‘কার্যকর করে দেখাব দলত্যাগ বিরোধী আইন’, দল ভাঙার আশঙ্কায় মমতাকে হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

0
48

কলকাতা: নির্বাচন শেষ হয়ে গেলেও বঙ্গ রাজনীতিতে এখন টানটান উত্তেজনা রয়েছে ঠিক যেমনটা তৈরি হয়েছিল বিধানসভা নির্বাচনের আগে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির নজরকাড়া সাফল্যের পিছনে যে মুকুল রায় ছিলেন তিনিই আবার শুক্রবার তাঁর পুরানো দল ফিরে এসেছেন। এটাই এখন বঙ্গ বিজেপির যাবতীয় ভয়ের কারণ। মুকুল রায়ের দল ভাঙানোর ক্ষমতা ঠিক কতখানি তা বিজেপির কারও কাছেই অজানা নয়। এই কারণেই ঘর বাঁচাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন একদা তৃণমূল নেত্রী ঘনিষ্ঠ নেতা তথা বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

মুকুল ঘরে ফেরায় যে আখের বিজেপির ক্ষতি হবে তা মুখে না বললেও খুব ভালো করেই অনুভব করতে পারছে বঙ্গ বিজেপি। ঠিক একই কারণেই শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করে দেখানোর হুঙ্কার দিয়েছেন। তৃণমূলে মুকুল রায়কে টানা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হয়নি বাংলা। পদ্ধতি জানি। আমি বিরোধী দলনেতা হিসেবে বলছি, দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করে দেখাব। ২-৩ মাস সময় লাগবে। দলত্যাগ বিরোধী আইন মেনে দল বদল করতে হবে। আমি শুভেন্দু অধিকারী সাধারণ ভোটার হিসেবে BJP-তে যোগ দিয়েছি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দল যে আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সেটা প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব আমার। দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করা নিয়ে দেশের আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদের সঙ্গে কথা বলেছি’।

- Advertisement -

নির্বাচনের আগেই মমতার গলায় মুকুলের নাম শোনার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। সেটাই সত্যি হয়েছে। এমনি মুকুলএর যোগদানের দিনেই সাংবাদিকদের তৃণমূল নেত্রী খোলসা করে না বললেও জানিয়েছেন অনেকেই বিজেপি ছেড়ে আসবেন। নেত্রীর এই কথাতেই ঘুম উড়ে গিয়েছে বিজেপির। পাশাপাশি তৃণমূলে যোগ দিয়েই স্বরূপে ফিরেছেন মুকুল রায়। তাঁর ফোন গিয়েছে বহু বিজেপি নেতার কাছেই। এমনকি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার লাইন যে লম্বা সেই খবরও রয়েছে বিজেপির কাছে। সেই কারণেই যেকোনো মূল্যে বিজেপি নেতাদের ধরে রাখতে চাইছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর হলে দলের ভাঙন কিছুটা রোখা যাবে। তাই আদা জল খেয়ে দল বাঁচাতে মরিয়া হয়েছেন শুভেন্দু।

দলে ভাঙন ধরানো নিয়ে মমতাকে নিশানা করে বিরোধী দলনেতা আরও বলেছেন, ‘২০১২ সাল থেকে বিধায়ক ভাঙা ও বিরোধী দলকে শেষ করা শুরু করেছেন। আগে কংগ্রেস ও সিপিএম টার্গেট ছিল। এখন সেটাই বিজেপির সঙ্গে করতে চান। ওঁর এটা দীর্ঘদিনের রোগ। ওঁর রাজত্বে কোনও বিরোধী শক্তিকে রাখতে চান না। গণতন্ত্র মানেন না। সে জন্য স্কুলের নির্বাচন তুলে দিয়েছেন। ৪ বছর কলেজের ছাত্র সংসদের ভোট করেননি। ২-৩ বছর ধরে ১১০টা পুরসভায় নির্বাচন হয়নি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের নামে প্রহসন ও লুঠ করেছেন। গণনাকেন্দ্র দখল করছেন উনি।” এখন শুধু দেখার অপেক্ষা আগামী দিনে বঙ্গ রাজনীতিতে ঠিক কি কি হয়।