কোভিড গবেষণায় পুত্রের দেহদান করে করোনাকে হারিয়ে দিলেন শোকাতুর পিতা

0
129

ব্যারাকপুর: করোনা কেড়ে নিয়েছে একমাত্র সন্তানকে৷ টেলিফোনের ওপার থেকে পুত্র হারানোর সংবাদ শোনার পর শোকে পাথর হয়ে যাননি৷ বরং সদ্য মৃত পুত্রের দেহ কোভিড গবেষণায় দান করে করোনা নামক অতিমারীকেই কার্যত হারিয়ে দিলেন শোকাতুর পিতা৷ নজিরবিহীন এমনই ঘটনার সাক্ষী রইলেন চিকিৎসক, নার্সরা৷ সাক্ষী হলেন উত্তর ২৪ পরগনা ভাটপাড়ার পদ্মপুকুর পালপাড়া এলাকার বাসিন্দারাও৷

আরও পড়ুন: অভিষেককে প্রকাশ্যে চড় মারা যুবকের রহস্য মৃত্যু

- Advertisement -

পুত্র হারা পিতা বলছেন, ‘‘ছেলেকে তো আর কোনওদিন ফিরে পাব না৷ এটা মনে রাখতে হবে, করোনাকে এখনও পুরোপুরি হারানো যায়নি। তাই নতুন করে কেউ যাতে সন্তান হারা না হন, তাই গবেষণায় ছেলের দেহটা দান করার সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলি ওর মৃত্যু সংবাদ শোনার পরই৷ করোনা মানুষের শরীরে কীভাবে কতটা ক্ষতি করছে, তা চিকিৎসকদের গবেষণা করা একান্ত প্রয়োজন। তার জন্যই ছেলের দেহ দান করলাম৷’’

আরও পড়ুন: মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজত্বে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মহিলারাই: অগ্নিমিত্রা

উত্তর ২৪ পরগনা ভাটপাড়ার পদ্মপুকুর পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা সরোজ পাল। তাঁর ছেলে সৈকত পাল (৪১) মে মাসের শেষ সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হন৷ অসুস্থতার কারণে সৈকতকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল৷ তখন থেকেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন৷ বুধবার রাতে সৈকতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চার্ণক হাসপাতাল থেকে এমআরবাঙুর হাসপাতালে স্থানান্ততরিত করা হয়। কিন্তু রাতেই সেখানে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সৈকত৷

বাইরে তখন অঝোরে বৃষ্টি৷ টেলিফোনের ওপার থেকে ভেসে এল একমাত্র সন্তানের মৃত্যু সংবাদটা৷ সঙ্গে সঙ্গেই দেহদানের সিদ্ধান্ত নেন পিতা৷ যোগাযোগ করলেন গণদর্পণ নামক সংস্থার সঙ্গে৷ টেলিফোনে সংস্থার কর্মকর্তাদের জানান, যে করোনা নিয়ে গবেষণার জন্য তার পুত্রের দেহ দান করতে চান তিনি। বৃদ্ধ বাবার ইচ্ছানুযায়ী মৃত সৈকত পালের মরদেহের রোগ নির্ণায়ক ময়নাতদন্তের (অটোপসি) ব্যবস্থা করা হয়। এতে অবশ্য সৈকতের স্ত্রী আর তাঁর মা কোনো আপত্তি জানাননি। ফলে লক্ষ্মীবারে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হল রাজ্যের দশম কোভিড মৃতের রোগ নির্ণায়ক ময়নাতদন্ত বা অটোপসি।