জাতিগত হিংসার ফসল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব, জন্মদিনে ফিরে দেখা

0
194

বিশ্বদীপ ব্যানার্জি: আজ ১লা আগস্ট। ১৯২০ সালে এদিনই পথ চলা শুরু হয়েছিল লাল-হলুদ শিবিরের। ওপার বাংলা থেকে প্রাণ হাতে করে নিয়ে আসা রিফিউজিদে’র কাছে যা আজও একমুঠো অক্সিজেনস্বরূপ। আজ ইস্টবেঙ্গল দিবস।

আরও পড়ুন: এই প্রথম নয়, কমনওয়েলথ গেমসে আগেও হয়েছিল ক্রিকেটের ইভেন্ট, ফিরে দেখা

- Advertisement -

কেন প্রতিষ্ঠা হয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাব? মোহনবাগান পশ্চিমবঙ্গীয়দের দল। তাই শখে পড়ে পূর্ববঙ্গীয়রাও নিজেদের দল নির্মাণ করলেন। নাহ্, ইতিহাস মোটেই এমন নয়। বরং মোহনবাগান ক্লাব একসময় ছিল সকল ভারতবাসীর জন্য। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে এক জাতিগত বৈরীতার ইতিহাস। এক বিদ্বেষের ইতিহাস।

সাল ১৯১১। সাহেবদের মুখে ঝামা ঘষে প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে আইএফএ শিল্ড জয় মোহনবাগান স্পোর্টিংয়ের। দলের সিংহভাগই ছিল ওপার বাংলার। কিন্তু সেই তাদের নিয়েই ঘটে গেল এক চূড়ান্ত অনভিপ্রেত ঘটনা।

১৯২০ অসহযোগ আন্দোলনের বছর। সে বছর-ই কোচবিহার ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান এবং জোড়াবাগান। আশ্চর্যজনকভাবে সেদিন নিজেদের পূর্ববঙ্গীয় ডিফেন্ডার শৈলেশ বসুকে নামায়নি জোড়াবাগান। ম্যাচটি শেষপর্যন্ত হেরে যায় তারা। হারের জন্য কেবলমাত্র দায়ী করা হয় আরেক পূর্ববঙ্গীয় ফুটবলার নসা সেনকে।

জোড়াবাগান ক্লাবের তৎকালীন সহ-সভাপতি সুরেশচন্দ্র চৌধুরী নিজেও ছিলেন একজন পূর্ববঙ্গ নিবাসী। তিনি অচিরেই বুঝলেন, বাঙাল বিদ্বেষ থেকেই দুই ফুটবলারকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে সেই মুহূর্তেই ক্লাব ত্যাগ করেন সুরেশবাবু। এরপর মাত্র তিনদিনেই তাঁর নিমতলার বাড়ীতে জন্ম নিল শিশুটি। ইস্টবেঙ্গল স্পোর্টিং। সারদারঞ্জন রায়কে বলা হয়, বঙ্গ ক্রিকেটের ডব্লিউ জি গ্রেস। সুরেশবাবুর অনুরোধে সেই তিনি নয়া ক্লাবটির সভাপতির পদ গ্রহণ করলেন। তারপর ১০০ বছরে অনেক জল বয়ে গিয়েছে গঙ্গা দিয়ে।

খাস খবর ফেসবুক পেজের লিঙ্ক:
https://www.facebook.com/khaskhobor2020/

একাধিক সাফল্য জমা হয়েছে ক্লাবের ক্যাবিনেটে। জাতীয় লিগ, ফেড কাপ, ডুরান্ড কাপ, কলকাতা লিগ ইত্যাদি তো বটেই এমনকি অসিয়ান কাপও রয়েছে সেখানে। এখন আবার আইএসএলেও নামছে দল। সাফল্য আজ না এলেও কাল আসবেই। কিন্তু কখনওই মুছে যাবে না ক্লাবের নেপথ্যে হিংসার ইতিহাস। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এক জাতিগত বিদ্বেষের ফসল। এ কথা কখনওই মুছে যাবে না।