টাকায় বিনিময়ে মেয়েকে বিক্রি করার অভিযোগ নেশাড়ু বাবার বিরুদ্ধে

0
74
sex racket

মিলন পণ্ডা, মহিষাদল: চোখের পাতা খোলা থেকে বন্ধ করার আগে পর্যন্ত দিনভর নেশাতেই বুঁদ হয়ে থাকে সে৷ নেশায় যেন তার ধ্যান, জ্ঞান৷ এবার সেই নেশা দ্রব্যের টাকা জোগাড় করার জন্য নিজের নাবালিকা মেয়েকে যৌনপল্লীর (sex racket) দালালের হাতে তুলে দিল বাবা! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন৷ নিজের জন্মদাতা বাবা! চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল থানার উত্তর গোপালপুর গ্রামে। তবে কানাঘুষো খবর পেয়ে কালক্ষেপ করেননি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য৷ প্রশাসনের সহযোগিতায় অবশেষে বিক্রির আগেই উদ্ধার করা হয়েছে নাবালিকা৷ ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা অভিযুক্ত বাবা! ভিযুক্তের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন স্ত্রী থেকে এলাকার বাসিন্দারা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদল থানার উত্তর গোপালপুর গ্রামের শুকদেব চক্রবর্তী দীর্ঘদিন ধরেই নেশাসক্ত৷ ফলে সংসারে আর্থিক অনটন ছিলই৷ সেই সুযোগে তাঁকে নিজের মেয়েকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রির টোপ দেয় এক দালাল৷ অভিযোগ, নেশার জন্য মেয়ে বিক্রির এমন লোভনীয় অফার হাতছাড়া করতে চাননি শুকদেব৷ অভিযোগ, গত পয়লা আগষ্ট পাশের নাটশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাঙ্গীবাসন এলাকায় এক যুবকের কাছে মেয়েকে বিক্রি করে দেয় সে। বাড়িতে জানাই আমাদের গরিবের সংসার তার বাড়িতে মেয়েকে ভালো পড়াশোনা করাবে। শুকদেবের কথা বিশ্বাস করে রাজি হয়ে যান তাঁর স্ত্রী৷ কিন্তু পরে লোকমুখে তিনি জানতে পারেন, মেয়েকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছেন তার স্বামী৷

- Advertisement -

এরপর মেয়েকে ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রশাসনের আধিকারিকদের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পাওয়ার পরই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসনের আধিকারিকরা। এরপর পঞ্চায়েত সদস্যকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বুধবার সকালে স্থানীয় বিডিও এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা গিয়ে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। নিরাপত্তার কারণে নাবালিকাকে আপাতত রাখা হয়েছে একটি হোমে৷

অভিযুক্তের স্ত্রী মৌসুমি চক্রবর্তী বলেন, ” স্বামী নেশা করে বহু টাকা ঋণ করেছে। বাড়িতে দুই মেয়ে এক ছেলে। বড় মেয়েকে পড়াশোনা ও ভাল পরিবারে রেখে বড় করে তোলার কথা বলে নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। জেনেই বিষয়টি স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েতকে জানাই। পরে মহিষাদল থানায় অভিযোগ দায়ের করি। আমার স্বামীর কঠোর শাস্তি চাই৷’’

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুখেন্দু দাস বলেন, ” খবর পাই আমার এলাকার একটি ছেলে তার নাবালিকা মেয়েকে পাশের গ্রাম নাটশাল-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রঙ্গীবসান এলাকায় এক মহিলার কাছে বিক্রি করেছে। যৌন পল্লীতে বিক্রির (sex racket) কথা শুনে আমি বিষয়টি স্থানীয় থানায় ও বিডিও-কে জানাই৷” মহিষাদল ব্লকের বিডিও যোগেশচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে৷ মেয়েটি বাড়িতে নিরাপদ নয়, এমনটাই তার মা আমাদের জানিয়েছেন। মেয়েটিকে হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷’’

আরও পড়ুন: গোষ্ঠীদ্বন্দ নিয়ে এবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি