শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি, দুর্গোৎসবে মেতে উঠেছেন জার্মানির প্রবাসীদের Team Durgaville

0
252

ঋতিকা চক্রবর্তী: বাঙালি ছড়িয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব জুড়ে। বাঙালি যখন রয়েছেই তখন বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোও থাকবে। কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের মতো নাই বা হল, কিন্তু বিদেশ বিঁভুইয়ে প্রবাসী বাঙালিরা একসঙ্গে সময় কাটান পুজোর এই চার-পাঁচটি দিন। মা দুর্গার আরাধনায় মেতে ওঠেন তারা। সেই সঙ্গে হয় জমিয়ে আড্ডা, নাচ-গান অনুষ্ঠান ও ভোগ খাওয়া। তেমনটাই হচ্ছে সুদূর জার্মানিতেও। জার্মানির এরলাঙ্গেনের Durgaville টিম মেতে উঠেছে দুর্গাপুজোর আনন্দে।

শরৎকাল শুরু হলেই গোটা বিশ্বের প্রতিটি বাঙালির মন ও হৃদয়কে দোলা দিয়ে যায় দুর্গাপুজোর ঢাকের আওয়াজ। ওই যে, কথায় বলে না বাঙালিরা আসলে ৩৬০ দিনের পরিকল্পনা করে বছরের এই মাত্র ৫ দিন দুর্গাপুজো উদযাপনের জন্য। জার্মানির এই পুজো অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, “Durgaville টিম, আমরাও আলাদা নই! আমরাও একই আবেগ বহন করি এবং আমরা এই দিনগুলির জন্য অপেক্ষা করি। একই রোমাঞ্চ আমাদেরও থাকে। অপরিসীম আনন্দ দেয়। গোটা কমিটি, আমাদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে রয়েছে। আমরা গত বছর আমাদের যাত্রা শুরু করেছি এবং এরলাঙ্গেনে সমগ্র সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের কারণে এটি একটি দুর্দান্ত সাফল্য।”

- Advertisement -

এই পুজো কমিটির উদ্দেশ্য হল দুর্গাপুজো সবচেয়ে বিশুদ্ধ এবং ঐতিহ্যবাহী উপায়ে করা। তাদের কথায়, “এই কারণেই আমরা এখানে এরলাঙ্গেনে মূর্তি নির্মাণ শুরু করেছিল। কাঠামো পুজো করা, মহালয়ার শুভ দিনে চক্ষু দান করা, একটি খাঁটি সাবেকি মূর্তি গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি।” এবারেও থাকছে সাবেকি ধাঁচের একচালার প্রতিমা। গোটা মণ্ডপে থাকছে অরিগামি দিয়ে তৈরি করা মা দুর্গার মুখ। Durgaville টিম ভারত থেকে আসা তিনটি বাঙালি পরিবার নিয়ে গঠিত। এঁনারা এই এরলাঙ্গেনে এসেছেন প্রায় বহু বছর আগে। ওখানকারই স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন বলা চলে। কলকাতায় দুর্গা পুজোর “আমেজ” যতটা সম্ভব ফুটিয়ে তোলার চেষ্টায় রয়েছেন তারা। এই বছর Durgaville -র পুজো উদ্ধোধন করবেন এরলাঙ্গেনের মেয়র ও জার্মানির ভারতীয় দূতাভাসের কনস্যুলেট জেনারেল। 

আরও পড়ুন: কলকাতায় না থাকার আফসোস নেই, সিঙ্গাপুরে দেবী মায়ের দর্শনে এলে ভোগ মিলবেই

এছাড়াও Durgaville -র টিম প্রতি বছর একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করে, যার নাম ‘শারদীয়া’। এই ম্যাগাজিন আরও পাঁচটি কলকাতা এবং প্রবাসের দুর্গাপুজোর সঙ্গে মিলিত ভাবে প্রকাশিত হয়। সেই পুজোগুলি হল- জোড়াসাঁকোর ঐতিহ্য মন্ডিত শিব কৃষ্ণ দাঁ বাড়ির পুজো, বার্লিন দুর্গাপুজো, কানাডার মানিতোবার বিচিত্রা বাঙালি অ্যাসোসিয়েশন, ডুসেলড্রফ দুর্গাপুজো এবং বেঙ্গলি হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে লন্ডন শারদৎসব। Durgaville এর প্রাণ এই আবেগপ্রবণ বাঙালিরাই। ছাত্রছাত্রীরাও এই দলের অন্যতম অংশ, যারা মূলত পড়াশোনার জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। এই পুজোর সময় বাড়ি থেকে দূরে থাকার মন খারাপ ভুলে ছাত্রছাত্রীরা দিন-রাত এক করে কাজ করেন। পুজোর প্রস্তুতিতে তাদের বড় ভূমিকা রয়েছে। এই বছরে পুজোতে থাকছে ভোগ, থাকবে নানান মজার খেলা, শঙখধ্বনি প্রতিযোগিতা, মোমবাতি জ্বালানো প্রতিযোগিতা। সেই সঙ্গে ছোটদের জন্য বসে আঁকো প্রতিযোগিতা থাকবে। এবং নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে। এক সদস্যের কথায়, “আমরা এভাবেই কলকাতায় পুজো উপভোগ করি, এরলাঙ্গেনে কেন অন্যরকম হবে।” Durgaville -র মূলমন্ত্র হল “এই পুজো সকলের।”