‘খেলার ছলে’ বেড়াল ছানাকে নৃশংসভাবে হত্যা

কাঠগড়ায় দুই কিশোর ও এক তরুণ

0
81

কলকাতা: ভিডিওর প্রসঙ্গে পরে আসছি৷ ক্যাপশন শুনলেই গায়ের লোম খাড়া হয়ে যেতে বাধ্য- ‘নিরীহ জীবকে হত্যার চেষ্টার মধ্যেও আনন্দ লুকিয়ে আছে!’

আরও পড়ুন: পান্তা ফুরনোর সংসারে নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে ফ্যাসাদে বিধায়ক

- Advertisement -

নাহ্ কোনও নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের জঙ্গিপনার ক্যাপশন নয়, নিরীহ এক বেড়াল ছানাকে নৃশংসভাবে হত্যার পাশাপাশি সেই সময়ের ভিডিও স্লো-মোশনে ক্যামেরাবন্দি করে সোশ্যাল সাইটে আপলোড করা হয়েছে৷ আপলোড করেছে অভিযুক্তরা, সঙ্গে এই ক্যাপশনটি৷ বিষয়টি নজরে আসতেই পশুপ্রেমী সংগঠনের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ তাঁদের মতে, বয়স যাই হোক, এই হত্যা কোনও অংশে জঙ্গিপনার চেয়ে কম নয়৷ অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা৷ পুলিশও তৎক্ষণাৎ তিন অভিযুক্তকে আটক করে শুরু করেছে ঘটনার তদন্ত৷ ইতিমধ্যে সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হয়ে যাওয়া ওই ভিডিও দেখার পর সমাজের সর্বস্তর থেকেই উঠেছে নিন্দার ঝড়৷

আরও পড়ুন:উলটপুরাণ, ভ্যাকসিন নেব না বলতে বলতে নদীতে ঝাঁপ গ্রামবাসীদের

আসানসোল দক্ষিণের সুমিতপল্লীর বুধা এলাকার ঘটনা৷ পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন নাবালক এবং একজন তরুণ৷ তাদের আপলোড করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন একটি চাদরে ‘খেলার ছলে’ একটি বেড়াল ছানাকে মুড়ে কাগজ ছোঁড়ার মতো করে শূন্যে নিক্ষেপ করে দিলেন৷ শূন্যে বেশ কিছুটা ওঠার পর প্রায় ৩০ ফুট দূরে একটি নালার পাশে গিয়ে পড়ল বেড়াল ছানাটি৷ তবে বেড়াল ছানাটি বেঁচে আছে নাকি ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে তা অবশ্য স্পষ্ট নয় ভিডিওতে৷ স্লো-মোশনে পুরো দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার পর সোশ্যাল সাইটে আপলোড করার সময় ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- ‘নিরীহ জীবকে হত্যার চেষ্টার মধ্যেও আনন্দ লুকিয়ে আছে!’

পুলিশি জেরায় অভিযুক্তদের দাবি, ‘‘বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে তা বুঝতে পারেনি৷ সবটাই করেছিলাম খেলার ছলে!’’ ‘খেলার ছলে’ শব্দবন্ধটি শুনে থমকে গিয়েছেন বিশিষ্ট মনোবিদ ডা: অনন্যা চট্টোপাধ্যায়৷ বলছেন, ‘‘করোনা যে শুধু মানুষকে মারছে না, মানুষের মনুষ্যত্বকেও মারছে এই ঘটনা আরও একবার সেটাই প্রমাণ করল৷ অভিযুক্তরা বলছে তাঁরা খেলার ছলে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে৷ ভাবা যায়! এটাও নাকি মানুষের প্রবৃত্তি!’’

সোশ্যাল সাইটে আপলোড করা নক্কারজনক ভিডিওটি রানীগঞ্জের ‘ভয়েসলেস’ নামক এক পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যদের নজরে আসে৷ অভিযুক্তদের প্রোফাইল ধরে তাঁরা ঘটনার খোঁজ নেওয়া শুরু করেন৷ নিরীহ পশুর ওপর অত্যাচার ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা হয়৷ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ওই দুই কিশোর ও এক তরুণের মনের প্রবৃত্তি নিয়ে৷ অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন নেট নাগরিকরাও৷

তাঁদের মতে, ভারতবর্ষের অলিগলিতে রয়েছে পথ কুকুর ও বেড়াল ছানা৷ ওদেরকে আমরা যদি দুটো বিস্কুট খাওয়ায় তারা সঙ্গে সঙ্গে পোষ মেনে যায়। করোনা আবহে রেস্টুরেন্ট বন্ধ, মানুষের কাজ নেই৷ ফলে পথ কুকুর ও বেড়ালগুলোও খাবার পাচ্ছে না৷ এই আবহে কিছু মানুষ যখন ওদের খাবার দিয়ে সাহায্য করছেন তখন নিজেদের স্রেফ মনোরঞ্জনের জন্য নৃশংসতার এই ভয়াবহতা মেনে নেওয়া যায় না৷ সর্বস্তর থেকেই উঠেছে শাস্তির দাবি৷