Google Pay, Paytm যুগে ফিকে হচ্ছে পয়লা বৈশাখ, বিস্মৃতির গহ্বরে হাল খাতা

0
175

প্রতীতি ঘোষ, বারাসত: করোনা আর ডিজিটাল যুগের প্রভাবে ক্রমশ ফিকে হচ্ছে হাল খাতার চল৷ তবুও কিছু ব্যবসায়ী হাল খাতার মধ্যে দিয়ে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন বাঙালির পয়লা বৈশাখকে৷ কারণ, বাঙালির পয়লা বৈশাখের সঙ্গে যে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে হাল খাতা৷

এখানে উল্লেখ করা থাক, ডিজিটাল যুগে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে হালখাতা এখন বিড়ম্বনার নামান্তর। তবুও ঐতিহ্য ধরে রাখতে ব্যবসায়ীরা ফি-বছর হালখাতা করেন। বাঙালি, অবাঙালি, হিন্দু, মুসলমান সব সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের মধ্যেই কমবেশি হালখাতার প্রচলন আছে । কিন্তু বর্তমানে ৮০ শতাংশ ব্যবসাই হচ্ছে অনলাইনে৷ যার জেরে ক্রমেই দাপট হারাচ্ছে পুরনো দিনের সেই হালখাতার উৎসব৷

- Advertisement -

ব্যবসায়ী প্রদীপ সাহার কথায়, এখন ক্রেতারা প্রেমেন্ট করছেন গুগল পে, পেটিএম প্রভৃতি নানা অ্যাপস দিয়ে। তাতে সরাসরি টাকা চলে যাচ্ছে বিক্রেতার ব্যাংকের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে। আবার ক্রেতাকে টাকা নিয়ে ঘোরার ঝুঁকি নিতে হচ্ছে না৷ এক ক্লিকেই লেনা-দেনা মিটে যাচ্ছে৷ ফলে ডিজিটালের দৌরাত্ম্যে দেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্য পয়লা বৈশাখে ক্রেতা-বিক্রেতার সেই মিলন অনেকটা কমে যাচ্ছে৷

আগে ব্যবসায়ীদের কাছে যারা সারা বছর কেনাকাটা করতেন তাদের কেনাকাটার হিসেব ও বাকি হিসাব লেখা থাকত পয়লা বৈশাখে হালখাতার পাতায়। এখন তা প্রায় বিস্মৃতির গহ্বরে৷ অথচ এক দশক আগেও পয়লা বৈশাখের দিন ব্যবসায়ীরা মহাজনের অতীতের ঋণ শোধ করে নতুন করে হালখাতার সাহায্যে বছরের প্রথম দিনটি শুরু করতেন৷ এটাই প্রথামাফিক চলে আসছিল ছোট-বড় সব ধরণের ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, টানা দু’বছর করোনার দাপটে সেই উৎসবে অনেখখানি ভাটা পড়েছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরও জাঁকিয়ে বসেছে ডিজিটাল মার্কেটিং ৷ যার নিট ফল, বিভিন্ন অন লাইন বিজনেস অ্যাপস এবং অন লাইন পেমেন্ট অ্যাপসের দৌলতে ক্রেতা এবং বিক্রেতার সম্পর্কের দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়ে শেষে নির্দিষ্ট একটি এন্ড্রোয়েড মোবাইল সেটের গন্ডির মধ্যে এসে ঠেকেছে। হালখাতার ক্যালেন্ডার, মিষ্টির প্যাকেট প্রায় বিলুপ্তির পথে। কেউ কেউ আবার এটার জন্য দায়ী করেছেন করোনাকালের সামাজিক ও আর্থিক মন্দাকেই।

আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে মমতাকে হারিয়েছিল দলেরই একাংশ, বিস্ফোরক আবু তাহের