দলনেত্রীর নির্দেশ উড়িয়ে মদন বোঝালেন মেজাজটাই আসল রাজা

ঘনিষ্ঠরা বলছেন, ‘‘দাদা রথ দেখা, কলা বেচা দুইই সারছেন৷ ফেসবুক লাইভও করা হচ্ছে আবার পরে পেজ থেকে তা উড়িয়ে দলনেত্রীর নির্দেশও অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন!’’

0
187

সুমন বটব্যাল, কলকাতা: অনেকের কাছে ‘আইকন’ তিনি’৷ অনেকের চোখে ‘খল নায়ক’ও! তবে তাতে কুছ পরোয়া নেহি মদন মিত্রের৷ এমনকি দলনেত্রীর কড়া নির্দেশের পরও কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ককে প্রায় প্রতিদিনই একাধিকবার সোশ্যাল সাইট ফেসবুকে নিজের পেজে লাইভ করতেও দেখা যাচ্ছে৷ লাইক, কমেন্টের বন্যা বইছে সেখানে৷

আরও পড়ুন: প্রতিবেশী গ্যাংস্টার নয় তো! বহুতলের অন্দরে সন্দেহের বাতাবরণ

- Advertisement -

যা থেকে স্পষ্ট, তৃণমূলের অন্দরে আজও নিজস্ব ক্যারিশমা বজায় রাখার ধারা অব্যাহত রেখেছেন পোড় খাওয়া রাজনীতিক মদন৷ ‘দাদা’র ঘনিষ্ঠরা বলছেন, মানতে হবে দাদার বুকের পাটা আছে৷ তা না হলে দলনেত্রীর নির্দেশের পরও এভাবে কেউ ফেসবুক লাইভ করতে পারে! আসলে দাদা বরাবরই নিজস্বতা বজায় রাখতে চেয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, মেজাজটাই হল আসল রাজা!

আরও পড়ুন: মমতাকে ‘জব্দ’ করতে সংসদে নুসরতের ‘সহবাস’ই তুরুপের তাস বিজেপির

গত মঙ্গলবার কামারহাটির বিধায়কের ভবানীপুরের বাড়িতে আগুন লাগে৷ তারপরই বুধবার মদনবাবুর ফেসবুক পেজের লাইভে দেখা গিয়েছে, তিনি কালো জামা, ট্র্যাক শ্যুট পরে ঘরের মেঝেতে বসেই নিজস্ব ঢঙে মা কালীর পুজো করছেন৷ কখনও মন্ত্র আউড়েছেন তো কখনও মা-কালীকে সাক্ষী রেখে ফেসবুক লাইভে অনুগামীদের কাছে অনুযোগের সুরে বলেছেন, ‘‘মদন মিত্রর পরিবারকে সমূলে বিনাশ করার ষড়যন্ত্র চলছে, তাই আজ আমি বাড়িতে মায়ের পুজো করতে বাধ্য হলাম৷’ কখনও বা চোট খাওয়া বাঘের মতো তাঁর কন্ঠে শোনা গিয়েছে হুঙ্কার, ‘‘আমাকে শেষ করার সাধ্যি কার আছে! মা (কালী) তুমি তো আছো!’’

ঠিক যেমন গত শুক্রবার নিজের ফেসবুক পেজের লাইভ অনুষ্ঠান থেকে দলনেত্রীর উদ্দেশ্যে কার্যত চ্যালেঞ্জের সুরে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘টিকিটও চাইনি৷ তবু দিয়েছেন৷ মন্ত্রিত্ব আমার দরকার নেই৷ বললে বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দিতে পারি! তিনমাসের জন্য কামারহাটির প্রশাসক করে দিন৷ দেখিয়ে দেব, এলাকার উন্নয়ন কাকে বলে!’’ পরের দিনই শনিবার দলের বৈঠকে যার জেরে দলনেত্রীর তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল মদনকে৷ দলীয় সূত্রের খবর, নেত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ফেসবুক লাইভে যখন তখন যা খুশি তাই বলা যাবে না৷

আরও পড়ুন: অবিশ্বাস্য, মাত্র ৭২ টাকায় থাইল্যান্ড যাওয়ার সুযোগ

কিন্তু সে গুড়ে বালি! সন্দেশখালিতে ত্রাণ বিলি হোক কিংবা কলকাতার উপকন্ঠে খাবার বিলি, তারপরেও কামারহাটির ‘ইয়াং ম্যান’কে দেখা গিয়েছে নিজের ফেসবুক পেজ থেকে একের পর এক লাইভ করতে৷ যদিও লাইভের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই ফের ফেসবুক পেজ থেকে তা উবে যেতেও দেখা যাচ্ছে৷ কেন? মদনবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি৷ তবে ঘনিষ্ঠরা বলছেন, ‘‘দাদা রথ দেখা, কলা বেচা দুইই সারছেন৷ ফেসবুক লাইভও করা হচ্ছে আবার পরে পেজ থেকে তা উড়িয়ে দলনেত্রীর নির্দেশও অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন!’’ নিন্দুকেরা অবশ্য টিপ্পনি কেটে বলছেন, খেয়াল করে দেখুন অধিকাংশ লাইভ-ই হচ্ছে সন্ধ্যার পর অর্থাৎ তখন উনি মদ-‘অন’ হয়ে যান!