করোনার জন্য হারাতে পারে পুজোর জৌলুস, বাজেট কমাতে শুরু করেছেন উদ্যোক্তারা

0
856

কলকাতা: একেই পকেটে টান৷ তার উপর তিন মাস পর পুজো৷ কেনাকাটার শখ-আহ্লাদ যদিও বা ত্যাগ করা যায়, তাই বলে পুজো বন্ধ করে দিতে মন চাইছে না উদ্যোক্তাদের৷ নমো নমো করে হলেও পুজো তাঁরা করবেনই৷ কিন্তু প্রত্যেকবারের মতো থিম পুজো, বাহারি আলো, এলাহি ভোজনের ব্যবস্থা, জনপ্রিয় স্টারদের নিয়ে জলসা হয়তো থাকবে না৷ কারণ, এবার অত ব্যয়বহুল পুজো করার সামর্থ্য কোনও পুজো উদ্যোক্তাদেরই নেই৷ তাই নিঃসন্দেহে জৌলুস কমতে চলেছে দুর্গাপুজোর৷

অন্যান্য বছর এপ্রিল-মে থেকেই পুজোর প্রস্তুতিতে নেমে পড়েন উদ্যোক্তারা৷ বাজেট, থিম, প্রতিমা, মেনু-সবই মোটামুটি ঠিক হয়ে যায়৷ কিন্তু এবছর থিম পুজোর ভাবনা থেকে সরে এসেছেন শহরের অধিকাংশ পুজো কমিটি৷ খরচ বাঁচাতে থিম পুজো ছেড়ে সাবেক পুজোয় ফিরে যাওয়ার কথা চিন্তা করছেন৷ কারণ, তাঁরা স্পনসর পাচ্ছেন না৷ সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী সকলের তো একই অবস্থা৷ লকডাউনের জন্য টাকা-পয়সা বাঁচিয়ে রাখার চিন্তা করছেন মানুষ৷ সেখানে লক্ষ-লক্ষ টাকা খরচ করে পুজো করার সাহস কেউই দেখাতে চান না৷

- Advertisement -

এবারের পুজো অক্টোবর মাসে৷ ততদিন করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে তা এখনই বলার সময় আসেনি৷ কিন্তু অধিকাংশ উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, থিকথিকে ভিড় এবার হয়তো হবে না৷ হয়তো তখনও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স বজায় রাখতে হবে৷ তাই প্রত্যেকবারের মতো মানুষের ঢল রাস্তায় নামবে না৷ সম্ভবত এই কথা ভেবে কোনো সংস্থা বিজ্ঞাপন দিতে চাইছে না পুজো কমিটিগুলিকে৷ এক পুজো উদ্যোক্তার কথায়, সংস্থা বিজ্ঞাপন দেয় মানুষ দেখবে বলে৷ কিন্তু লোকই যদি না হয় কেউ বিজ্ঞাপন দেবে কেন?

কিন্তু পরিস্থিতি যাই হোক, পুজো এবার হবেই৷ জোর গলায় দাবি করেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ দীর্ঘদিনের পুজো উদ্যোক্তা তথা একডালিয়া এভারগ্রিনের প্রধান সুব্রতবাবু জানান, তারা বরাবর সাবেক পুজোই করে চলেছেন৷ তাই এবারও সাবেক পুজো হবেই৷ দরকার পড়লে ভোগ বাদ দেওয়া হবে৷ কিন্তু একডালিয়ায় পুজো হচ্ছে বলে জানান সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷

তবে যারা থিম পুজো করেন চিন্তা বেশি তাদের৷ যেমন ত্রিধারা সম্মিলনী, নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ, সরুচি সঙ্ঘ এখনও অবধি তেমন স্পনসর জোগাড় করতে পারেনি৷ উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, যা অবস্থা তাতে নিজেদের পকেট থেকেই পুজোর খরচ সামাল দিতে হবে৷ খরচ কমাতে অনেকেই থিম এবার বাতিল করেছেন৷ একই অবস্থা উত্তর কলকাতার পুজো কমিটিগুলোর৷ বাগবাজারের পুজো কমিটির এক সদস্য জানান, রথের দিন প্রতিমা বায়না দেওয়ার নিয়ম৷ শুধু সেইটুকুই করা হয়েছে৷ পুজো হবে কিনা সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে৷ আগ বাড়িয়ে তাই কেউ কোনও পরিকল্পনা করছেন না৷