দোলাচলে দুর্গা পুজো, মাকে বিদেশে পাঠিয়েই আয়ের আশা শিল্পীদের

0
58

কলকাতা: মন ভাল নেই কুমার পাড়ার৷ আর মাত্র সাড়ে তিন মাস পরই পুজো৷ অথচ এখনও সেই অর্থে মৃন্ময়ীর বায়না আসেনি৷ উলটে যাঁরা অগ্রিম বুকিং করতেন তাঁরাও করোনা আবহে বাতিল করে ফেলেছেন নিজেদের অগ্রিম বুকিং৷ কারণ, করোনা আবহে এবারেও দুর্গা পুজো করতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে সিংহভাগ পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা৷ স্বভাবতই, বিশেষ ব্যস্ততা নেই কুমোর পাড়াতেও৷ অগত্যা, বিদেশের মাটিতেই মা দুর্গাকে পাঠানোর দিকে মনোনিবেশ করছেন কুমোর পাড়ার শিল্পীরা৷

আরও পড়ুন: অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করেন শিল্পী নচিকেতা

- Advertisement -

তবে মৃন্ময়ী নয়, বিদেশমুখী মা ফাইবার গ্লাসের৷ কুমোর টুলির শিল্পীরা জানাচ্ছেন, গতবারের মতো এবারেও দক্ষিণ আফ্রিকা, ইতালি, জার্মানি, কানাডা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া থেকে ফাইবার গ্লাসের দুর্গা প্রতিমা তৈরির অর্ডার আসছে৷ ফলে যাঁরা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে উন্নত করে তুলেছেন তাঁরা প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকলেও বাকিদের দফারফা অবস্থা৷

শিল্পীরা বলছেন, বিদেশ থেকে ফাইবার গ্লাসের প্রতিমা তৈরির অর্ডার আসছে৷ কারণ, প্রবাসী বাঙালিদের একাংশের মধ্যে বাংলা থেকে প্রতিমা রফতানির রেওয়াজ বেশ ভালভাবেই শুরু হয়েছে৷ কিন্তু এবারে যেহেতু নিজ ভূমে দেবী প্রতিমা তৈরির তেমন কোনও অর্ডার নেই, তাই শিল্পীরা ধীরে সুস্থে বিদেশের প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন৷ শিল্পীরা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যে বিদেশে বেশ কিছু প্রতিমা পাঠানোও হয়েছে৷ বাকিগুলির কাজ চলছে৷

তবে ফাইবার গ্লাসের প্রতিমা তৈরি করতে পারেন কুমোর পাড়ায় এমন শিল্পীর সংখ্যা হাতে গোনা৷ স্বাভাবিকভাবেই, সমগ্র পাড়া জুড়ে নেই সেই আগের মতো ব্যস্ততা৷ শুরুটা অবশ্য হয়েছিল গত বছর লকডাউনের প্রকোপের হাত ধরে৷ এবারের পরিস্থিতি আরও খারাপ- বলছেন শিল্পীরা৷ তাঁদের কথায়, ‘‘লক ডাউনের পর ফের লক ডাউন৷ এদিকে সংক্রমণও বেড়ে চলেছে৷ ফলে সর্বত্রই কমেছে মানুষের রোজগার৷ মানুষ আগে তো দু’বেলা পেটের সংস্থান করবে, তারপরে তো পুজো৷’’ স্বাভাবিকভাবেই, সিংহভাগ পুজো কমিটি এবারেও প্রতিমা তৈরির পরিবর্তে খুঁটি পুজোর মাধ্যমেই নম নম করে সারতে পারেন পুজোর আয়োজন৷ অন্তত কুমার পাড়ার আবহাওয়া তেমনই আভাস দিচ্ছে৷