চার্জশিটে সায় রাজ্যপালের, বিপাকে নারদ মামলায় অভিযুক্ত চার বিধায়ক

0
970

কলকাতা: রাজ্যে ২০০-র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় এলেও নতুন করে বিপাকে পড়তে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচন পর্ব মিটতেই নারদ মামলায় অভিযুক্ত তৎকালীন চার বিধায়কের বিরুদ্ধে সিবিআইকে চার্জশিট পেশ করার অনুমতি দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

এই চার বিধায়ক হলেন ববি হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। এদের মধ্যে ববি, সুব্রত, মদন চলতি নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। শোভন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও গেরুয়া শিবির এবার প্রার্থী করেনি তাঁকে। ভোটের ফলাফল বেরোনোর পর আবার তৃণমূলের গুনগান গেয়েছেন তিনি। এদিকে নারদ কাণ্ডে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী এখন বিধায়ক হলেও ঘটনার সময় সাংসদ ছিলেন। ফলে তাঁর বিষয়টি লোকসভার অধ্যক্ষ দেখবেন।

- Advertisement -

সিবিআই সূত্রে খবর, শুক্রবার রাজ্যপালের কাছ থেকে চার্জশিট দেওয়ার (প্রসিকিউশন স্যাংশান) অনুমতি পাওয়ার ফলে তদন্তে গতি আসবে। দুর্নীতি দমন আইনের সাত নম্বর ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিতে পারে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সেক্ষেত্রে বিপাকে পড়তে পারেন শাসকদলের তিন শীর্ষনেতা। এদিকে বিধানসভার বিদায়ী অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাকে সিবিআই এখনও পর্যন্ত কোনও চিঠি দেয়নি। আইনজীবীদের দাবি, নতুন বিধানসভা গঠিত না হওয়ায় রাজ্যপাল অনুমতি দিতেই পারেন।

উল্লেখ্য, ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে ২০১৪ সালে সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল কলকাতায় এসেছিলেন। কলকাতায় এসে এক ট্যাক্সিচালকের সাহায্যে রাজ্যের বিশিষ্ট নেতা এবং মন্ত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন ম্যাথু৷ সেইসময় তৃণমূলের তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায় থেকে শুরু করে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র থেকে শুরু করে লোকসভার সাংসদ সৌগত রায়, পুরসভার মেয়র এবং পরিবেশমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

গোপন ক্যামেরায় দেখা যায়, এঁদের অধিকাংশই ম্যাথুর কাছ থেকে সরাসরি টাকা নিচ্ছেন৷ মুকুল রায় এবং ফিরহাদ হাকিম অবশ্য সরাসরি টাকা নেননি। রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার এসএমএইচ মির্জাকেও ক্যামেরায় দেখা যায়৷ তিনি ম্যাথুকে বলেন, মন্ত্রী এবং নেতাদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করিয়ে দেবেন৷ ২০১৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে গোপন ক্যামেরায় তোলা ভিডিও প্রকাশ করে দেন ম্যাথু। পরে ম্যাথু দাবি করেন, তৃণমূলের তৎকালীন সাংসদ কেডি সিংহ নিজে টাকা বিনিয়োগ করে তাঁকে দিয়ে নারদ স্টিং অপারেশন করিয়েছিলেন।

এদিকে নির্বাচনের মুখে এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। তৃণমূলের তরফ থেকে প্রথমে জানানো হয়, বিজেপি চক্রান্ত করে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে৷ পরে শাসকদল দাবি করে, স্যামুয়েল পার্টিকে অনুদান দিতে চেয়েছিলেন৷ সে কারণেই নেতারা অর্থ গ্রহণ করেছেন৷ কলকাতা হাইকোর্টে নারদ কাণ্ড নিয়ে মামলা হয়। প্রাথমিক ভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ৷ পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামে সিবিআই। আদালত জানায়, কলকাতা পুলিশের তদন্ত পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷