বামদের বনধকে উপেক্ষা করে ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের জনসভা

0
309

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রাম: দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারীর সভার পাল্টা সভার ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। সেই মত প্রস্তুতিও হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের। কিন্তু সভার ঠিক আগের দিনেই বাংলা বনধের ডাক দেয় বামফ্রন্ট। শুক্রবার সকাল থেকেই বনধের সমর্থনে দিকে দিকে পথ অবরোধ থেকে শুরু করে মিছিল করতে দেখা গিয়েছে সিপিএম কর্মীদের।

তবে সভার পূর্বে তৃণমূল দাবি করেছিল যে বিজেপির সভার থেকে তিন গুণ লোক হবে তাদের মিছিলে। তারই বাস্তবায়িত হল শুক্রবার। বামদের বনধকে উপেক্ষা করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন সভায় মানুষের ভিড় উপচে পড়ে।

- Advertisement -

জানা গিয়েছে, শুক্রবার বেলা বারোটা থেকেই মানুষের জমায়েত শুরু হতে থাকে ঝাড়গ্রামের জামদা সার্কাস মাঠে। সভাস্থলে দুপুর তিনটা নাগাদ পৌঁছায় রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জনসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তো এখানে বসে আছি আসলে সভা পরিচালনা করছেন আপনারাই। যারা অতি কষ্ট করে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোক্ষম জবাব দেওয়ার জন্য। জঙ্গলমহলের হাঁসি ফোটানোর পাশাপাশি উন্নয়নের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সপক্ষে জড় হয়েছেন মানুষ”।

তিনি আরও বলেন,”নাড্ডা বাবু প্লেনে করে এখানে একবার নামুন, আপনি গড্ডা খেয়েছেন। মানুষের সমর্থন দেখুন এখানে কোথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মানুষের সমর্থন কোথায়। আসল কথা বাইরে থেকে সৈন্যবাহিনী এনে, সেনাপতি এনে যুদ্ধে জয় করা যায় না”।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর তিরন্দাজিদের জন্য ক্যাম্প করার দাবি ছিল, স্কুল, কলেজ, বিশ্ব বিদ্যালয় করার দাবি ছিল, শিক্ষক নিয়োগের দাবি ছিল, কর্মসংস্থান তৈরি করার দাবি ছিল, আপনারা দেখুন কে কি কাজ করছে”।

মিছিল থেকে তিনি বলেন,”এখন ঝাড়গ্রামের বুকে ঝাড়গ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয় তৈরি হয়েছে, মেডিকেল কলেজ, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, আলচিকি ভাষার স্কুল তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে পাঁচশো আলচিকি শিক্ষক নিয়োগের কাজ চলছে। কিছু দিনের মধ্যেই তার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবে। যে সমস্ত স্বকৃত ভাষা আছে সেই ভাষর বিদ্যালয় হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথা বলেন যে প্রতিশ্রুতি দেন তা তিনি রাখেন। বিজেপির মত ফাঁকি বাজে নয় বা বামফ্রন্ট এর মত অত্যাচারী নয়। শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষে আমরা কাজ করছি”।

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “অনেক দলবদলু নেতা এখানে এসে বলে যান তারা নাকি জঙ্গলমহলের ত্রাণ কর্তা, তারা ত্রাণ কর্তা না তারা পকেট ভরার কর্তা। জঙ্গলমহলের মানুষকে দুঃখে রেখে নিজেরা বড় হয়েছে। জঙ্গলমহলের মানুষের দুঃখে তারা আসেনি, কোন এনজিও কে দিয়ে দুই একটি বাড়ি করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস ক্রমাগত মানুষের পাশে থেকে মানুষের প্রত্যাশাকে পূরণ করেছে”।

বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “আমি আশ্বত করতে চাই আপনাদের, এরা শান্তিকে বিঘ্নিত করতে চাই, এরা উন্নয়নের পথ বন্ধ করে দিতে চাইয় , এরা বাড়ি তৈরি থেকে পঞ্চায়েত , এরা দুয়ারে সরকারের কাজ বন্ধ করে দিতে চায়। আজকে রেল বেসরকারি করা হচ্ছে , বিএসএনএল কে বেসরকারি করা হচ্ছে , এয়ারপোর্ট গুলোকে বেসরকারি করা হচ্ছে , জীবন বীমা গুলোকে বেসরকারির হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে । এটা হচ্ছে বেচাদের সরকার শুধু বেচে দাও । এই বেচে দেওয়া সরকার আর নয় দরকার”।

বিধানসভা ভোট কে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, “২০২১ শের বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের চারটি বিধানসভা প্রার্থীদের সবাই মিলে সমর্থন করুন আসলে প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়”। শুক্রবারে সভায় উপস্থিত ছিলেন, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাত, দেবু টুডু তৃণমূলের এসটি সেলের সভাপতি, ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেন টুডু , ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু , গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক চূড়ামনি মাহাত , বিনপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রানাথ হেমব্রম , ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস , ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের দুই কো অর্ডিনেটার অজিত মাহাত ও উজ্জ্বল দত্ত সহ তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্বরা।