ঠান্ডায় কাতর মৌমাছি, মধু পেতে চিনি ‘ঘুষ’ দিতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা

0
135

মালদহ: এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ব্যাপক শৈত প্রবাহ চলছে মালদহ জেলায়৷ যার কারণে মধু চাষ করতে গিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছেন চাষিরা। কারণ, কনকনে ঠান্ডার কারণে বাক্স থেকে বের হচ্ছে না মৌমাছির দল। ফলে মৌমাছির খাদ্য হিসাবে বাড়তি দাম দিয়ে চিনি কিনে বাক্সগুলিতে ভরতে গিয়ে তাঁদের রীতিমতো দফা রফা হওয়ার জোগাড়! তাঁরা বলছেন, ‘এরকম শৈত্যপ্রবাহ একটানা চলতে থাকলে মধু চাষে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেবে৷

মধু চাষিদের বক্তব্য, কাঠের বাক্স থেকে মৌমাছির দল আশেপাশের সর্ষের ক্ষেত, আমগাছ সহ বিভিন্ন বাগান থেকে ফুলের রস সংগ্রহ করে মূলত বাক্সে ফিরে এসে মধুর চাক তৈরি করে। কিন্তু গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে প্রবল শৈত্যপ্রবাহের জেরে মৌমাছির দল কাঠের বাক্স ছেড়ে বের হচ্ছে না। বিকল্প খাদ্য হিসাবে বাক্সগুলিতে কেজি কেজি চিনি দিয়ে সমস্যা মিটাতে হচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে মধু উৎপাদনের ক্ষেত্রে খরচ বেশি হবে, লাভের পরিমাণ কমে যাবে।

- Advertisement -

উল্লেখ্য, পুরাতন মালদহ ব্লকের সাহাপুর, মুচিয়া, যাত্রাডাঙ্গা, মহিষবাথানি, মঙ্গলবাড়ি, ভাবুক সহ একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিপুল পরিমাণে মধু চাষ হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকার আমবাগানগুলিতে মধুর উৎপাদনের ক্ষেত্রে পৃথক কাঠের বাক্স রেখে মৌমাছি পালন করেন চাষিরা। এরপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই মৌমাছির দল বাক্সের মধ্যেই থাকা প্রতিটি চাকে মধু রস তৈরি করে। যা এক মাসের মধ্যেই উৎপাদন হয়ে যায়। পরবর্তীতে চাষিরা, সেই বাক্স খুলে সরাসরি মধুর চাকগুলি কেটে নেন। সেগুলি পরিশ্রুত করে বিভিন্ন কোম্পানিগুলিকে সরবরাহ করে থাকে।

সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়পুর এলাকার মধু চাষি মনসুর আলী, শাহজাহান রহমানদের বক্তব্য, এবারের অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে মধু উৎপাদন কমে গিয়েছে। যে মধু গত বছর ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এবারে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে মধুর গুণগতমান কিছুটা নেমে গিয়েছে। ফলে এবারে কেজি প্রতি মধুর দর ৭০ থেকে ৮০ টাকায় নেমে গিয়েছে৷ তাও পাইকারিরা ঠিকমতো নিতে চাইছেন না। আশার কথা অবশ্য শুনিয়েছে জেলা উদ্যানপালন দফতর৷ আধিকারিকেরা বলছেন, এই ধরণের শৈত্য প্রবাহ একটানা বেশিদিন থাকে না। খুব শিগগিরই ঠান্ডার দাপট কমে যাবে এবং চাষিরা নির্দিষ্ট মাত্রায় মধু উৎপাদন করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: ছাদনাতলার পরিবর্তে গির্জা, যীশুকে সাক্ষী রেখে বিয়ে সারলেন বাঙালি বধূ