ইহলোকের মায়া ত্যাগ করলেন সাংবাদিক অলোক

0
166

খাস খবর ডেস্ক: করোনা মোকাবিলায় যখন লকডাউন জারি হয় তখন সকলকে বাড়িতে থাকার বার্তা দিয়ে নিজে ছিলেন বাইরে। কারণ সেটাই তাঁর পেশা। এক বছর পরে যখন করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে তখন সেই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়েই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন সাংবাদিক আলোক কুমার ঘোষ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৩৯ বছর। রেখে গেলেন স্ত্রী প্রতীতী এবং একমাত্র মেয়ে তোড়াকে৷ মিশুকে স্বভাবের অলোকের এহেন অকালমৃত্যুতে স্বভাবতই শোকের ছায়া সংবাদ মাধ্যম থেকে রাজনৈতিক মহলে৷

কারণ, উত্তর ২৪ পরগণা জেলায় সাংবাদিকতার জগতের খুব পরিচিত নাম অলোক কুমার ঘোষ। কলকাতার বহু সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। খাস খবরের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার প্রতিনিধি হিসেবেও কর্মরত ছিলেন তিনি। জাতীয়স্তরের সংবাদমাধ্যমেও কাজ করেছেন অলোকবাবু।

- Advertisement -

১৯৮২ সালের ২০ মে জন্ম৷ বাড়ি, উত্তর ২৪ পরগণা জেলার গারুলিয়া এলাকায়৷ ইছাপুর নর্থল্যান্ড হাইস্কুল এবং নবাবগঞ্জ শ্রীধর বংশীধর স্কুলের প্রাক্তনী ব্যারাকপুরের রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক পাশ করেন৷ গত এক দশকের বেশি সময় ধরে অলোক প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত থেকেছেন সাংবাদিকতার সঙ্গে। সংবাদপত্র থেকে শুরু করে টেলিভিশন চ্যানেল-সর্বত্রই ছিল তাঁর অবাধ বিচরণ৷ ডিজিটাল নিউজ দুনিয়াতেও দাপটের সঙ্গে কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে৷ একাধিক ওয়েব পোর্টালের জেলা সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।

অলোকের বৃত্তে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা জানেন সংবাদ ছিল তাঁর নেশা। এছাড়াও তাঁর পছন্দের বিষয় ছিল ক্রিকেট। ছাত্র জীবনে ক্রিকেটের গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। পরেও সময় পেলে ব্যাট হাতে নেমে যেতেন। টিমের ওপেনার ব্যাটসম্যান ছিলেন অলোক। এছাড়াও ভ্রমণ ছিল তাঁর অত্যন্ত প্রিয়৷ ফি-বছরই বাড়ি থেকে দূরে ঘুরতে যাওয়া ছিল অভ্যাস। লকডাউন শিথিল হতেই স্ত্রী প্রতীতী এবং মেয়ে তোড়াকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন গোয়ায়।

ব্রেকিং আর স্কুপ নিউজ দিয়েই প্রতি মুহূর্তের লড়াইয়ে টিকে থাকায় যে পেশার প্রধান মন্ত্র, সেখানে নিজের শরীরে অতিমারীর বাসাবাঁধার ‘খবর’টা অজানায় ছিল অলোকের কাছে৷ বেশ ক’দিন ধরেই ভুগছিলেন শারীরিক অসুস্থতার কারণে৷ সোমবার থেকে অবনতি হতে থাকে শারীরিক অবস্থার৷ ভর্তি করা হয় কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে৷ মঙ্গলবার বিকেলে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শেষ মুহূর্তে জানা যায়, অলোকের শরীরে করোনার বাসাবাঁধার ‘খবর’৷

ততক্ষণে সব স্মৃতি পিছনে ফেলে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে ওপারের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছেন অলোক৷ স্ত্রী প্রতীতীও সাংবাদিকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত৷ ফলে শুধু ঘরের চার দেওয়ালের ভিতরেই নয়, ২৪ ঘণ্টায় একে অপরের সঙ্গী ছিলেন ছায়ার মতোই৷ মঙ্গলবার বিকেলের পড় থেকে যা স্রেফ, ‘অতীত’৷ স্বভাবতই, অলোকের স্ত্রী ও মেয়েকে সমবেদনা জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না সহকর্মী থেকে রাজনৈতিক নেতা, এমনকি এলাকার বাসিন্দারাও৷ এক লহমায় পুরো এলাকাটাকেই যে গ্রাস করেছে পাহাড় প্রমাণ শোকের ছায়া!