Due to Medical Negligence: স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল মেয়েটার…

চিকিৎসার গাফিলতিতে মানিকতলায় মৃত্যু শিশুকন্যার

0
1065

শ্রেয়া মাজি ও অনন্যা ঘোষ, কলকাতা: দুঃসংবাদটা এসেছিল বুধবার রাতেই৷ অবশেষে লক্ষ্মীবারের সন্ধ্যায় বাড়িতে নয়, বাড়ির চৌকাঠে এসে পৌঁছাল ছোট্ট সৃজার মৃতদেহ! শববাহী যানে ফুলের পাপড়িতে মোড়া ছোট্ট মেয়েটার শায়িত দেহটা দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ল আস্ত তল্লাট!

বেদনার ভারে ততক্ষণে ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার বাতাসও৷ ভেসে আসছে প্রবীণদের আর্তনাদ, ‘‘এ কি করলে ঠাকুর, আমাদের না কেড়ে, একরত্তি বাচ্চাটাকে… এ তোমার কেমন বিচার..৷’’ কথা বলার অবস্থায় নেই সৃজার মা, বাবা থেকে নিকটজনেরা৷

- Advertisement -

মানিকতলার ৪ হাজি জাকারিয়া লেনের বাসিন্দা সৃজা দত্ত ওরফে মামাই গত কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিল৷ বাড়িতে পারিবারিক চিকিৎসকই দেখছিলেন৷ রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ ধরা পড়ে৷ চিকিৎসকের পরামর্শে মঙ্গলবার তড়িঘড়ি তাঁকে ভর্তি করা হয় মানিকতলা পোস্ট অফিস সংলগ্ন একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালে৷ বুধবার সন্ধ্যায় সেখানে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছোট্ট সৃজা৷

পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসক এবং নার্সদের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে সৃজার৷ পরিবারের এক সদস্য জানান, সৃজার গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল। জল চাইছিল। অথচ সেই জল দেওয়ার মতো কোনও নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন না। জল না পেয়ে পরে অক্সিজেনের অভাবে সৃজার মৃত্যু হয় বলে দাবি পরিবারের।

মানিকতলা পোস্ট অফিস সংলগ্ন ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে দত্ত পরিবার৷ পরিবারের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে৷ দাবি করা হয়েছে. কঠোর শাস্তির৷ কারণ, নতুন করে যেন আর কোনও মায়ের কোল খালি না হয়৷

লক্ষ্মীবারের সন্ধ্যায় ফুলে ঢাকা সৃজার শায়িত দেহটা নিয়ে শববাহী গাড়িটা ধীর গতিতে এগোচ্ছিল অন্তিম যাত্রার লক্ষ্যে৷ সেদিকে আঙুল দেখিয়ে পরিবারের এক সদস্য বলছিলেন, ‘‘প্রচণ্ড হাসিখুশি ছিল মেয়েটা৷ ২০ মাস পর স্কুলে যাওয়ার আনন্দে মাতোয়ারা ছিল৷ জ্বরে গায়ে বলেছিল, সুস্থ হয়ে স্কুলে যাব৷ কিন্তু তার আগেই যে সব শেষ হয়ে গেল…!’’ কান্নায় বুজে যায় গলা৷

ডেঙ্গু মশার কামড়… জ্বরাভাব… অসহ্য পেট যন্ত্রণা… চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ এবং অকালে প্রাণ হারানো৷ চেনাছকের এই অকাল-মৃত্যু মিছিলের শেষ কোথায়? এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব পালনে আমাদের কেন এত অনীহা!

প্রশ্নটা কিন্তু রেখে গেল ওই বাচ্চা মেয়েটা৷ জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে উঠে স্কুলে যাওয়ার কথা ছিল যার!!

আরও পড়ুন: শহরে ডেঙ্গুর বলি এবার ১০ বছরের শিশু কন্যা, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ