MA ENGLISH CHAIWALI দেখতে চান, চলে আসুন হাবড়া স্টেশনে

0
207

হাবড়া: ইনি চা-ওয়ালা নন৷ চা-ওয়ালি৷ এই চা দোকানে থাকে ইংলিশ পেপারও৷ ইংলিশে কথা বলতেও পারদর্শী এই চা-ওয়ালি৷

রসিকতা নয়, রবীন্দ্রভারতী থেকে ইংলিশে এমএ করার পর চাকরি জোটেনি৷ তাই স্বনির্ভরশীল হতে আস্ত চায়ের দোকানই খুলে ফেলেছেন বছর ছাব্বিশের টুকটুকি দাস৷ দেখতে হলে আসতে হবে হাবড়া স্টেশনে৷ টুকটুকি নিজের চা দোকানের নামও রেখেছে, “MA ENGLISH CHAIWALI. সঙ্গে রয়েছে ব্যবসায়িক ট্যাগ লাইন All Time Is Tea Time.

- Advertisement -

আচমকা চা দোকান খুলে বসলেন কেন? উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার কৈপুকুরের বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের তরুণী টুকটুকি বলছিলেন, হাবড়া শ্রীচৈতন্য কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক হওয়ার পর রবীন্দ্রভারতী থেকে ইংরেজিতে MA পাস করেছেন তিনি। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও সরকারি চাকরি তো দূর অস্ত, বেসরকারি ভাল চাকরিও কপালে জোটেনি। তার তাই একপ্রকার হতাশার মধ্যেই ছিলাম৷ সোশ্যাল মিডিয়া ঘাটতে ঘাটতে নজরে আসে জীবন সংগ্রামে লড়াই করা ‘প্রফুল্ল বিল্লরে এমবিএ চা ওলার’ কাহিনী।

টুকটুকির কথায়, ‘‘ইংরেজিতে এমএ করলেও ব্যবসা করার পরিকল্পনা ছিল৷ কিন্তু বড় ব্যবসা করার মতো পুঁজি তো আমার নেই৷ তাই এদিকে মানসিক অবসাদ, হতাশা থেকে বেরানোটাও জরুরি ছিল৷ ‘প্রফুল্ল বিল্লরে এমবিএ চা ওলার’ কাহিনীটা তখনই নজরে আসে৷ ওতে অনুপ্রাণিত হই৷ আর সাত, পাঁচ ভাবিনি৷ খুলেই ফেললাম চা দোকান!’’

যেমন ভাবা তেমনই কাজ৷ পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে মানসিক জেদ ও একাগ্রতাকে পুঁজি করে হাবড়া স্টেশনের দুই নম্বর প্লাটফর্মে ছোট্ট একটি দোকান এক বছরের জন্য ভাড়া নেন । আর সোমবার থেকে সেখানেই বিভিন্ন স্বাদের চা বিক্রি শুরু করছেন। চায়ের সঙ্গে ক্রেতা টানতে সন্ধ্যের দিকে সিঙ্গারা বিক্রি করছেন৷ পরবর্তীতে মোমো বা এধরনের জনপ্রিয় কিছু খাবারও সেই তালিকায় রাখার পরিকল্পনা রয়েছে টুকটুকির।

প্রথম দিন অবশ্য চায়ের স্বাদ কেমন হচ্ছে বোঝানোর জন্য দু’ঘণ্টা একেবারে বিনামূল্যে চা খাওয়ানো হয় স্টেশনে ট্রেন ধরতে আসা নিত্যযাত্রীদের। পরিবারের থেকে প্রথমে এমএ পাস ওই ছাত্রীর চায়ের দোকান করা নিয়ে আপত্তি উঠেছিল। পরে টুকটুকি ইউটিউবে চা ওয়ালার বিভিন্ন মানুষের ভিডিও দেখিয়ে পরিবারকে বুঝিয়েছে এভাবেও স্বনির্ভর হওয়া সম্ভব। তাই পরে মেয়ের এই সিদ্ধান্তকে একপ্রকার স্বাগত জানিয়েছে পরিবার।

কারণ, কে না জানে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন প্রফেশনের কথা! অনেক ইঞ্জিনিয়ার, এমবিএ, উচ্চ শিক্ষিত যুবকও চায়ের দোকান খুলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। ইংরেজিতে এমএ পাস করা টুকটুকিও সেই চা-কে আঁকড়েই জীবন বদলের চ্যালেঞ্জটা নিয়ে ফেলেছেন৷ স্বভাবতই তাঁর এই জার্নি সফল হোক৷ শুভেচ্ছা রইল খাসখবর পরিবারের পক্ষ থেকে৷

আরও পড়ুন: Breaking the Law: জব্দ হল না শব্দ, আইনের শাসন উড়িয়ে রাতের দখল নিল বাজি