তৃনমূল নেতা হতে পারে না। বিধানসভা নির্বাচনে যারা তৃনমূলের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। তারা কোন দিন আসল তৃনমূল নেতা পারে না। আসল তৃনমূল হচ্ছে সুময় দাস! কারণ বিধানসভা নির্বাচনে বুক চিতিয়ে সামনে থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করেছিল সে৷”

স্বাভাবিকভাবে এহেন বক্তব্যকে ঘিরে দলের অন্দরেই চর্চ্চা শুরু হয়েছে, আসল বনাম নকল তৃণমূল নিয়ে৷ স্বভাবতই, তীব্র কটাক্ষ উড়ে এসেছে গেরুয়া শিবির থেকে৷ বিজেপি নেতা অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ হওয়াটাই স্বাভাবিক৷ আসলে তো কোনও আদর্শ নেই৷ লড়াই তো ওই কাটমানির জন্যই৷ তার ফলে দুর্ভোগে আমজনতা৷’’

আরও পড়ুন: একের পর এক হিন্দু খুন হচ্ছে, হিন্দুদের জেগে ওঠার পরামর্শ শুভেন্দুর